ঢাকা ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পরীক্ষা দিন বাদে কেন্দ্রগুলোতে নিয়মিত ক্লাস নিতে পঞ্চগড়ে নির্দেশনা প্রদান সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ীতে ৬১৭৯০ ভারতীয় রুপি সহ গ্রেফতার-২ শেরপুরের সীমান্তে বিপুল পরিমাণে ভারতীয় ম/দ জব্দ বাঘাতে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মণে করা সড়কে দুদকের অভিযান ধামইরহাটে কৃষককে পা ভেঙ্গে আহত করার প্রদিবাদে মানববন্ধন মান্দায় ক্লাসে শিক্ষকের ভুল ধরায় ছাত্রকে পেটালেন শিক্ষক রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের শাটডাউন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ নলডাঙ্গায় রেল ওভারব্রিজের পিলালের সাথে ধাক্কায় অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু রাজশাহী এলজিইডি অফিসে দুদকের অভিযান

রাজশাহীতে ১০ পুলিশসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় : ১১:৩২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ১০৮ বার পড়া হয়েছে

collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজশাহীতে ১০ পুলিশসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

রাজশাহীতে পুলিশের ১০ সদস্যসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে লাইলা সুলতানা লিজা নামে মহিলা দলের এক নেত্রী আদালতে মামলা করেছেন। রাজনৈতিক কারণে তার বাসায় অভিযানের নামে ভাঙচুর, শারীরিকভাবে নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১এ ওই নেত্রী বাদি হয়ে এ মামলা করেন। মামলা নম্বর-১৭০৮/২৪। আদালতে বাদীর আইনজীবী হিসেবে ছিলেন মাহমুদুর রহমান রুমন। মামলার বাদী লাইলা সুলতানা জেলা মহিলা দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক।

মামলার বাদী জানান, আদালতের বিচারক ফয়সাল তারেক মামলা গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী বছরের ১৭ মার্চ। গত ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারির এক ঘটনার প্রেক্ষিতে এ মামলা করা হয়।
মামলায় ১০ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন নগরীর বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন, তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম বাদশা, উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম, মো. শাহিন, বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ মো. মনির ও কনস্টেবল হৃদয় কুমার, আনোয়ার, আফাজ, সাবিনা ও রুমিনা। মামলার অন্য ৪২ আসামির মধ্যে সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. টুলুর নামও আছে।

মামলার এজাহা বলা হয়েছে, মামলার বাদী দীর্ঘদিন যাবৎ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিগত সময়ে তার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে আসামিরা তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা এবং নাজেহাল করার চেষ্টা করতেন। বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন ওসি ও ওসি-তদন্ত তাকে বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর জন্য এবং ক্রসফায়ারে দিয়ে হত্যার হুমকি দিতেন। এ বিষয়ে আতঙ্কিত হয়ে লাইলা সুলতানা ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বোয়ালিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যান। তখন ওসি শাহাদত হোসেন জিডি না নিয়ে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর জের ধরে ৩ ফেব্রুয়ারি বিকালে ওসিসহ ১০ পুলিশ সদস্য লাইলার পৈতৃক বাড়ি গিয়ে তাকে টানাহেঁচড়া করে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসেন। অন্য আসামিরা বাড়িটি ভাঙচুর করতে থাকেন। ওই সময় ওসি শাহাদত লাঠি দিয়ে লাইলার মাথায় আঘাত করলে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। পরবর্তীতে তার মাথায় ৫টি সেলাই দেওয়া হয়। মামলার আসামি পুলিশ পরিদর্শক সেলিম বাদশা লাঠি দিয়ে লাইলার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি মারপিট করেন। ৪ নম্বর আসামি মনির টানাহেঁচড়া করেন। তিনি লাইলাকে শ্লীলতাহানি করেন।

এ সময় লাইলার বোন শামীমা সুলতানা লাকী তাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে পুলিশ সদস্যরা তাকে মারধর করেন। আনুমানিক ৩০-৪০ মিনিট ধরে অন্য আসামিরা তার বাড়ি ভাঙচুর করেন। এতে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। ঘটনার পর লাইলাকে পুলিশের পিকআপে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন হাসপাতাল থেকে তাকে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ওসি শাহাদত হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্য আসামিদের সাাথে নিয়ে লাইলাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন এবং বাড়ি ভাঙচুর করেছেন। ওই সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও আসামিরা তার চিকিৎসার কাগজপত্রও তাকে দেননি। পরে লাইলা জামিন পেলে আসামিরা আবারও নানাভাবে হুমকি দেন। রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিবেশ থাকায় আসামিদের ভয়ে এতদিন মামলা করতে পারেননি লাইলা।

মামলার বাদী লাইলার আইনজীবী মাহমুদুর রহমান রুমন বলেন, আদালত বাদীর বক্তব্য শুনেছেন। মামলাটি আদালত গ্রহণও করেছেন। পরবর্তী ধার্য্য তারিখে পিবিআইকে এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রাজশাহীতে ১০ পুলিশসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

আপডেট সময় : ১১:৩২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪

রাজশাহীতে ১০ পুলিশসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

রাজশাহীতে পুলিশের ১০ সদস্যসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে লাইলা সুলতানা লিজা নামে মহিলা দলের এক নেত্রী আদালতে মামলা করেছেন। রাজনৈতিক কারণে তার বাসায় অভিযানের নামে ভাঙচুর, শারীরিকভাবে নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১এ ওই নেত্রী বাদি হয়ে এ মামলা করেন। মামলা নম্বর-১৭০৮/২৪। আদালতে বাদীর আইনজীবী হিসেবে ছিলেন মাহমুদুর রহমান রুমন। মামলার বাদী লাইলা সুলতানা জেলা মহিলা দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক।

মামলার বাদী জানান, আদালতের বিচারক ফয়সাল তারেক মামলা গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী বছরের ১৭ মার্চ। গত ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারির এক ঘটনার প্রেক্ষিতে এ মামলা করা হয়।
মামলায় ১০ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন নগরীর বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন, তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম বাদশা, উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম, মো. শাহিন, বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ মো. মনির ও কনস্টেবল হৃদয় কুমার, আনোয়ার, আফাজ, সাবিনা ও রুমিনা। মামলার অন্য ৪২ আসামির মধ্যে সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. টুলুর নামও আছে।

মামলার এজাহা বলা হয়েছে, মামলার বাদী দীর্ঘদিন যাবৎ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিগত সময়ে তার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে আসামিরা তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা এবং নাজেহাল করার চেষ্টা করতেন। বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন ওসি ও ওসি-তদন্ত তাকে বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর জন্য এবং ক্রসফায়ারে দিয়ে হত্যার হুমকি দিতেন। এ বিষয়ে আতঙ্কিত হয়ে লাইলা সুলতানা ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বোয়ালিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যান। তখন ওসি শাহাদত হোসেন জিডি না নিয়ে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর জের ধরে ৩ ফেব্রুয়ারি বিকালে ওসিসহ ১০ পুলিশ সদস্য লাইলার পৈতৃক বাড়ি গিয়ে তাকে টানাহেঁচড়া করে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসেন। অন্য আসামিরা বাড়িটি ভাঙচুর করতে থাকেন। ওই সময় ওসি শাহাদত লাঠি দিয়ে লাইলার মাথায় আঘাত করলে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। পরবর্তীতে তার মাথায় ৫টি সেলাই দেওয়া হয়। মামলার আসামি পুলিশ পরিদর্শক সেলিম বাদশা লাঠি দিয়ে লাইলার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি মারপিট করেন। ৪ নম্বর আসামি মনির টানাহেঁচড়া করেন। তিনি লাইলাকে শ্লীলতাহানি করেন।

এ সময় লাইলার বোন শামীমা সুলতানা লাকী তাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে পুলিশ সদস্যরা তাকে মারধর করেন। আনুমানিক ৩০-৪০ মিনিট ধরে অন্য আসামিরা তার বাড়ি ভাঙচুর করেন। এতে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। ঘটনার পর লাইলাকে পুলিশের পিকআপে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন হাসপাতাল থেকে তাকে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ওসি শাহাদত হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্য আসামিদের সাাথে নিয়ে লাইলাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন এবং বাড়ি ভাঙচুর করেছেন। ওই সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও আসামিরা তার চিকিৎসার কাগজপত্রও তাকে দেননি। পরে লাইলা জামিন পেলে আসামিরা আবারও নানাভাবে হুমকি দেন। রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিবেশ থাকায় আসামিদের ভয়ে এতদিন মামলা করতে পারেননি লাইলা।

মামলার বাদী লাইলার আইনজীবী মাহমুদুর রহমান রুমন বলেন, আদালত বাদীর বক্তব্য শুনেছেন। মামলাটি আদালত গ্রহণও করেছেন। পরবর্তী ধার্য্য তারিখে পিবিআইকে এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।