মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে নতুন একটা জীবন পেলাম-নাবিক জয়!
- আপডেট সময় : ০৫:০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪ ১২১ বার পড়া হয়েছে
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে নতুন একটা জীবন পেলাম-নাবিক জয়!
নিউজ ডেস্কঃ
সোমালিয়া জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া সাধারণ নাবিক (ওএস) নাটোরের বাগাতিপাড়ার জয় মাহমুদ বলেন, ৩৩ দিন জলদস্যুদের বন্দি দশা থেকে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরে মনে হচ্ছে আমার নতুন করে আবার জন্ম হয়েছে। মনে হচ্ছে, মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে নতুন একটা জীবন পেলাম। বুধবার সকালে বাড়ি ফিরে ভেজা কণ্ঠে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জলদস্যুরা যখন আমাদের জিম্মি করে তখন আমরা ভাবিনি বেচে বাড়ি ফিরবো। বন্দুকের নলের মুখে আমদের থাকতে হয়েছে। প্রতিটি মহুর্ত ছিল আতংকের। প্রতিটি দিন মনে হয়েছে অনেক দিন। বন্দি দশার ৩৩ দিন মনে হয়েছে ৩৩ বছর। প্রতিটি দিন কেটেছে আতংক ও কষ্টের মধ্যে। শুধু নামাজ পড়েছি আর আল্লার কাছে দোয়া চেয়েছি।
আমরা মসুলমান, আমরা নামায রোজা করতাম জেনে সোমালিয়া দস্যুরা আমাদের ওপর নির্যাতন বা অত্যাচার কম করেছে। আমাদের জিম্মি করার পর দস্যুরা আমাদের ওপর অনেক অত্যাচার করতো। তবে যখন দেখেছে আমরা নিয়মিত নামায পড়ছি এবং রোজা রাখছি তখন তাদের মন নরম হয়। এরপর থেকে তারা নরম সুরে আমাদের সাথে কথা বলে এবং অত্যাচারের মাত্রা কমিয়ে দেয়। কখনও ভাবিনি আমরা জীবিত বাড়ি ফিরে আসব। আলহামদুলিল্লাহ অবশেষে সুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরেছি। জয় মাহমুদ জয় মাহমুদ নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সালাইনগর দক্ষিণপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে।
এদিকে জয় মাহমুদের ফিরে আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে আত্মীয় সজন ও প্রতিবেশিরা তাকে এক নজর দেখার জন্য তার বাড়িতে ভিড় করে। জয় মাহমুদকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে ওঠেন সজন সহ প্রতিবেশীরা। জয় মাহমুদ স্বুস্থ্য ভাবে বাড়ি ফিরে আসাতে আনন্দ প্রকাশ করেন জয়ের সহপাঠিরা সহ অনেকেই।
জয়ের মা আরিফা বেগম বলেন, আমার বুকের ধন আমার বুকে ফিরে এসছে এটাই বড় আনন্দ। এর চেয়ে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। আল্লাহ য়ে আমার বুকের মানিককে ফিরে দিছে এই জন্য তার দরবারে লাখ লাখ শুকরিয়া জানায়। এবার আমদের কাছে ঈদ ছিলনা। বুকের ধন জয় জীবিতি ফিরে আসার অপেক্ষায় দিন কেটেছে। সে জীবিত বাড়ি ফিরে আসায় আমাদের এখন ঈদের দিন মনে হচ্ছে।
জয়ের বাবা জিয়াউর রহমান বলেন, আমার ছেলে বাড়ি ফিরেছে। আমরা খুব আনন্দিত। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দেশবাসি, জাহাজ কর্তৃপক্ষ, মিডিয়াকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানায়। আল্লাহপাকের কাছে শত কোটি শুকরিয়া জানায়। জয়ের বৃদ্ধ দাদি জানান, আমার নাতি বাড়ি ফিরে আসছে তাই মনে শান্তি পাচ্ছি। কত যে কান্দিচি তা বলে বুঝানো যাবেনা। আল্লাহপাক আমার নাতিকে দীর্ঘ জীবন দান করুর এটাই আমার চাওয়া।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে ভারত মহাসাগর থেকে জিম্মি হন বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ জন নাবিক। এর মধ্যে জয় মাহমুদ একজন। ৩২ দিন জিম্মি থাকার পর মুক্তিপণ নিয়ে ১৪ এপ্রিল জাহাজটি ছেড়ে দেয় তারা। এরপর আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পণ্য খালাস করে জাহাজটি। এরপর অন্য বন্দর থেকে নতুন পণ্য বোঝাই করে। সেখান থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পর গত শনিবার জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে।