ঢাকা ০৯:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কীর্তিমান আব্দুর রাজ্জাকের বীরত্ব আজও মনে পড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মহাদেবপুরে চেরাগপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত ঝিনাইগাতীতে মহারশি সাহিত্য পরিষদের ৪র্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও আন্তর্জাতিক গুণীজন সন্মাননা রাজশাহীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ১১ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা চায় বিএনপি মহাদেবপুরে বিএনপি’র উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত মহাদেবপুরে এলজিইডি’র উদ্যোগে দুঃস্থ নারীদের সঞ্চিত অর্থের চেক বিতরণ রাণীশংকৈলে ১৬ বছর পরে বিএনপির বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত দিনাজপুরে নানা আয়োজনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত শেরপুরে বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

সাত বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে পেয়ে আনন্দে কাঁদছেন বৃদ্ধা মা

এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় : ০৫:১৮:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০৯ বার পড়া হয়েছে

collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাত বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে পেয়ে আনন্দে কাঁদছেন বৃদ্ধা মা

সাত বছর আগে হারিয়ে যায় বড় ছেলে। চারিক অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে চোখের জলে নিজের বুক ভবিজিয়ে ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন বৃদ্ধা মা। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। ভেবেছিলেন হারানো ছেলেকে তার মৃত্যুর আগে আর ফিরে পাবেন না। অথচ সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাই নিখোঁজের সাত বছর পর হারিয়ে যাওয়া ছেলে হারুনুর রশিদকে ফিরে পেলেন ৬০ বছরের বৃদ্ধা মা হনুফা খাতুন। হারিয়ে যাওয়া আদরের ছেলেকে ৭ বছর পরে ফিরে পেয়ে মা হনুফা খাতুনের আনন্দ যেনো আর ধরছেনা। এতদিন কেঁদেছেন ছেলেকে হারিয়ে, আর এখন কাঁদছেন আদরের সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে। জানা যায়, রাজশাহীর বাগমারার কুমারপুর গ্রামের বাসিন্দা মামুনুর রশিদের প্রচেষ্টায় গত বুধবার হারানো ছেলেকে ফিরে পেয়েছেন মা হনুফা।

মামুনুর রশিদ বলেন, ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের একটি সারের দোকানের সামনে এক যুবককে দেখতে পান তিনি। গায়ে ময়লা ও ছেঁড়া জামা। ট্রাউজার পরা অবস্থায় দোকানের বারান্দায় শুয়ে ছিলেন ওই যুবক। কাছে গিয়ে বুঝতে পারেন, ওই যুবক মানসিক প্রতিবন্ধী। যুবককে নিজ বাড়িতে নিয়ে খাবার দেন তিনি। খাওয়ার পর বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয়। তার পরিবারের সদস্যরা পরের দিন গোসল করিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে দেন। যুবকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তিনি কোনো কথা বলছিলেন না তিনি। হতাশ হননি তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে ওই যুবকের সঙ্গে ভাব বিনিময়ের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। পরে ১৭ সেপ্টেম্বর যুবকের কাছে কলম ও সাদা কাগজ দিলে তিনি তার নাম লেখেন হারুনুর রশিদ। সেই সঙ্গে তাঁর বাবার নাম: নজরুল ইসলাম, গ্রাম: কালাপাড়া, উপজেলা: নালিতাবাড়ী ও জেলা শেরপুর বলে উল্লেখ করেন।

এ ঠিকানা পাওয়ার পর যুবকের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করেন মামুনুর রশিদ। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কল করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করেন। ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই যুবক সম্পর্কে জানান। ওসির মাধ্যমে কালাপাড়া গ্রামের এক গ্রাম পুলিশ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন মামুনুর রশিদ। এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে হারুনের পরিচয় বিষয়ে নিশ্চিত হন। শেষ পর্যন্ত গত বুধবার পরিবারের সদস্যদের কাছে হারুনকে হস্তান্তর করেন মামুনুর রশিদ।

সাত বছর পর নিখোঁজ ছেলে হারুনকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত মা হনুফা খাতুন ও তার পরিবারের সদস্যরা। পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে হারুন বড়। তার ১০ বছরের একটি মেয়ে আছে। সাত বছর আগে হারুনের স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত হন এবং বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি মানসিকভাবে বড় আঘাত পান। এরপর মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন।

হারুনের ছোট ভাই হান্নানুর রহমান বলেন, তার ভাই এসএসসি পাস করেছেন। ভাইকে কোনো দিন খুঁজে পাবেন, তা ভাবতে পারেননি। ছেলেকে হারানোর পর তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আগে কান্নাকাটি করলেও এখন চোখের জল শুকিয়ে গেছে। ভাই বাড়িতে ফিরে আসায় পরিবারে আনন্দ ফিরেছে। তাদের মা এখন কাদছেন আনন্দে। হারুনকে দেখতে বাড়িতে আসছেন স্বজনেরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সাত বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে পেয়ে আনন্দে কাঁদছেন বৃদ্ধা মা

আপডেট সময় : ০৫:১৮:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সাত বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে পেয়ে আনন্দে কাঁদছেন বৃদ্ধা মা

সাত বছর আগে হারিয়ে যায় বড় ছেলে। চারিক অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে চোখের জলে নিজের বুক ভবিজিয়ে ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন বৃদ্ধা মা। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। ভেবেছিলেন হারানো ছেলেকে তার মৃত্যুর আগে আর ফিরে পাবেন না। অথচ সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাই নিখোঁজের সাত বছর পর হারিয়ে যাওয়া ছেলে হারুনুর রশিদকে ফিরে পেলেন ৬০ বছরের বৃদ্ধা মা হনুফা খাতুন। হারিয়ে যাওয়া আদরের ছেলেকে ৭ বছর পরে ফিরে পেয়ে মা হনুফা খাতুনের আনন্দ যেনো আর ধরছেনা। এতদিন কেঁদেছেন ছেলেকে হারিয়ে, আর এখন কাঁদছেন আদরের সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে। জানা যায়, রাজশাহীর বাগমারার কুমারপুর গ্রামের বাসিন্দা মামুনুর রশিদের প্রচেষ্টায় গত বুধবার হারানো ছেলেকে ফিরে পেয়েছেন মা হনুফা।

মামুনুর রশিদ বলেন, ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের একটি সারের দোকানের সামনে এক যুবককে দেখতে পান তিনি। গায়ে ময়লা ও ছেঁড়া জামা। ট্রাউজার পরা অবস্থায় দোকানের বারান্দায় শুয়ে ছিলেন ওই যুবক। কাছে গিয়ে বুঝতে পারেন, ওই যুবক মানসিক প্রতিবন্ধী। যুবককে নিজ বাড়িতে নিয়ে খাবার দেন তিনি। খাওয়ার পর বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয়। তার পরিবারের সদস্যরা পরের দিন গোসল করিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে দেন। যুবকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তিনি কোনো কথা বলছিলেন না তিনি। হতাশ হননি তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে ওই যুবকের সঙ্গে ভাব বিনিময়ের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। পরে ১৭ সেপ্টেম্বর যুবকের কাছে কলম ও সাদা কাগজ দিলে তিনি তার নাম লেখেন হারুনুর রশিদ। সেই সঙ্গে তাঁর বাবার নাম: নজরুল ইসলাম, গ্রাম: কালাপাড়া, উপজেলা: নালিতাবাড়ী ও জেলা শেরপুর বলে উল্লেখ করেন।

এ ঠিকানা পাওয়ার পর যুবকের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করেন মামুনুর রশিদ। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কল করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করেন। ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই যুবক সম্পর্কে জানান। ওসির মাধ্যমে কালাপাড়া গ্রামের এক গ্রাম পুলিশ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন মামুনুর রশিদ। এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে হারুনের পরিচয় বিষয়ে নিশ্চিত হন। শেষ পর্যন্ত গত বুধবার পরিবারের সদস্যদের কাছে হারুনকে হস্তান্তর করেন মামুনুর রশিদ।

সাত বছর পর নিখোঁজ ছেলে হারুনকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত মা হনুফা খাতুন ও তার পরিবারের সদস্যরা। পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে হারুন বড়। তার ১০ বছরের একটি মেয়ে আছে। সাত বছর আগে হারুনের স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত হন এবং বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি মানসিকভাবে বড় আঘাত পান। এরপর মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন।

হারুনের ছোট ভাই হান্নানুর রহমান বলেন, তার ভাই এসএসসি পাস করেছেন। ভাইকে কোনো দিন খুঁজে পাবেন, তা ভাবতে পারেননি। ছেলেকে হারানোর পর তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আগে কান্নাকাটি করলেও এখন চোখের জল শুকিয়ে গেছে। ভাই বাড়িতে ফিরে আসায় পরিবারে আনন্দ ফিরেছে। তাদের মা এখন কাদছেন আনন্দে। হারুনকে দেখতে বাড়িতে আসছেন স্বজনেরা।