মৃত স্বামীকে জীবিত দেখিয়ে স্ত্রীর জালিয়াতি
- আপডেট সময় : ১২:৩৬:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মার্চ ২০২২ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
মৃত স্বামীকে জীবিত দেখিয়ে স্ত্রীর জালিয়াতি
রাজশাহী ব্যুরোঃ
মৃত স্বামীকে জীবিত দেখিয়ে স্ত্রীর জালিয়াতি।
রাজশাহীতে মৃত্যু স্বামীকে জীবিত দেখিয়ে ভুয়া স্বাক্ষরে কাগজপত্র জালিয়াতি ও টাকা পয়সা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। ছেলে সিরাজ উদ্দিনের প্রায় এক কোটি টাকা খোয়া গেছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
শনিবার (৫ মার্চ) বিকেলে রাজশাহী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান ভুক্তভোগী সিরাজ। তার বাসা নগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকায়। সিরাজের বাবার নাম সারওয়ার উদ্দিন। অভিযুক্ত ব্যক্তি আয়েশা আক্তার সিরাজ উদ্দিনের সৎ মা।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী সিরাজ বলেন, আমার বাবা ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই মারা যান। তিনি দুটি বিয়ে করেছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর আমার মা আরেকজনকে বিয়ে করেন। আর সৎ মা আয়েশা আক্তার বাবার সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়ে শুরু করেন অপকৌশল। জীবদ্দশায় আমার বাবা একটি পারিবারিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করে সেখানকার চেয়ারম্যান হন।
তিনি বলেন, সোসাইটির অধীনে বাবা সিটি কম্পিউটার সায়েন্স বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এ্যান্ড টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট নামে একটি কলেজ গড়ে তোলেন এবং অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুর একমাস পর ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর কলেজের একটি মিটিংয়ে আমার সৎ মা কয়েকজনের সঙ্গে যোগসাজস করে বাবাকে জীবিত দেখান এবং মিটিংয়ে সিদ্ধান্তের জায়গায় বাবার ভুয়া স্বাক্ষর করেন। চেয়ারম্যান হিসেবে বাবার স্বাক্ষর দেখিয়ে কারিগরি বোর্ড থেকে কলেজের ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন নেন আয়েশা আক্তার। অথচ আমার তিন বছর আগে মারা গেছেন।
সিরাজ উদ্দিন আরো বলেন, প্রিমিয়ার ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকে আমার বাবার একাউন্ট ছিল। বাবার মৃত্যুর পর প্রিমিয়ার ব্যাংকে গিয়ে একাউন্টের তথ্য চান তিনি। ওইসময় ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক শওকত কামাল সরকার বলেন, সারওয়ার উদ্দিন নামে খোলা অ্যাকাউন্টে কোনো নমিনি নেই। টাকা উত্তোলন করতে হলে আদালতের মাধ্যমে আইগতভাবে পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শও দেন তিনি। তবে কয়েকদিন পর চল্লিশা অনুষ্ঠানে সকলের সামনে তার সৎ মা ওই একাউন্টে থাকা ৯২ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন বলে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সিরাজ বলেন, সৎ মায়ের কথা শুনে হতবম্ব হয়ে পড়ি। কেননা ব্যাংক অফিসার আগেই জানিয়েছিলেন, ওই একাউন্টের কোনো নমিনি নেই। ফলে আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করি। কিন্তু আয়েশা সমাধান না করে আমাকে বাবার বাসায় প্রবেশে বাধা দেন। তার লোকজন আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এসব ঘটনায় সবশেষ আইনের আশ্রয় নিয়ে মামলা দায়ের করলে সৎ মা কারাগারেও যান। পরে জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি।
সিরাজ উদ্দিন বলেন, সৎ মায়ের দাপটে আমি বাবার বাসায় ঢুকতে পারছি না। গেলেই নারী নির্যাতন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে। সৎ মায়ের জালিয়াতিতে আমার প্রায় এক কোটি টাকা প্রতারণা করেছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপসহ আইনি প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার কামনা করেছেন।
অভিযুক্ত আয়েশা আক্তার বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা। আর হুমকি দেয়ার প্রশ্নই আসেনা। সিরাজই আমার জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। তাছাড়া আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন। এ বিষয়ে আদালত বিচারের মাধ্যমে রায় দেবেন।