ঢাকা ০৮:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাণীনগরে অন্যের জমি-দোকানঘর জবরদখলে রাখার অভিযোগ

মনোরঞ্জন চন্দ্র, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ১১:৩৩:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪ ৮৬ বার পড়া হয়েছে

collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাণীনগরে অন্যের জমি-দোকানঘর জবরদখলে রাখার অভিযোগ

নওগাঁর রাণীনগরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ক্ষমতার দাপটে প্রায় ৯ বছর ধরে অন্যের জমি ও দোকানঘর জবর দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী হেলাল উদ্দীন সরদারের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীর দাপটে নগরব্রিজ এলাকায় হরিশপুর গ্রামের জাফের আলী সরদারের তিন সন্তানের সম্পত্তিসহ নির্মাণধীন দোকানঘর জবর দখলে নিয়েছেন। এরপর নেতাকর্মীদের সহযোগীতা জায়গা-জমি ও দোকানঘর থেকে উচ্ছেদ করেছেন জমির তিন মালিককে। ওই সময় দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন বিচার পাননি ভুক্তভোগীরা।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর প্রভাবশালীর হাত থেকে জমি-দোকানঘর ফেরত পেতে ভুক্তভোগীরা আবারও বিভিন্ন জনের কাছে গিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরচ্ছেন। তবুও ফেরত পাচ্ছেন না তাদের সম্পত্তি ও দোকান। সম্প্রতি জমি-দোকানঘর উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা চেয়ে কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার কাশিমপুর ইউয়িনের চকাদিন মৌজায় আরএস ২৮ নম্বর খতিয়ানে ৩০৭ ও ৩১৪ দাগে ২৭ শতক সম্পত্তি রয়েছে। খতিয়ান মূলে ওই সম্পত্তির মালিক আনরা বেওয়া, ফয়েজান ও নূরজান। খতিয়ান অনুযায়ী নূরজান প্রায় ১২ শতক সম্পত্তির মালিক। নূরজানের মৃত্যুর পর ওয়ারিশমূলে তার একমাত্র ছেলে কায়মুদ্দীন খান মালিক হন। এরপর জীবিত থাকাকালে ২০১১ সালে কায়মুদ্দীন তার ৬ নাতী নাতনিকে সমানভাবে ওই সম্পত্তি দলিল করে দেন। সেই দলিলমূলে কায়মুদ্দীনের মেয়ে মৃত জোসনার সন্তান জুয়েল সরদার, জয়নাল সরদার ও জাহানারা আক্তার মালিক হন এবং সম্পত্তি দখলে ছিল। ২০১৫ সালে জমির মালিক জুয়েল সরদার, জয়নাল সরদার ও জাহানারা আক্তার যৌথভাবে নগরব্রিজ এলাকায় পাকা রাস্তার পাশে তাদের সম্পত্তির উপর বড় একটি ইটের তৈরি দোকানঘর নির্মাণ করছিল। এ সময় এনায়েতপুর গ্রামের হেলাল উদ্দীন সরদার তার সম্পত্তি বলে দাবি করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সহযোগীতায় ও ক্ষমতার দাপটে ওই তিন মালিকের সম্পত্তিসহ নির্মাণধীন দোকানঘর দখলে নেয়।

অভিযোগকারী জাফের আলী সরদার জানান, আমার ছেলে-মেয়েরা লাখ লাখ টাকা খরচ করে তাদের নিজের সম্পত্তিতে দোকান ঘর নির্মাণ করছিলেন। ওই সময় আওয়ামী লীগের কিছু লোকজন নিয়ে এসে হেলাল উদ্দীন সম্পত্তিসহ দোকান জবরদখল করে। এরপর বিভিন্ন স্থানে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ক্ষমতাসীনদের কারণে কোন সুবিচার পাইনি। সম্পত্তি ও দোকানঘর উদ্ধারের জন্য কিছুদিন আগে কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে অভিযোগ দিয়েছে। দ্রুত সম্পত্তি ও দোকানঘর উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন মালিকরা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সরেজমিনে গিয়েও দখলকারী হেলাল উদ্দীন সরদারকে পাওয়া যায়নি। এ সময় তার ছেলে রিপন বলেন, জায়গা নিয়ে আমরা আদালতে মামলা করেছি। মামলা চলমান আছে। আদালত যে রায় দিবে সেটা আমরা মেনে নিব।

এ বিষয়ে রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মখলেছুর রহামন বাবু বলেন, অভিযোগের পর দু’পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে পরিষদে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ করা হয়েছিল। সেখানে বাদী উপস্থিত হলেও বিবাদী হেলাল উদ্দীন আসেননি। ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায় বাদীর ছেলে-মেয়ের সম্পত্তি ওইটা। হেলাল উদ্দীন অন্যের জমি ও দোকান জবরদখল করে রেখেছে। আমি গ্রাম আদালতে একটি রায় দিয়েছি। সেটাও বিবাদী হেলাল মানছে না। তাই বিষয়টি এখনো সমাধান করা সম্ভব হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রাণীনগরে অন্যের জমি-দোকানঘর জবরদখলে রাখার অভিযোগ

আপডেট সময় : ১১:৩৩:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪

রাণীনগরে অন্যের জমি-দোকানঘর জবরদখলে রাখার অভিযোগ

নওগাঁর রাণীনগরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ক্ষমতার দাপটে প্রায় ৯ বছর ধরে অন্যের জমি ও দোকানঘর জবর দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী হেলাল উদ্দীন সরদারের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীর দাপটে নগরব্রিজ এলাকায় হরিশপুর গ্রামের জাফের আলী সরদারের তিন সন্তানের সম্পত্তিসহ নির্মাণধীন দোকানঘর জবর দখলে নিয়েছেন। এরপর নেতাকর্মীদের সহযোগীতা জায়গা-জমি ও দোকানঘর থেকে উচ্ছেদ করেছেন জমির তিন মালিককে। ওই সময় দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন বিচার পাননি ভুক্তভোগীরা।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর প্রভাবশালীর হাত থেকে জমি-দোকানঘর ফেরত পেতে ভুক্তভোগীরা আবারও বিভিন্ন জনের কাছে গিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরচ্ছেন। তবুও ফেরত পাচ্ছেন না তাদের সম্পত্তি ও দোকান। সম্প্রতি জমি-দোকানঘর উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা চেয়ে কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার কাশিমপুর ইউয়িনের চকাদিন মৌজায় আরএস ২৮ নম্বর খতিয়ানে ৩০৭ ও ৩১৪ দাগে ২৭ শতক সম্পত্তি রয়েছে। খতিয়ান মূলে ওই সম্পত্তির মালিক আনরা বেওয়া, ফয়েজান ও নূরজান। খতিয়ান অনুযায়ী নূরজান প্রায় ১২ শতক সম্পত্তির মালিক। নূরজানের মৃত্যুর পর ওয়ারিশমূলে তার একমাত্র ছেলে কায়মুদ্দীন খান মালিক হন। এরপর জীবিত থাকাকালে ২০১১ সালে কায়মুদ্দীন তার ৬ নাতী নাতনিকে সমানভাবে ওই সম্পত্তি দলিল করে দেন। সেই দলিলমূলে কায়মুদ্দীনের মেয়ে মৃত জোসনার সন্তান জুয়েল সরদার, জয়নাল সরদার ও জাহানারা আক্তার মালিক হন এবং সম্পত্তি দখলে ছিল। ২০১৫ সালে জমির মালিক জুয়েল সরদার, জয়নাল সরদার ও জাহানারা আক্তার যৌথভাবে নগরব্রিজ এলাকায় পাকা রাস্তার পাশে তাদের সম্পত্তির উপর বড় একটি ইটের তৈরি দোকানঘর নির্মাণ করছিল। এ সময় এনায়েতপুর গ্রামের হেলাল উদ্দীন সরদার তার সম্পত্তি বলে দাবি করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সহযোগীতায় ও ক্ষমতার দাপটে ওই তিন মালিকের সম্পত্তিসহ নির্মাণধীন দোকানঘর দখলে নেয়।

অভিযোগকারী জাফের আলী সরদার জানান, আমার ছেলে-মেয়েরা লাখ লাখ টাকা খরচ করে তাদের নিজের সম্পত্তিতে দোকান ঘর নির্মাণ করছিলেন। ওই সময় আওয়ামী লীগের কিছু লোকজন নিয়ে এসে হেলাল উদ্দীন সম্পত্তিসহ দোকান জবরদখল করে। এরপর বিভিন্ন স্থানে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ক্ষমতাসীনদের কারণে কোন সুবিচার পাইনি। সম্পত্তি ও দোকানঘর উদ্ধারের জন্য কিছুদিন আগে কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে অভিযোগ দিয়েছে। দ্রুত সম্পত্তি ও দোকানঘর উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন মালিকরা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সরেজমিনে গিয়েও দখলকারী হেলাল উদ্দীন সরদারকে পাওয়া যায়নি। এ সময় তার ছেলে রিপন বলেন, জায়গা নিয়ে আমরা আদালতে মামলা করেছি। মামলা চলমান আছে। আদালত যে রায় দিবে সেটা আমরা মেনে নিব।

এ বিষয়ে রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মখলেছুর রহামন বাবু বলেন, অভিযোগের পর দু’পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে পরিষদে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ করা হয়েছিল। সেখানে বাদী উপস্থিত হলেও বিবাদী হেলাল উদ্দীন আসেননি। ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায় বাদীর ছেলে-মেয়ের সম্পত্তি ওইটা। হেলাল উদ্দীন অন্যের জমি ও দোকান জবরদখল করে রেখেছে। আমি গ্রাম আদালতে একটি রায় দিয়েছি। সেটাও বিবাদী হেলাল মানছে না। তাই বিষয়টি এখনো সমাধান করা সম্ভব হয়নি।