ঢাকা ০৮:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোহনপুরে হত্যা মামলার এজাহার সম্পর্কে জানেন না বাদী

এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিনবেদক:
  • আপডেট সময় : ০১:৫৩:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৬৩ বার পড়া হয়েছে

collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মোহনপুরে হত্যা মামলার এজাহার সম্পর্কে জানেন না বাদী

রাজশাহীর মোহনপুরে আলোচিত মো: সাদ্দাম আলী হত্যাকাণ্ডের মূল ঘটনা আড়াল করে মনগড়া তথ্য দিয়ে তড়িঘড়ি করে মামলা রেকর্ড করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ফলে থানায় কাদের নামে এজাহার হয়েছে-সে সম্পর্কে কিছুই জানেনা হত্যা মামলার বাদী।নিহত সাদ্দামের স্ত্রী ও মামলার বাদী মোছা: রেহেনা বিবি সোমবার (৪ নভেম্বর) রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।এসময় নিহত সাদ্দাম আলীর ভাই বুলবুল হোসেনসহ পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা উল্লেখ করেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫ টার সময় ধরালো হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে মো: সাদ্দাম আলীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন মামলার এক নম্বর আসামিকে জনতা আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে। ঘটনার প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও হত্যার সাথে জড়িত আর কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। ওইদিন সাদ্দাম আলীর লাশ দাফনের পর মোহনপুর থানায় মামলা করতে গিয়ে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন এঘটনায় একটি হত্যার মামলা হয়েছে।কিন্তু মামলার বিষয়ে কিছু জানে না বাদি মোছা: রেহেনা বিবি।পুলিশের দায়ের করা মামলায় ঘটনার সাথে মামলার বিবরণেরও কোন মিল নেই। প্রকৃত ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য হত্যার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত ঘটনার বিবরণ দিয়ে হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে মোহনপুর থানা পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকার করে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, হত্যাকান্ডে সাথে জড়িত ৬ জনের মধ্যে শুধু একছার আলীকে আসামি করা হয়েছে।কিন্তু থানায় যে মামলায় আসামিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে একছার আলী ছাড়া অন্য আসামিরা হত্যার সাথে জড়িত নেই। মোহনপুর থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের কথা বলে নিহত সাদ্দাম আলীর স্ত্রী মোছা: রেহেনা বিবির স্বাক্ষর নিয়েছিল। ওই স্বাক্ষরেই রেহেনা বিবিকে মামলার বাদী করে পুলিশ মামলা নথিভূক্ত করে। যেখানে আসামি করা হয়েছে মনগড়া।

নিহত সাদ্দাম আলীর পরিবারের দাবি, ওই এজাহারে ৫ জন আসামির মধ্যে একছার আলী ছাড়া বাকি আসামি উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের মৃত নছির উদ্দিনের ছেলে মো: দেলোয়ার হোসেন (৪৫), মহিষকুন্ডি গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান মন্ডলের ছেলে মো: আয়েন উদ্দিন (৪৭), এনামুল হকের ছেলে একরামুল হক বিজয় (৪৫) ও বজরপুর গ্রামের সমশের আলীর ছেলে মো: আল আলামিন বিশ্বাস (৪৬) হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল না।
পরবর্তিতে মোহনপুর থানায় মামলা না নেওয়ায় প্রকৃত ঘটনার বিবরণ দিয়ে হত্যার সাথে জড়িত মোহনপুর উপজেলার বড় পালশা গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিন ছেলে একছার আলী (৪০), আনছার আলীর স্ত্রী মোছা: হালিমা (৫০), মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে মো: কামাল হোসেন (৩০) একছার আলীর স্ত্রী আঙ্গুরা (৩৫), মৃত ইয়াছিন মোল্লার ছেলে মো: সাজ্জাদ মোল্লা (৪৫), মৃত আজিদের ছেলে মো:আক্তারুজ্জামানকে আসামি করে রাজশাহী বিজ্ঞ মোহনপুর আমলী আদালত মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৫১২।

আদালতে দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল অনুমান ৫ টার সময় মোহনপুর উপজেলার বড় পালশা গ্রামের নিহত সাদ্দাম আলীকে একই গ্রামের মো: কামাল ডেকে নিয়ে একছার আলীর বাড়িতে নিয়ে যায়। ধারালো হাঁসুয়া, লাঠি শোটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মো: কামাল হোসেনে হুকুমে একছার আলী ধারালো লম্বা হাঁসুয়া দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য সাদ্দাম আলীকে কুপিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখন করে। নিহত সাদ্দাম আলীকে বাঁচতে ভাই বুলবুল হোসেন এগিয়ে আসলে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ওই সময় স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে মোহনপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাদ্দাম আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। বুলবুল হোসেনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ রামেক হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান হান্নান বলেন, ‘বাদীর করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা মামলা নথিভূক্ত করেছি। এখন তিনি কি দাবি করছেন, সেটি তার ব্যাপার। তবে আমরা কোনো আসামির নাম আমাদের মতো করে এজাহারে দেয়নি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মোহনপুরে হত্যা মামলার এজাহার সম্পর্কে জানেন না বাদী

আপডেট সময় : ০১:৫৩:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪

মোহনপুরে হত্যা মামলার এজাহার সম্পর্কে জানেন না বাদী

রাজশাহীর মোহনপুরে আলোচিত মো: সাদ্দাম আলী হত্যাকাণ্ডের মূল ঘটনা আড়াল করে মনগড়া তথ্য দিয়ে তড়িঘড়ি করে মামলা রেকর্ড করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ফলে থানায় কাদের নামে এজাহার হয়েছে-সে সম্পর্কে কিছুই জানেনা হত্যা মামলার বাদী।নিহত সাদ্দামের স্ত্রী ও মামলার বাদী মোছা: রেহেনা বিবি সোমবার (৪ নভেম্বর) রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।এসময় নিহত সাদ্দাম আলীর ভাই বুলবুল হোসেনসহ পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা উল্লেখ করেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫ টার সময় ধরালো হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে মো: সাদ্দাম আলীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন মামলার এক নম্বর আসামিকে জনতা আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে। ঘটনার প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও হত্যার সাথে জড়িত আর কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। ওইদিন সাদ্দাম আলীর লাশ দাফনের পর মোহনপুর থানায় মামলা করতে গিয়ে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন এঘটনায় একটি হত্যার মামলা হয়েছে।কিন্তু মামলার বিষয়ে কিছু জানে না বাদি মোছা: রেহেনা বিবি।পুলিশের দায়ের করা মামলায় ঘটনার সাথে মামলার বিবরণেরও কোন মিল নেই। প্রকৃত ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য হত্যার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত ঘটনার বিবরণ দিয়ে হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে মোহনপুর থানা পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকার করে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, হত্যাকান্ডে সাথে জড়িত ৬ জনের মধ্যে শুধু একছার আলীকে আসামি করা হয়েছে।কিন্তু থানায় যে মামলায় আসামিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে একছার আলী ছাড়া অন্য আসামিরা হত্যার সাথে জড়িত নেই। মোহনপুর থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের কথা বলে নিহত সাদ্দাম আলীর স্ত্রী মোছা: রেহেনা বিবির স্বাক্ষর নিয়েছিল। ওই স্বাক্ষরেই রেহেনা বিবিকে মামলার বাদী করে পুলিশ মামলা নথিভূক্ত করে। যেখানে আসামি করা হয়েছে মনগড়া।

নিহত সাদ্দাম আলীর পরিবারের দাবি, ওই এজাহারে ৫ জন আসামির মধ্যে একছার আলী ছাড়া বাকি আসামি উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের মৃত নছির উদ্দিনের ছেলে মো: দেলোয়ার হোসেন (৪৫), মহিষকুন্ডি গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান মন্ডলের ছেলে মো: আয়েন উদ্দিন (৪৭), এনামুল হকের ছেলে একরামুল হক বিজয় (৪৫) ও বজরপুর গ্রামের সমশের আলীর ছেলে মো: আল আলামিন বিশ্বাস (৪৬) হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল না।
পরবর্তিতে মোহনপুর থানায় মামলা না নেওয়ায় প্রকৃত ঘটনার বিবরণ দিয়ে হত্যার সাথে জড়িত মোহনপুর উপজেলার বড় পালশা গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিন ছেলে একছার আলী (৪০), আনছার আলীর স্ত্রী মোছা: হালিমা (৫০), মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে মো: কামাল হোসেন (৩০) একছার আলীর স্ত্রী আঙ্গুরা (৩৫), মৃত ইয়াছিন মোল্লার ছেলে মো: সাজ্জাদ মোল্লা (৪৫), মৃত আজিদের ছেলে মো:আক্তারুজ্জামানকে আসামি করে রাজশাহী বিজ্ঞ মোহনপুর আমলী আদালত মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৫১২।

আদালতে দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল অনুমান ৫ টার সময় মোহনপুর উপজেলার বড় পালশা গ্রামের নিহত সাদ্দাম আলীকে একই গ্রামের মো: কামাল ডেকে নিয়ে একছার আলীর বাড়িতে নিয়ে যায়। ধারালো হাঁসুয়া, লাঠি শোটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মো: কামাল হোসেনে হুকুমে একছার আলী ধারালো লম্বা হাঁসুয়া দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য সাদ্দাম আলীকে কুপিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখন করে। নিহত সাদ্দাম আলীকে বাঁচতে ভাই বুলবুল হোসেন এগিয়ে আসলে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ওই সময় স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে মোহনপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাদ্দাম আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। বুলবুল হোসেনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ রামেক হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান হান্নান বলেন, ‘বাদীর করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা মামলা নথিভূক্ত করেছি। এখন তিনি কি দাবি করছেন, সেটি তার ব্যাপার। তবে আমরা কোনো আসামির নাম আমাদের মতো করে এজাহারে দেয়নি।’