ঢাকা ০২:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পুঠিয়ার বেলপুকুরে ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু বাংলাবান্ধায় দীর্ঘ ছয় মাস পর পাথর আমদানি শুরু, আয় বাড়েনি শ্রমিকদের পঞ্চগড়ে নিখোঁজের দু’দিন পর নদী থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার তেতুলিয়ায় অপহরণ ও ধ’র্ষণ মামলার আসামি আটক ব্যক্তিমালিকানার গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ বনবিভাগের বিরুদ্ধে রাণীনগরে র‍্যাবের অভিযানে ১০০পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ঝিনাইগাতীতে শিশু ইলিয়াস হত্যার বিচারে ধীরগতি; ক্ষোভে ফুঁসছে জনতা, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন! রাজশাহীতে মাদ্রাসার ট’র্চার কক্ষে শিক্ষার্থীকে নি’র্যাতন, থানায় অভিযোগ পঞ্চগড়ে সাংবাদিকদের সন্ত্রাসী সাংবাদিক বললেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, কার্যক্রম থেকে ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যাহার! রাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম চলমান রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা

রাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম চলমান রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা

এম এম মামুন:
  • আপডেট সময় : ০১:৩৯:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১৩ বার পড়া হয়েছে

collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম চলমান রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের দ্বারা শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (রাকসু) সব কার্যক্রম এই কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে রাবি অফিসার সমিতির কোষাধ্যক্ষ মাসুদ রানা এই কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, গতকাল শনিবার হামলায় যেসকল শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিল, তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। দাবি মানা না হলে সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন থাকবে, তবে রাকসুর সব কার্যক্রম এর বাইরে থাকবে।’

অফিসার সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, যারা গতকাল শনিবার শিক্ষকদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে হামলা চালিয়েছে তারা শিক্ষার্থী না, তারা সন্ত্রাসী। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও সন্ত্রাস থাকতে পারে না।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক জরুরি অ্যাকাডেমিক সভায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের পর থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সাবেক সমন্বয়ক ও রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতারা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। এদিন রাত ১১টা পর্যন্ত আন্দোলন চালান তারা। পরদিন শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।

রাতভর আমরণ অনশনের পর শনিবার দুপুর আড়াইটায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার পোড়ায়। এরপর বিকাল সাড়ে ৩টায় তারা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে। এ সময় তারা উপ-উপাচার্যের গাড়ি আটকায় এবং সেখানে টাকা ছুড়ে মারে। এরপর তারা উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাইন উদ্দিন খানের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

এতে তিনি তার বাসভবনে প্রবেশ করতে না পারায় প্রক্টর মাহবুবর রহমানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে আবারও শিক্ষার্থীদের বাধার সম্মুখীন হন। এ সময় কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক, উপ-উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি হয়। এই ধস্তাধস্তিতে শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়। এরপর কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন খান, রেজিস্ট্রার ইফতেখার আলম মাসউদ, প্রক্টর মাহবুবুর রহমান, রাকসু প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এনামুল হকসহ আরও অনেকে।

শনিবার রাতভর এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে রাত পৌনে ২টায় পোষ্য কোটার ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব এবং আজ রবিবার জরুরি সিন্ডিকেট সভায় তা নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের আশ্বাস দেন তিনি। এরপর থেকে কর্মসূচি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ৩টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।

প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের গত ২ জানুয়ারি পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। এরপর থেকেই শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পোষ্য কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দাবি করে একের পর এক আন্দোলন শুরু করেন।

সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে ১৮ তারিখের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দেন তারা। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকালে এক জরুরি অ্যাকাডেমিক কমিটির সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অ্যাকাডেমিক সভায় ১০ শর্তে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম চলমান রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা

আপডেট সময় : ০১:৩৯:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম চলমান রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের দ্বারা শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (রাকসু) সব কার্যক্রম এই কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে রাবি অফিসার সমিতির কোষাধ্যক্ষ মাসুদ রানা এই কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, গতকাল শনিবার হামলায় যেসকল শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিল, তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। দাবি মানা না হলে সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন থাকবে, তবে রাকসুর সব কার্যক্রম এর বাইরে থাকবে।’

অফিসার সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, যারা গতকাল শনিবার শিক্ষকদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে হামলা চালিয়েছে তারা শিক্ষার্থী না, তারা সন্ত্রাসী। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও সন্ত্রাস থাকতে পারে না।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক জরুরি অ্যাকাডেমিক সভায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের পর থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সাবেক সমন্বয়ক ও রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতারা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। এদিন রাত ১১টা পর্যন্ত আন্দোলন চালান তারা। পরদিন শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।

রাতভর আমরণ অনশনের পর শনিবার দুপুর আড়াইটায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার পোড়ায়। এরপর বিকাল সাড়ে ৩টায় তারা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে। এ সময় তারা উপ-উপাচার্যের গাড়ি আটকায় এবং সেখানে টাকা ছুড়ে মারে। এরপর তারা উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাইন উদ্দিন খানের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

এতে তিনি তার বাসভবনে প্রবেশ করতে না পারায় প্রক্টর মাহবুবর রহমানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে আবারও শিক্ষার্থীদের বাধার সম্মুখীন হন। এ সময় কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক, উপ-উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি হয়। এই ধস্তাধস্তিতে শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়। এরপর কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন খান, রেজিস্ট্রার ইফতেখার আলম মাসউদ, প্রক্টর মাহবুবুর রহমান, রাকসু প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এনামুল হকসহ আরও অনেকে।

শনিবার রাতভর এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে রাত পৌনে ২টায় পোষ্য কোটার ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব এবং আজ রবিবার জরুরি সিন্ডিকেট সভায় তা নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের আশ্বাস দেন তিনি। এরপর থেকে কর্মসূচি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ৩টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।

প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের গত ২ জানুয়ারি পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। এরপর থেকেই শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পোষ্য কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দাবি করে একের পর এক আন্দোলন শুরু করেন।

সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে ১৮ তারিখের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দেন তারা। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকালে এক জরুরি অ্যাকাডেমিক কমিটির সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অ্যাকাডেমিক সভায় ১০ শর্তে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।