ঢাকা ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাগমারায় বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন দখল নিতে মরিয়া জেএমবি ক্যাডাররা মান্দায় স্ত্রীকে পি/টি/য়ে হ-ত্যা, স্বামী পলাতক  রায়পুরায় মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ইউপি সদস্যের সংবাদ সম্মেলন নাটোরে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল মহাপরিচালকের পদত্যাগ ও সব পদে নার্সদের পদায়নের দাবিতে বাগাতিপাড়ায় মানববন্ধন ছাত্র আন্দোলনে ২ হাতে ২ পিস্তল নিয়ে শিক্ষার্থীদের গুলি করে যুবলীগ নেতা রুবেল আলমগীর হোসেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় সংবর্ধনা সাতক্ষীরার তালায় ৩৩ বিঘা জলমহাল বেদখল, ৪০ লক্ষ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটে বিশ্বাসী নয় জামায়াত-অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনঃ রাজশাহী কলেজে নিয়োগ পেয়েও যোগদান করতে পারেননি নতুন অধ্যক্ষ

স্যাপার কলেজের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনকে দশ বছর করে আটকের আদেশ!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:২১:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ৪৭ বার পড়া হয়েছে

বাগাতিপাড়ায় শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় আটক তিন কিশোর

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

স্যাপার কলেজের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনকে দশ বছর করে আটকের আদেশ!

নাটোর অফিসঃ
স্যাপার কলেজের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনকে দশ বছর করে আটকের আদেশ। নাটোরের বাগাতিপাড়ায় স্যাপার কলেজের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় সরাসরি জড়িত ৩ জন ও ১ জন সহযোগীসহ ৪ কিশোর-কিশোরীকে দশ বছর করে আটকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই আদেশ দেন।
দন্ডিতরা হলো লালপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মহরম আলীর ছেলে তুষার আলী (১৮), রাজশাহীর বাঘমারা উপজেলার শ্রীবর্তিপাড়া এলাকার ওবায়দুর রহমানের ছেলে ইমন হোসেন (১৭), নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার পুর্ব মাধনগর গ্রামের সালাম পিয়নের ছেলে তুষার ইমরান ও তাদের সহযোগী ভিকটিম নাসরিন সুলতানা নদীয়ার বান্ধবী লালপুর উপজেলার পুকুরপাড়া এলাকার এন্তাজের মেয়ে মোছাঃ মেঘলা খাতুন ওরফে ছাফিয়া। ভিকটিমসহ দন্ডিত সকলেই বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর স্যাপার কলেজের শির্ক্ষাথী।

আদালত সুত্রে জানা যায়, স্যাপার কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তুষার আলী একই কলেজের ছাত্রী নাসরিন সুলতানা নদীয়া (১৬) প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করত। কিন্তু নদীয়া তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করে আসছিল। নাসরিন সুলতানা নদীয়া প্রতিদিন কলেজে আসার সময় তার বান্ধবী মোছাঃ মেঘলা খাতুন ওরফে ছাফিয়াকে সাথে নিয়ে আসতো। এরই এক পর্যায়ে ২০১৭ সালের ১২ জুলাই কলেজ ছুটির পর নদীয়ার বান্ধবী মোছাঃ মেঘলা খাতুন ওরফে ছাফিয়ার মাধ্যমে ভিকটিম নাসরিন সুলতানা নদীয়াকে বেড়ানোর নাম করে সিএনজিতে যাওয়ার সময় নেশা জাতীয় কিছু পান করায়। এতে নদীয়া জ্ঞান হারায়। এসময় অচেতন নদীয়াকে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে দন্ডিত তুষার, ইমন ও ইমরান তিন বন্ধু মিলে পালাক্রমে ধর্ষন করে। এসময় তাদের সহযোগী মেঘলা খাতুন ধর্ষনের ভিডিও ধারন করে। ঘটনাটি কাউকে জানালে নদীয়ার ছোট ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেখায় এবং ওই ভিডিও ভাইরাল করার কথা বলে। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নদীয়াকে নিয়মিত ধর্ষণ করতে থাকে তারা। তাদের পাশবিক অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেলে ২০১৭ সালের ৬ আগষ্ট নদীয়া হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এঅবস্থায় তাকে বগুড়ার সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নদীয়া সুস্থ হওয়ার পর ঘটনাটি তার বাবা-মাকে বলে দিলে তার মা রশিদা বেগম একই বছরের ২৪ আগষ্ট বাগাতিপাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ওই চারজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ চাজশীট দাখিল করলে আদালত সাক্ষ্য প্রমানের পর বুধবার অভিযুক্ত চারজনকে ১০ বছর করে আটক রাখার নির্দেশ দেন।

নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পেশাল পিপি আনিছুল ইসলাম জানান, অভিযুক্তরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক বা শিশু হওয়ায় বিচারক এই আদেশ দিয়েছেন। অভিযুক্ত তুষার আলী, ইমন হোসেন ওরফে রাকিবুল, তুষার ইমরানকে নারী ও শিশু নির্যাতন দামান আইন, ২০০০ এর ৭/৯(৩) ধারায় আনা অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হবে এবং আসামি মেঘলা খাতুনকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দামন আইন, ২০০০ এর ধারা ৭/৯(৩)/৩০ এর অধীনে আনা অভিযোগ এবং তদনুসারে, তাদের প্রত্যেককে ১০ (দশ) বছরের মেয়াদের জন্য আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত তুষার আলী, ইমন হোসেন ওরফে রকিবুল, মোঃ তুষার ইমরান ও মেঘলা খাতুনকে এখন নাবালক বলে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অন্যথায় তাদের সংশ্লিষ্ট কারাগারে পাঠানো হবে। যে সময়ের মধ্যে অভিযুক্তরা হেফাজতে ভোগেন তা তাদের আটকের উপরের মেয়াদ থেকে কেটে নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

স্যাপার কলেজের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনকে দশ বছর করে আটকের আদেশ!

আপডেট সময় : ০৯:২১:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

স্যাপার কলেজের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনকে দশ বছর করে আটকের আদেশ!

নাটোর অফিসঃ
স্যাপার কলেজের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনকে দশ বছর করে আটকের আদেশ। নাটোরের বাগাতিপাড়ায় স্যাপার কলেজের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় সরাসরি জড়িত ৩ জন ও ১ জন সহযোগীসহ ৪ কিশোর-কিশোরীকে দশ বছর করে আটকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই আদেশ দেন।
দন্ডিতরা হলো লালপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মহরম আলীর ছেলে তুষার আলী (১৮), রাজশাহীর বাঘমারা উপজেলার শ্রীবর্তিপাড়া এলাকার ওবায়দুর রহমানের ছেলে ইমন হোসেন (১৭), নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার পুর্ব মাধনগর গ্রামের সালাম পিয়নের ছেলে তুষার ইমরান ও তাদের সহযোগী ভিকটিম নাসরিন সুলতানা নদীয়ার বান্ধবী লালপুর উপজেলার পুকুরপাড়া এলাকার এন্তাজের মেয়ে মোছাঃ মেঘলা খাতুন ওরফে ছাফিয়া। ভিকটিমসহ দন্ডিত সকলেই বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর স্যাপার কলেজের শির্ক্ষাথী।

আদালত সুত্রে জানা যায়, স্যাপার কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তুষার আলী একই কলেজের ছাত্রী নাসরিন সুলতানা নদীয়া (১৬) প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করত। কিন্তু নদীয়া তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করে আসছিল। নাসরিন সুলতানা নদীয়া প্রতিদিন কলেজে আসার সময় তার বান্ধবী মোছাঃ মেঘলা খাতুন ওরফে ছাফিয়াকে সাথে নিয়ে আসতো। এরই এক পর্যায়ে ২০১৭ সালের ১২ জুলাই কলেজ ছুটির পর নদীয়ার বান্ধবী মোছাঃ মেঘলা খাতুন ওরফে ছাফিয়ার মাধ্যমে ভিকটিম নাসরিন সুলতানা নদীয়াকে বেড়ানোর নাম করে সিএনজিতে যাওয়ার সময় নেশা জাতীয় কিছু পান করায়। এতে নদীয়া জ্ঞান হারায়। এসময় অচেতন নদীয়াকে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে দন্ডিত তুষার, ইমন ও ইমরান তিন বন্ধু মিলে পালাক্রমে ধর্ষন করে। এসময় তাদের সহযোগী মেঘলা খাতুন ধর্ষনের ভিডিও ধারন করে। ঘটনাটি কাউকে জানালে নদীয়ার ছোট ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেখায় এবং ওই ভিডিও ভাইরাল করার কথা বলে। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নদীয়াকে নিয়মিত ধর্ষণ করতে থাকে তারা। তাদের পাশবিক অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেলে ২০১৭ সালের ৬ আগষ্ট নদীয়া হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এঅবস্থায় তাকে বগুড়ার সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নদীয়া সুস্থ হওয়ার পর ঘটনাটি তার বাবা-মাকে বলে দিলে তার মা রশিদা বেগম একই বছরের ২৪ আগষ্ট বাগাতিপাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ওই চারজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ চাজশীট দাখিল করলে আদালত সাক্ষ্য প্রমানের পর বুধবার অভিযুক্ত চারজনকে ১০ বছর করে আটক রাখার নির্দেশ দেন।

নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পেশাল পিপি আনিছুল ইসলাম জানান, অভিযুক্তরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক বা শিশু হওয়ায় বিচারক এই আদেশ দিয়েছেন। অভিযুক্ত তুষার আলী, ইমন হোসেন ওরফে রাকিবুল, তুষার ইমরানকে নারী ও শিশু নির্যাতন দামান আইন, ২০০০ এর ৭/৯(৩) ধারায় আনা অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হবে এবং আসামি মেঘলা খাতুনকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দামন আইন, ২০০০ এর ধারা ৭/৯(৩)/৩০ এর অধীনে আনা অভিযোগ এবং তদনুসারে, তাদের প্রত্যেককে ১০ (দশ) বছরের মেয়াদের জন্য আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত তুষার আলী, ইমন হোসেন ওরফে রকিবুল, মোঃ তুষার ইমরান ও মেঘলা খাতুনকে এখন নাবালক বলে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অন্যথায় তাদের সংশ্লিষ্ট কারাগারে পাঠানো হবে। যে সময়ের মধ্যে অভিযুক্তরা হেফাজতে ভোগেন তা তাদের আটকের উপরের মেয়াদ থেকে কেটে নেওয়া হবে।