ঢাকা ০৭:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংঘাতহীন সম্প্রীতির ধামইরহাট নির্মানের লক্ষ্যে আলোচনাসভা ও মানববন্ধন কোরআনের শাসন দিয়ে আমরা বাংলাদেশ গড়তে চাই- ডা. শফিকুর রহমান রাজশাহীতে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন উদ্বোধন করতে গিয়ে কাঁদলেন শহীদ সাকিবের বাবা নলডাঙ্গায় দেয়ালে লেখা জয় বাংলা শ্লোগান মুছে দিল ছাত্রদল নাটোরে আদিবাসী ছাত্র-জনতার উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন মোহনপুরে ইয়াং ড্রাগন মার্শাল আর্ট সেন্টারের বেল্ট বিতরন মান্দায় ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে কম্বল বিতরণ দেড় দশক পর রাজশাহীতে জামায়াতের সম্মেলন, নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা! নাটোরের নাট্যাভিনেত্রী পুতুল রায়ের পরলোকগমন নিষিদ্ধ সংগঠন নাটোর জেলা ছাত্রলীগ নেতা মাসুম ঈশ্বরদী থেকে গ্রেফতার

মোহনপুরে ভুল তথ্যে চায়ের দোকানে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা, ততক্ষণে পান বরজ পুড়ে ছাই

এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় : ০১:৫৭:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫১ বার পড়া হয়েছে

collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মোহনপুরে ভুল তথ্যে চায়ের দোকানে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা, ততক্ষণে পান বরজ পুড়ে ছাই

রাজশাহীর মোহনপুরে আগুন লেগেছে পানের বরজে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয় চায়ের স্টলে আগুন। এমন খবরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন না পেয়ে ফিরে আসে। ততক্ষণে বিদ্যাধরপুরে চারজন চাষির ৩৫ শতাংশ জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হয়েছে। হয়েছে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মোহনপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সাথে এমন ঘটনা ঘটে। উপজেলার বিদ্যাধরপুর গ্রামে পানের বরজে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয় উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের বিষহারা এলাকায় হালিমের চায়ের স্টলে আগুন লেগেছে। কিন্তু চায়ের স্টল অক্ষত অবস্থায় দেখে ফিরে যায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিস থেকে বিদ্যাধরপুর দক্ষিণে ৮ কিলোমিটার। আর ফয়ার সার্ভিস থেকে পূর্বদিকে ৯ কিলোমিটার বিষহারা এলাকার দূরত্ব। আর বিষহারা থেকে ফিরে ফায়ার সার্ভিস হয়ে বিদ্যাধরপুরের দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। ভুল তথ্যের কারণে ততক্ষণে পান বরজ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
মোহনপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, তখন দুপুর ১টা। ফায়ার সার্ভিসে কল আসে মোহনপুর উপজেলার বিষহারা এলাকায় হালিমের চায়ের স্টলে আগুন। এমন খবরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রওনা দেয় ১টা ৮ মিনিটে বিষহারার উদ্দেশ্যে। আবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসে কল আসে একই উপজেলার বিদ্যাধরপুরে পানের বরজে আগুনে খবর। ততক্ষণে ৫ কিলোমিটারের বেশি পথ অতিক্রম করে বিষহারার পথে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলে গেছে।

এবার ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে দেখে চায়ের স্টলে আগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এরপরে অভিযোগ আসা মোবাইল ফোনে কল করা হলে রিসিভ করে তিনি জানান, ইট বিছানো রাস্তায় একটু সামনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের বসতবাড়িতে আগুন। সেখানে গিয়ে আগুন দেখতে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদরা বুঝতে পারেন তাদের ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। এবার ওই নম্বরে ফোন দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এসময় বিদ্যাধরপুরে চার চাষির ৩৫ শতাংশ জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

বিদ্যাধরপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিরা বলেন, পানের বরজে আগুনের বিষয়টি প্রথমে মোহনপুর ফায়ার সার্ভিসে জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিস থেকে জানায়- বিষহারা এলাকায় আগুনের বিষয়টি। জানানো হয় সেখান থেকে আগে কল পাওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিষহারায় যায় আগুন নেভাতে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আসতে দেরি হওয়ায় এলাকাবাসী আগুন নিভিয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এলে এতো ক্ষতি হতো না।

পানের বরজের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার দুপুর বেলা। সবাই নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এসময় পানের বরজে আগুনের খবর। স্থানীয়রা আগুন দেখতে পেয়ে ভুটভূটি মাধ্যেম পানি নিয়ে এসে সবাই বালতিতে করে আগুন নেভানো চেষ্টা করে। যে যেভাবে পেড়েছে আগুন নেভানো কাজ করেছে। তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন আগে তার একটি পটলের ক্ষেত কেটে নষ্ট করেছে দুর্বিত্তরা। এবার বরজে আগুন দিয়েছে। এতে কয়েক জনচাষির পানের বরজ পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করব।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যাধরপুর গ্রামের শিমুল আহমেদ, বেলাল হোসেন, আয়ুব আলী ও নজরুল ইসলামের যৌথ মালিকানাধিন প্রায় ৩৫ শতাংশ জমিতে পানের বরজে আগুন লেগে পুড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। তবে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে কে বা কারা আগুন দিয়ে বলে বরজ মালিকরা ধারণা করছেন।

এ বিষয়ে মোহনপুর ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার নুরুল ইসলাম বলেন, আগুন লেগেছে এক এলাকায়, আর আমাদের ফোন করে অন্য এলাকায় পাঠানো হয়েছে। এটা আমাদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা করা হয়েছে। যিনি এই কাজটা করেছেন তিনি জেনে বুঝেই করেছেন। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তারা বিষয়টি পুলিশকে জানাবেন।

মোহনপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মোহনপুরে ভুল তথ্যে চায়ের দোকানে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা, ততক্ষণে পান বরজ পুড়ে ছাই

আপডেট সময় : ০১:৫৭:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

মোহনপুরে ভুল তথ্যে চায়ের দোকানে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা, ততক্ষণে পান বরজ পুড়ে ছাই

রাজশাহীর মোহনপুরে আগুন লেগেছে পানের বরজে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয় চায়ের স্টলে আগুন। এমন খবরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন না পেয়ে ফিরে আসে। ততক্ষণে বিদ্যাধরপুরে চারজন চাষির ৩৫ শতাংশ জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হয়েছে। হয়েছে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মোহনপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সাথে এমন ঘটনা ঘটে। উপজেলার বিদ্যাধরপুর গ্রামে পানের বরজে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয় উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের বিষহারা এলাকায় হালিমের চায়ের স্টলে আগুন লেগেছে। কিন্তু চায়ের স্টল অক্ষত অবস্থায় দেখে ফিরে যায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিস থেকে বিদ্যাধরপুর দক্ষিণে ৮ কিলোমিটার। আর ফয়ার সার্ভিস থেকে পূর্বদিকে ৯ কিলোমিটার বিষহারা এলাকার দূরত্ব। আর বিষহারা থেকে ফিরে ফায়ার সার্ভিস হয়ে বিদ্যাধরপুরের দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। ভুল তথ্যের কারণে ততক্ষণে পান বরজ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
মোহনপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, তখন দুপুর ১টা। ফায়ার সার্ভিসে কল আসে মোহনপুর উপজেলার বিষহারা এলাকায় হালিমের চায়ের স্টলে আগুন। এমন খবরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রওনা দেয় ১টা ৮ মিনিটে বিষহারার উদ্দেশ্যে। আবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসে কল আসে একই উপজেলার বিদ্যাধরপুরে পানের বরজে আগুনে খবর। ততক্ষণে ৫ কিলোমিটারের বেশি পথ অতিক্রম করে বিষহারার পথে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলে গেছে।

এবার ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে দেখে চায়ের স্টলে আগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এরপরে অভিযোগ আসা মোবাইল ফোনে কল করা হলে রিসিভ করে তিনি জানান, ইট বিছানো রাস্তায় একটু সামনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের বসতবাড়িতে আগুন। সেখানে গিয়ে আগুন দেখতে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদরা বুঝতে পারেন তাদের ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। এবার ওই নম্বরে ফোন দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এসময় বিদ্যাধরপুরে চার চাষির ৩৫ শতাংশ জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

বিদ্যাধরপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিরা বলেন, পানের বরজে আগুনের বিষয়টি প্রথমে মোহনপুর ফায়ার সার্ভিসে জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিস থেকে জানায়- বিষহারা এলাকায় আগুনের বিষয়টি। জানানো হয় সেখান থেকে আগে কল পাওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিষহারায় যায় আগুন নেভাতে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আসতে দেরি হওয়ায় এলাকাবাসী আগুন নিভিয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এলে এতো ক্ষতি হতো না।

পানের বরজের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার দুপুর বেলা। সবাই নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এসময় পানের বরজে আগুনের খবর। স্থানীয়রা আগুন দেখতে পেয়ে ভুটভূটি মাধ্যেম পানি নিয়ে এসে সবাই বালতিতে করে আগুন নেভানো চেষ্টা করে। যে যেভাবে পেড়েছে আগুন নেভানো কাজ করেছে। তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন আগে তার একটি পটলের ক্ষেত কেটে নষ্ট করেছে দুর্বিত্তরা। এবার বরজে আগুন দিয়েছে। এতে কয়েক জনচাষির পানের বরজ পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করব।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যাধরপুর গ্রামের শিমুল আহমেদ, বেলাল হোসেন, আয়ুব আলী ও নজরুল ইসলামের যৌথ মালিকানাধিন প্রায় ৩৫ শতাংশ জমিতে পানের বরজে আগুন লেগে পুড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। তবে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে কে বা কারা আগুন দিয়ে বলে বরজ মালিকরা ধারণা করছেন।

এ বিষয়ে মোহনপুর ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার নুরুল ইসলাম বলেন, আগুন লেগেছে এক এলাকায়, আর আমাদের ফোন করে অন্য এলাকায় পাঠানো হয়েছে। এটা আমাদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা করা হয়েছে। যিনি এই কাজটা করেছেন তিনি জেনে বুঝেই করেছেন। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তারা বিষয়টি পুলিশকে জানাবেন।

মোহনপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।