শ্বাসরোধে হত্যার পর বস্তা বন্দি করে মাটিতে পুঁতে রাখা হয় প্রতিবন্ধী লাভলির লাশ
- আপডেট সময় : ০৬:৪৩:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ মার্চ ২০২২ ৩৪ বার পড়া হয়েছে
শ্বাসরোধে হত্যার পর বস্তা বন্দি করে মাটিতে পুঁতে রাখা হয় প্রতিবন্ধী লাভলির লাশ
রাণীনগর, নওগাঁ:
শ্বাসরোধে হত্যার পর বস্তা বন্দি করে মাটিতে পুঁতে রাখা হয় প্রতিবন্ধী লাভলির লাশ। নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী লাভলিকে অপহরণ করে ঢাকার আশুলিয়ায় নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর বস্তা বন্দি করে মাটির নিচে পুতে ফেলে ঘাতকরা। ঋণ ও বিয়ের চাপ থেকে মুক্তি পেতে পরিকল্পিতভাবে নির্মম এই হত্যাকান্ড ঘটায় ঘাতকরা।
লাভলী হত্যার রহস্য উদঘাটন নিয়ে রোববার (২০ মার্চ) দুপুরে নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয় বলে জানিয়েছেন রাণীনগর থানার ওসি মো: শাহিন শাহিন আকন্দ।
জেলা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম এর সাংবাদিক সম্মেলনের বরাত দিয়ে রাণীনগর থানার ওসি মো: শাহিন আকন্দ বলেন, ভবানীপুর গ্রামের কফিল উদ্দীনের মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী লাভলী আক্তার প্যারামেডিকেল থেকে পড়া লেখা করে নিজ এলাকার বেতগাড়ী বাজারে পল্লী চিকিৎসক হিসেবে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধের দোকান করে আসছিলেন। এরই মধ্যে ভবানীপুর গ্রামের আয়নুল হকের ছেলে মাহাবুবুল আলম বিস্কুট (৪৫) এর সাথে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর পর বিস্কুট লাভলীর নিকট থেকে বেস কিছু টাকা ধার নেয়। একপর্যায়ে লাভলী আক্তার মাহাবুবুল আলমকে বিয়ের চাপ দেয় এবং ধারের টাকা চাইতে থাকে। তিনি আরো জানান, মাহাবুবুল আলম প্রচুর ঋণগ্রস্থ্য হয়ে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় চলে যায় এবং সেখান থেকে লাভলীর সাথে যোগাযোগ করতে থাকে। একপর্যায়ে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে লাভলীকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করে বেশ কয়েকজনকে টাকা দেয় মাহাবুবুল আলম। হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ ফেব্রুয়ারী ঢাকা থেকে নওগাঁ আসে মাহাবুবুল। এর পর বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কৌশলে তাকে অপহরণ করে ঢাকার আশুলিয়া থানার জিরাবো পশ্চিমপাড়া বাইতুন জামে মসজিদের পাশে প্রাচীর বেষ্টিত ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বস্তা বন্দি করে মাটির নিচে লাশ পুতে ফেলে।
ওসি মো: শাহিন আকন্দ আরো জানান, গত ১৬ ফেব্রুয়ারী রাজশাহীতে চিকিৎসার কথা বলে বাড়ী থেকে বের হয় লাভলী আক্তার। এর পর বাড়ীতে ফিরে না আসায় এবং লাভলীর ফোন বন্ধ থাকায় অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পাওয়ায় গত ২০ ফেব্রুয়ারী রাণীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে লাভলীর পরিবার। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে পুলিশ সুপার এর নির্দেশে জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম টিম রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। এর পর ১৯মার্চ (শনিবার) মাহাবুবুল আলম বিস্কুটকে আশুলিয়ায় গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার দেয়া তথ্য মোতাবেক রাণীনগর থানা ও ডিবি পুলিশের একটি চৌকস টিম মাহাবুবুল আলমকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খনন করে বস্তা বন্দি অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এঘটনায় লাভলীর ছোট ভাই পারভেজ আলী বাদী হয়ে রোববার সকালে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান তিনি।