ঢাকা ০১:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে সিএনজি চালকের মরদেহ উদ্ধার পঞ্চগড়ে জেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল রাণীশংকৈলে যৌথ বাহিনীর অভিযান, অস্ত্র উদ্বার, মাদক কারবারির ১ বছর কারাদণ্ড দেবীগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচ দিয়ে আমন চারা রোপন করেছে কৃষক নাটোরে জিয়া পরিষদ ও ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ রাজশাহীতে অস্ত্র মামলার ১০ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাদকসহ গ্রেপ্তার দিনাজপুরে কেবিএম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ’র মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল রাণীনগরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত বাগাতিপাড়ায় ফারিয়া’র নির্বাচনে নিজের ভোটও না পাওয়া প্রার্থী এবার হলেন সভাপতি দরিদ্র্যতা দমাতে পারেনি জুঁইকে, এসএসসিতে পেলেন জিপিএ-৫, স্বপ্ন দেখেন ডাক্তার হওয়ার

শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে গাছে বেঁধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল!

মোহাম্মদ দুদু মল্লিক, শেরপুর প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : ০৮:২০:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫ ২০১ বার পড়া হয়েছে

collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে গাছে বেঁধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল!

শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে এক ব্যবসায়ীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। ১৫ জুন রবিবার দুপুরে খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর নাম নুর আমিন (৩৮)। সে শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া এলাকার নুর ইসলামের ছেলে। নির্যাতনের খবর পেয়ে শ্রীবরদী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান হয় বলে জানায় স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত জলিলের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা মাসিক দশ শতাংশ হারে সুদে নেয় ব্যবসায়ী নূর আমিন। সুদের টাকা কয়েকমাস নিয়মিত দিয়েছেনও তিনি। পরে সুদের টাকা অনিয়মিত হয়ে পরায় কথা কাটাকাটি হয় তাদের মধ্যে। এসময় মারধরের অভিযোগ তোলে কোর্টে মামলা করেন জলিল। এছাড়াও এক মাসের কথা বলে টাকা ফেরত না দিয়ে ছয় বছর হয়ে যাওয়ায় এলাকায় কয়েক দফায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিচার সালিশ করেও সুরাহা হয়নি। এক পর্যায়ে টাকা না পেয়ে রাস্তা থেকে ভুক্তভোগীর একটি মোটরসাইকেল আটক করে রাখে জলিল। গত এক বছর যাবৎ মোটরসাইকেলটি জলিলের বাড়িতেই আছে। মোটরসাইকেলটি আটক করে রাখার পর নুর আলম শ্রীবরদী থানা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাইনি। এ ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা চলছিলো বেশ কয়েকদিন যাবৎ। এর জের ধরে টাকা আদায়ের জন্য বাজার থেকে নূর আলমকে ধরে নিয়ে গাছে বেঁধে রাখা হয়।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নুর আলম বলেন, সুদের টাকা বাকি পরার কারণে আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল আটক করে রেখেছে অনেক দিন হয়।পরবর্তীতে জলিল বলেছে আমার টাকা পয়সাতে আর কোন দাবি নাই। এব্যাপারে জলিল মিয়া পুলিশকে জানায়, আমি টাকা পাই টাকার পরিবর্তে মোটরসাইকেল নিয়েছি। তার কাছে আমার আর কোন দাবি নেই। এছাড়াও সে আমার বিরুদ্ধে কোর্টেও মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সেই মামলা কোর্টে পরিচালনা করছি। আজ আমাকে লংগরপাড়া বাজার থেকে ৬-৭ জন সন্ত্রাসী দিয়ে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে তার বাড়িতে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছে। উল্টা বলেতেছে আমি নাকি গরু চোর। এভাবে তারা আমার মান সম্মান নষ্ট করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।

ঘটনার ব্যাপারে খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবীর রূপা বলেন, আমি ঘটনা শোনার পর আব্দুল জলিলের বাড়িতে গিয়ে দেখি নূর আমিন বাধা অবস্থায় আছে এবং বাড়িতে প্রায় শতাধিক মানুষ ভিড় করেছে। আমি তাদেরকে বলি এভাবে মানুষ আটকে রাখা যাবে না। পরে আমি উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে দুই পক্ষকে সম্মত করি। তবে বেঁধে রাখার বিষয়টা নিয়ে আমরা সামাজিকভাবে জলিলকে তিরস্কার করেছি।

এব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, আমি তার কাছে অনেকদিন যাবৎ টাকা পাই। তাই তাকে বাজার থেকে ধরে এনেছি। তাকে আমি কোন মারধর করি নাই। আমি নিয়ে আসার পরে তাকে বাড়িতে স্বাভাবিক অবস্থায় রেখে দিয়েছিলাম। তাকে যখন আটকাতে পারতেছি না তখন বেঁধে রেখেছিলাম। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ এসে আমাকে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলে তাকে ছেড়ে দিয়েছি।

শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ এব্যাপারে বলেন, গাছে বেঁধে রাখার খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছে বাধা অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়নি। তার আগেই স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে বলে জেনেছি। তাদের কোন অভিযোগ থাকলে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে গাছে বেঁধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল!

আপডেট সময় : ০৮:২০:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে গাছে বেঁধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল!

শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে এক ব্যবসায়ীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। ১৫ জুন রবিবার দুপুরে খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর নাম নুর আমিন (৩৮)। সে শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া এলাকার নুর ইসলামের ছেলে। নির্যাতনের খবর পেয়ে শ্রীবরদী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান হয় বলে জানায় স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত জলিলের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা মাসিক দশ শতাংশ হারে সুদে নেয় ব্যবসায়ী নূর আমিন। সুদের টাকা কয়েকমাস নিয়মিত দিয়েছেনও তিনি। পরে সুদের টাকা অনিয়মিত হয়ে পরায় কথা কাটাকাটি হয় তাদের মধ্যে। এসময় মারধরের অভিযোগ তোলে কোর্টে মামলা করেন জলিল। এছাড়াও এক মাসের কথা বলে টাকা ফেরত না দিয়ে ছয় বছর হয়ে যাওয়ায় এলাকায় কয়েক দফায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিচার সালিশ করেও সুরাহা হয়নি। এক পর্যায়ে টাকা না পেয়ে রাস্তা থেকে ভুক্তভোগীর একটি মোটরসাইকেল আটক করে রাখে জলিল। গত এক বছর যাবৎ মোটরসাইকেলটি জলিলের বাড়িতেই আছে। মোটরসাইকেলটি আটক করে রাখার পর নুর আলম শ্রীবরদী থানা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাইনি। এ ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা চলছিলো বেশ কয়েকদিন যাবৎ। এর জের ধরে টাকা আদায়ের জন্য বাজার থেকে নূর আলমকে ধরে নিয়ে গাছে বেঁধে রাখা হয়।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নুর আলম বলেন, সুদের টাকা বাকি পরার কারণে আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল আটক করে রেখেছে অনেক দিন হয়।পরবর্তীতে জলিল বলেছে আমার টাকা পয়সাতে আর কোন দাবি নাই। এব্যাপারে জলিল মিয়া পুলিশকে জানায়, আমি টাকা পাই টাকার পরিবর্তে মোটরসাইকেল নিয়েছি। তার কাছে আমার আর কোন দাবি নেই। এছাড়াও সে আমার বিরুদ্ধে কোর্টেও মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সেই মামলা কোর্টে পরিচালনা করছি। আজ আমাকে লংগরপাড়া বাজার থেকে ৬-৭ জন সন্ত্রাসী দিয়ে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে তার বাড়িতে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছে। উল্টা বলেতেছে আমি নাকি গরু চোর। এভাবে তারা আমার মান সম্মান নষ্ট করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।

ঘটনার ব্যাপারে খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবীর রূপা বলেন, আমি ঘটনা শোনার পর আব্দুল জলিলের বাড়িতে গিয়ে দেখি নূর আমিন বাধা অবস্থায় আছে এবং বাড়িতে প্রায় শতাধিক মানুষ ভিড় করেছে। আমি তাদেরকে বলি এভাবে মানুষ আটকে রাখা যাবে না। পরে আমি উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে দুই পক্ষকে সম্মত করি। তবে বেঁধে রাখার বিষয়টা নিয়ে আমরা সামাজিকভাবে জলিলকে তিরস্কার করেছি।

এব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, আমি তার কাছে অনেকদিন যাবৎ টাকা পাই। তাই তাকে বাজার থেকে ধরে এনেছি। তাকে আমি কোন মারধর করি নাই। আমি নিয়ে আসার পরে তাকে বাড়িতে স্বাভাবিক অবস্থায় রেখে দিয়েছিলাম। তাকে যখন আটকাতে পারতেছি না তখন বেঁধে রেখেছিলাম। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ এসে আমাকে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলে তাকে ছেড়ে দিয়েছি।

শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ এব্যাপারে বলেন, গাছে বেঁধে রাখার খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছে বাধা অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়নি। তার আগেই স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে বলে জেনেছি। তাদের কোন অভিযোগ থাকলে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।