শিক্ষকের সাথে সহপাঠীর বিয়ের দাবিতে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ
- আপডেট সময় : ০১:০৬:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ মার্চ ২০২২ ৪০ বার পড়া হয়েছে
শিক্ষকের সাথে সহপাঠীর বিয়ের দাবিতে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ
নাজমুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
শিক্ষকের সাথে সহপাঠীর বিয়ের দাবিতে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ। ঠাকুরগাঁওয়ের শত বছরের সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগ পাওয়া কম্পিউটার অপারেটর তৌহিদুল ইসলামের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে টানা ৫ দিন ধরে অনশন করছিলেন একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী। গেল বৃহস্পতিবার ৩ মার্চ ঐ শিক্ষার্থী বিয়ের দাবিতে তৌহিদুলের বাড়ীতে অনশন শুরু করেন।
এ ঘটনায় ঐ শিক্ষার্থীর বাবা বাদি হয়ে রাণীশংকৈল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেন বলে জানিয়েছেন রানীশংকৈল থানার তদন্ত ওসি আব্দুল লতিফ শেখ।
অপরদিকে গেল শনিবার ৫ ই মার্চ ঐ শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক বিচারের দাবিতে ব্যানার নিয়ে রাজপথে নামেন একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ ৭ ই মার্চ আবারো পৌর শহরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শেষে শিবদিঘী যাত্রী ছাউনী মোড়ে রাস্তা বন্ধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন উপজেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজের নানা শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়াও তাদের বন্ধু সহপাঠীর সঙ্গে যে অন্যায় অবিচার হয়েছে তার সঠিক বিচার না হওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার পরিক্ষাসহ ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
অনশনরত সেই শিক্ষার্থী জানান, তৌহিদুল আমার সাথে ৩ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক করে আসছেন। তিনি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে বেশ কয়েকবার ঘুরাতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। এখন তিনি আমাকে রেখে অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করেছেন। আমি আমার অধিকার আদায়ের জন্য ৫ দিন ধরে তৌহিদুলের বাড়ীতে অবস্থান করছি। তৌহিদুলের পরিবার আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
আন্দোলনরত কয়েক জন শিক্ষার্থী অয়ন প্রিতম, মাহিদ, বর্ষা, তাবাসসুম জানান, আমাদের সহপাঠীর সাথে যে অন্যায় অবিচার হয়েছে তার সঠিক বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আজ ধরে ৫ দিন হয়ে গেলো এখনো কোন সমাধান হয়নি। আমরা চরিত্রহীন শিক্ষকের কঠিন বিচার দাবি করছি। যাতে তার শাস্তি দেখে আর কোন শিক্ষক ভুল করেও শিক্ষার্থীদের দিকে কু-নজরে না তাকায়। লম্পট তৌহিদুল গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
অভিযুক্ত কম্পিউটার অপারেটর শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পরে ঘটনা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার চেষ্টা চলছে।
এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে এসে উপস্থিত হয় উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার ইন্দ্রজিৎ সাহা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আলী শাহরিয়ার এসময় তারা শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, আমরা এর যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং এর সুষ্ঠু বিচার হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাকে একটি অভিযোগ দিয়েছে। আমি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (রাণীশংকৈল সার্কেল) মোঃ তোফাজ্জল হোসেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে আমারা ভিকটিম কে আমাদের হেফাজতে নিয়ে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি সেখান থেকে রিপোর্ট পেলেই আমরা আসামী কে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করবো।