সিংড়ার মেয়ে ‘লিজা’ ই-কর্মাসে সফল উদ্যোক্তা
- আপডেট সময় : ১২:০৪:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অক্টোবর ২০২১ ৪৩২ বার পড়া হয়েছে
খলিল মাহমুদ, সিংড়া প্রতিনিধিঃ
গত ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট উই গ্রুপে জয়েন্ট করেন, তখন মহামারি করোনায় স্কুল কলেজ বন্ধ ছিলো। সে সময় একাডেমিক অনার্স ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা চলছিল। ৫ টা পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর মহামারি করোনায় পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। অনলাইন সেবা উই গ্রুপে সবার কাজ করা দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হন, তারপর নিজেও কাজ শুরু করেন। পড়াশুনার চাপ ছিলোনা, সাথে তার বাচ্চার ও পড়ালেখা বন্ধ, স্কুল বন্ধ। বসে না থেকে সখের বসেই বেকারত্ব দূর করার জন্য অনলাইন প্লাটফর্মে উইতে বিজনেস শুরু করেন। ইচ্ছে ছিলো পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটা চাকরি করার কিন্তু বিজনেস শুরু করার পর এখন আর চাকরি করার ইচ্ছে নাই। এখন বিজনেসই তার কাছে সব। কারণ এই এক বছরে তিনি তার স্বপ্ন পূরণের পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে। এক বছরে উই তে সেল করেছে ৪ লাখ টাকার বেশি। উই এর বাহিরেও তার পণ্য দেশের ৩৭ টি জেলায় পৌঁছে গেছে। বলছি নাটোরের সিংড়ার মেয়ে এস এম লিজা আক্তার’র কথা।
হ্যান্ড পেইন্ট দিয়ে এস এম লিজা আক্তারের উদ্যোগের শুরু হয়েছিলো। কিন্তু বর্তমানে হ্যান্ড পেইন্ট এ সীমাবদ্ধ নয়। এখন হ্যান্ড পেইন্ট এর সাথে খাঁটি ঘি, মধু, শুটকি ও আছে। সিজিনাল পণ্য হিসেবে আছে খেজুরের গুড়। তাঁর ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে বোয়াল, ছোল, টাকি, রাইকর, বেলে, পুঠি, চান্দা, চিংরি, টেংরা৷ পাটাসি সহ ২০ প্রজাতির শুটকি। যা দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকেন। আম, বরই, জলপাই আচার করেন। খেজুর গুর, থ্রি পিস শাড়ি হ্যান্ড পেইন্ট। ৫/৭ জন তাঁর কাজে সহায়তা করে। হস্তশিল্পে শাড়ি, থ্রি পিস, পাপোস, বিছানার চাঁদর। সিজিনাল পণ্য হিসেবে আছে খেজুরের গুড়।। তাঁর পণ্য কুয়েত, আমেরিকা, লন্ডন, ভারতে সরবরাহ করা হয়েছে। দিনে দিনে চাহিদা বেড়েছে।
উদ্দোক্তা এসএম লিজা বলেন, আমি সিংড়া গোলই আফরোজ সরকারী কলেজ থেকে ম্যানেজমেন্ট থেকে অনার্স এ প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হই। আমার ব্যবসায় সব রকম সাহায্য করে আমার হাসবেন্ড। তার জন্যেই আমি এগোতে পেরেছি। আমার একটাই লক্ষ্য নিজের একটা আলাদা পরিচয় তৈরি করা। আমার ছেলের নাম রাজ্য তাই তার নামের সাথে মিল রেখেই পেজের নাম দেওয়া। আমার পেজের নাম সখের রাজ্য ফ্যাশন। খাবারের পেজের নাম “Rajuk’s Dream”, তার এই সংসার জীবনের পাশাপাশি ভবিষ্যতে তার এই উদ্যোগকে টিকিয়ে রাখতে চান এবং এলাকার অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চান।
ব্যক্তিগত জীবনে এক সন্তানের জননী। স্বামী আবিরও নিজেকে উদ্দোক্তা হবার চেষ্টায় বিভোর। স্ত্রীর কাজে সময় দেয়ার পাশাপাশি নিজে ও ভালো আর্ট করতে পারেন।
সিংড়ার গর্ব এই গুনবতী মেয়েটি তার অক্লান্ত পরিশ্রম, অদম্য মেধা আর চেষ্টা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন মেয়েরা আর কোন কিছুতেই পিছিয়ে নেই, ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরা পর্দায় থেকেও সবকিছুতে পারদর্শী হতে পারে। হাজার ও মেয়ের অনুপ্রেরণা হতে পারে এস এম লিজা।