ঢাকা ১১:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গুরুদাসপুরে পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলার চেষ্টার অভিযোগ, নিরাপত্তাহীনতায় ভুক্তভোগীর পরিবার শাহজাদপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও গণ সমাবেশ এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন গোদাগাড়ীতে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক সেমিনার বাগাতিপাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক-২০২৪ নির্বাচিত বাগাতিপাড়ার বাউয়েট বন্ধুসভার উদ্যোগে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালন রাজশাহীতে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে নাটোরে মানববন্ধন নাটোরে নকলবীশদের নাম ব্যবহার করে মানববন্ধন করায় প্রতিবাদ আওয়ামী লীগ এখন এতিমের বাচ্চা হয়ে গেছে- বিএনপি নেতা “দুদু”

মহাদেবপুরে আদিবাসী নারী শ্রমিকদের বেতন বৈষম্য

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:২৩:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১ ১৭৮ বার পড়া হয়েছে
চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কাজী সামছুজ্জোহা মিলন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ
উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় এখন রোপা আমন ধান কাটার ভরা মৌসুম। কাস্তের কচাকচ শব্দে মুখর মাঠের পর মাঠ। কোথাও ধান কাটছেন জমির মালিক, বাপ বেটা, নাতি পুতি, স্বামী স্ত্রী। কোথাও স্থানীয় কৃষি শ্রমিক। আবার কোথাও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা মৌসুমী শ্রমিকের দল।
সমতলের অবহেলিত আদিবাসী সাওতাল সম্প্রদায়ের মেয়েরা আদি থেকেই কৃষি কাজ করে আসছেন। হররোজ হাটুঅব্দি শাড়ি পড়ে দলবেঁধে খেতের আইল বেয়ে হেঁটে চলা, পুরুষ শ্রমিকদের সাথে ধান কাটা, আঁটি বাঁধা, মাথায় করে বোঝা বওয়া, মাড়াই করা সব কাজই করেন তারা। একজন পুরুষের সমান তো বটেই, অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে তাড়াতাড়ি বেশি কাজ করেন। কিন্তু আদি থেকেই মজুরি বঞ্চনার শিকার হয়েছেন কৃষিতে অবদান রাখা এই নারী শ্রমিকেরা।
চোখের সামনেই একই সমান কাজ করেও বেশি টাকা নিয়ে যাচ্ছেন পুরুষেরা। এটা দেখেও কোন প্রতিবাদ করতে পারেননা তারা।
ইদানিং অনেক এনজিও কাজ করছেন আদিবাসীদের উন্নয়নে। কিন্তু তাদের এ বৈষম্যের অবসানে এগিয়ে আসেনি কেউ।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মহাদেবপুর-সরাইগাছী পাকা সড়কের পাশেই খেতে ধান কাটায় ব্যস্ত একদল নারী-পুরুষ। কাছে যেতেই বেশভূষায় চেনা গেল আদিবাসী সাওতাল নারীদের।
জানতে চাইলে একে একে তারা তাদের নাম বললেন তিলতি কর্মকার, গিতা, মিনতি, রামন্তি ও লাকি। দেবীপুর গ্রামেই বাড়ি তাদের। সকাল থেকেই ধান কাটার কাজ করছেন তারা। সারাদিনের কাজের জন্য প্রত্যেকে মজুরি পান রোজ তিনশথ টাকা। তাদের সাথে কাজ করছিলেন কয়েকজন পুরুষ শ্রমিক। রেজাউল, শরিফুল, মোস্তফা, সাগর ও হাসান।
আদিবাসী নারীদের হাত তাদের চেয়ে জোরে চলে, জানালেন রেজাউল।
কিন্তু তারা একই সময় কাজ করে মজুরি পান রোজ চারশথ টাকা। কেন? মেয়ে মানুষ, তাই।
শ্রমিকদের সাথে নিজেও ধান কাটছিলেন জমির মালিক ওই গ্রামের আল মামুন। জানালেন, তিন বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ জাতের ধান লাগিয়েছেন। তেমন পোকা লাগেনি। ফলন হবে বিঘা প্রতি ১৯/২০ মণ। কিন্তু মেয়েদের মজুরি কম কেন, এপ্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মহাদেবপুরে আদিবাসী নারী শ্রমিকদের বেতন বৈষম্য

আপডেট সময় : ০২:২৩:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১

কাজী সামছুজ্জোহা মিলন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ
উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় এখন রোপা আমন ধান কাটার ভরা মৌসুম। কাস্তের কচাকচ শব্দে মুখর মাঠের পর মাঠ। কোথাও ধান কাটছেন জমির মালিক, বাপ বেটা, নাতি পুতি, স্বামী স্ত্রী। কোথাও স্থানীয় কৃষি শ্রমিক। আবার কোথাও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা মৌসুমী শ্রমিকের দল।
সমতলের অবহেলিত আদিবাসী সাওতাল সম্প্রদায়ের মেয়েরা আদি থেকেই কৃষি কাজ করে আসছেন। হররোজ হাটুঅব্দি শাড়ি পড়ে দলবেঁধে খেতের আইল বেয়ে হেঁটে চলা, পুরুষ শ্রমিকদের সাথে ধান কাটা, আঁটি বাঁধা, মাথায় করে বোঝা বওয়া, মাড়াই করা সব কাজই করেন তারা। একজন পুরুষের সমান তো বটেই, অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে তাড়াতাড়ি বেশি কাজ করেন। কিন্তু আদি থেকেই মজুরি বঞ্চনার শিকার হয়েছেন কৃষিতে অবদান রাখা এই নারী শ্রমিকেরা।
চোখের সামনেই একই সমান কাজ করেও বেশি টাকা নিয়ে যাচ্ছেন পুরুষেরা। এটা দেখেও কোন প্রতিবাদ করতে পারেননা তারা।
ইদানিং অনেক এনজিও কাজ করছেন আদিবাসীদের উন্নয়নে। কিন্তু তাদের এ বৈষম্যের অবসানে এগিয়ে আসেনি কেউ।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মহাদেবপুর-সরাইগাছী পাকা সড়কের পাশেই খেতে ধান কাটায় ব্যস্ত একদল নারী-পুরুষ। কাছে যেতেই বেশভূষায় চেনা গেল আদিবাসী সাওতাল নারীদের।
জানতে চাইলে একে একে তারা তাদের নাম বললেন তিলতি কর্মকার, গিতা, মিনতি, রামন্তি ও লাকি। দেবীপুর গ্রামেই বাড়ি তাদের। সকাল থেকেই ধান কাটার কাজ করছেন তারা। সারাদিনের কাজের জন্য প্রত্যেকে মজুরি পান রোজ তিনশথ টাকা। তাদের সাথে কাজ করছিলেন কয়েকজন পুরুষ শ্রমিক। রেজাউল, শরিফুল, মোস্তফা, সাগর ও হাসান।
আদিবাসী নারীদের হাত তাদের চেয়ে জোরে চলে, জানালেন রেজাউল।
কিন্তু তারা একই সময় কাজ করে মজুরি পান রোজ চারশথ টাকা। কেন? মেয়ে মানুষ, তাই।
শ্রমিকদের সাথে নিজেও ধান কাটছিলেন জমির মালিক ওই গ্রামের আল মামুন। জানালেন, তিন বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ জাতের ধান লাগিয়েছেন। তেমন পোকা লাগেনি। ফলন হবে বিঘা প্রতি ১৯/২০ মণ। কিন্তু মেয়েদের মজুরি কম কেন, এপ্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি।