রাজশাহীর মোহনপুর আ’লীগের সম্মেলন এর পরিবর্তন চান তৃণমূল নেতাকর্মীরা
- আপডেট সময় : ১২:১৬:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ মার্চ ২০২২ ৩৬ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীর মোহনপুর আ’লীগের সম্মেলন এর পরিবর্তন চান তৃণমূল নেতাকর্মীরা
রাজশাহী ব্যুরো:
রাজশাহীর মোহনপুর আ’লীগের সম্মেলন এর পরিবর্তন চান তৃণমূল নেতাকর্মীরা। আগামিকাল রোববার (৬ মার্চ) রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনকে ঘিরে তৃণমূল নেতা কর্মীদের মাঝে চাপাক্ষোভ বিরাজ করছে। দলের ত্যাগীদের অভিযোগ ওয়ার্ড-ইউনিয়ন কমিটি না করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করেছেন সভাপতি-সম্পাদক।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন দপ্তরে নেতৃবৃন্দ লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী নেতাকর্মীরা। এদিকে সম্মেলনের চিঠিতে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাড়া অন্যান্য নেতাকর্মীর ছবি চিঠিতে না দেওয়ায় এনিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
অভিযোগ সূত্রে ও নেতা কর্মিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিজেদের সভাপতি ও সম্পাদকের পদ টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্রকে তোয়াক্কা না করে ওর্য়াড ইউনিয়ন পর্যায়ের নতুন কমিটি না করে তাড়াহুড়ো করে সম্মেলনের ঘোষনা দেন বর্তমান নেতাকর্মি শূন্য সভাপতি আব্দুস সালাম ও সম্পাদক মোহনপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মফিজ উদ্দিন কবিরাজ। সরকারি বিধিমোতাবেক সরকারি কর্মকর্তা দলীয় কোন পদে না থাকতে না পারলেও স্থানীয় সংসদের আর্শীবাদে ক্ষমতার দাপটে দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদকের পদ ধরে রেখেছেন অধ্যক্ষ মফিজ উদ্দিন কবিরাজ। এবারও সম্মেলনে তিনি সম্পাদকের প্রার্থীর ঘোষনা দিয়েছেন।
স্থানীয় একাধিক ত্যাগী নেতা কর্মী বলেন, এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম দলের ত্যাগী নেতা কর্মীদের দুরে সরিয়ে তার পক্ষের কিছু চামচা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ পন্থায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির পদটি যুগের পর যুগ দখল করে আছেন। এর মধ্যে গত উপজেলা নির্বাচনে দলের অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকলেও তার আপন শালা স্থানীয় সংসদ সদস্য হওয়ার সুবাধে ক্ষমতার দাপটে অন্য সব প্রার্থীদের নির্বাচন হতে সরে দাড়াতে বাধ্য করে বিনা প্রতিদ্বন্তিতায় উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটিও দখল করেন।
উপজেলা আওয়ামীগের সদস্য ত্যাগী নেতা সভাপতির প্রার্থী সুলতান মাহমুদ বলেন, এ্যাড আব্দুস সালাম যুগ যুগ ধরে সভাপতির পদটি আঁকড়ে আছেন। এর মধ্যে ক্ষমতার দাপটে হয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। আপন শালা সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, অন্য শালা আজাহারুল উদ্দিন বাবলু ইউনিয়ন একই পরিবারে সব পদ পদবী পাওয়ায় চলছে যা ইচ্ছে মত। ফলে উপজেলা আওয়ামীমীগ (সালাম আয়েন) এক পরিবারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। যার কারনে তাদের দাপটে দলের নেতা কর্মী একেবারে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তাই এবারের সম্মেলন পরিবর্তন চান তৃণমূল নেতা কর্মী।
উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সদস্য জামাল বিস্বাস বলেন, সভাপতি আব্দুস সালাম ও সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন কবিরাজ পরিকল্পিত ভাবে হঠাৎ করে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের ইচ্ছামত কিছু নেতৃবৃন্দ নিয়ে মিটিং করতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে ত্যাগি নির্যাতিত ও কারাভোগকারী নেতৃবৃন্দ মিটিংয়ে উপস্থিত হয়ে জানতে পারেন আগামী ৬ মার্চ উপজেলা আওয়ামী লীগে সম্মেলন। ওই নেতৃবৃন্দরা সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে জানতে চান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন না করে কীভাবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়? এটা কী বৈধ হবে? তাঁরা নেতৃবৃন্দের কোন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ঐদিনই সম্মেলন হবে ঘোষণা দিয়ে চলে যান। নির্যাতিত, মামলা মোকদ্দমা, কারাভোগকারী ত্যাগী নেতৃবৃন্দ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর অবৈধভাবে সম্মেলন করার অপচেষ্টার জন্য লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন গত ২২ ও ২৮ ফেব্রুয়ারী সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ জনাব ওবায়দুল কাদের বরাবর আরেকটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বকুল বলেন, বিগত ৩০ বছর যাবৎ ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগে বর্তমান সভাপতি আবদুস সালাম ও সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন কবিরাজ তাদের ইচ্ছামত নেতাকর্মীদের কমিটি রেখে সম্মেলন করার ঘোষণা করার মাঠ পর্যায়ে চরম অসন্তোষ ক্ষোভের সৃষ্টি, বিশৃঙ্খলা ও দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে। এবারও যদি ঐ একই ভাবে কমিটি গঠন হয় তবে তৃণমূল পর্যায় থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগ পর্যায় পর্যন্ত বড় ধরণের বিপর্যয়ে পড়বে দলটি। তিনি আরো বলেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মফিজ উদ্দিন কবিরাজের কর্মরত কলেজ গত ৮ আগস্ট ২০১৮ইং তারিখ হতে সরকারি করণ হওয়া সত্বেও তিনি সরকারি নীতিমালা উপক্ষো করে ও আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অমান্য করে দুই পদেই বহাল তবিয়তে আছেন। ৬ মার্চ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। যার কারণে তিনি ও সভাপিত নতুন প্রর্থীগণদের ভোটার তালিকা প্রদান করতে চাচ্ছিল না। পরে সম্মেলনর ১ দিন আগে ভোটার তালিকা প্রদান করেন। সালাম ও মফিজ কবিরাজের হাত থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগকে রক্ষা করে দলের স্বার্থে সম্মেলনে যোগ্য ও ত্যাগী মানুষ সভাপতি সম্পাদক নির্বাচিত করা প্রযোজন বলে আমি মনে করি।