ঢাকা ১২:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজশাহীতে পরিত্যক্ত বাসায় কলেজ ছাত্রকে আটকে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা রাজশাহীতে চোর চক্রের নারীসহ চার সদস্য গ্রেপ্তার রাজশাহীর সাংবাদিক জামি রহমানের মৃত্যু শেরপুরে অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে ৭ জনের কারাদন্ড, সরঞ্জামাদি ধ্বংস রাজশাহী বিভাগে আমন সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্য মতবিনিময় সভা রাজশাহীতে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন বাগমারায় বাইগাঁছা উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবকদের মানববন্ধন বাগাতিপাড়ায় দীর্ঘ কর্মময় জীবন শেষে অবসরে গেলেন খোরশেদ পুলিশকে রাজনৈতিক দল নিরপেক্ষ সংস্থায় উন্নীত করতে কাজ করা হচ্ছে- আইজিপি নাটোরে ১৮ বাড়িতে অগ্নি সংযোগ মামলায় দুলুসহ ৯৪ আসামী খালাস

বিচারক সংকটে আদালতে বাড়ছে মামলার জট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২২ ২২৬ বার পড়া হয়েছে
চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আলমগীর হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের আদালতে বিচারক সংকটের কারণে বাড়ছে মামলার জট। প্রতিনিয়ত প্রচুর মামলা আসলেও বিচার কাজ চালানোর জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক বিচারক না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। মামলা এগোচ্ছে না স্বাভাবিক গতিতে। এতে বিচার প্রার্থীদের মামলার পেছনে ঘুরতে হয় বছরের পর বছর।
এসব মামলার পক্ষ-বিপক্ষের বিচারপ্রার্থীরা দূর-দূরান্ত থেকে এসে দিনের পর দিন আদালত চত্বরে ধরনা দিলেও সময় মতো রায় না পাওয়ার অভিযোগ তাদের।
ঠাকুরগাঁও জেলার ৫টি উপজেলার ৬টি থানার মামলা ছাড়াও আদালতে করা মামলার বিচারকার্য পরিচালিত হয়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজকোর্টের ১৮টি আদালতে। কিন্তু দুটি কোর্টে ১৮ জন বিচারক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ১২ জন। তাই বাধ্য হয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বিচারক নিয়েই চলছে কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ধরে বিচারক শূন্যতায় দেওয়ানি, ফৌজদারি, আমলি ও নারী, শিশু এবং মানবপাচার মামলার রায় অপেক্ষমান থাকায় জট বেধেছে। ফলে বাড়ছে মামলার জট।
বিচারের আশায় বছরের পর বছর আদালতে ঘুরছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার  আচকা  ইউনিয়নের আচকা গ্রামের নাছিমা খানম। কিন্তু বিচারক সংকটে তার দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলা নিষ্পত্তি হয়নি আজও। মামলা চালাতে গিয়ে এখন তিনি নিঃস্ব প্রায়।
শুধু নাছিমা নন, এভাবে বছরের পর বছর বিচারের আশায় আছেন ঠাকুরগাঁও জেলার কয়েক লাখ মানুষ। ফলে সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিচারক সংকটকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগী মানুষ ও আইনজীবীরা। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জজশিপ ও ম্যাজিস্ট্রেসিতে ১৭ হাজারের বেশি মামলার জট লেগে আছে। বিচারক সংকটে এসব মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে না। ফলে, একদিকে যেমন মামলা জট লেগে আছে, অপরদিকে বিচারক সংকটে বিচার না পেয়ে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আস্থার সংকট তৈরি হচ্ছে বিচার ব্যবস্থার ওপর। বাড়ছে অপরাধ।  ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মনসুর আলী বলেন, আমি ৮ বছর ধরে আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছি। এখনো কোনো দিক পাচ্ছি না। কবে নাগাদ মামলা নিষ্পত্তি হবে জানি না। মৃত্যুর আগে বিচার দেখে যেতে পারবো তো? ঠাকুরগাঁও আদালতের অ্যাডভোকেট আশিকুর রহমান  সাংবাদিকদেরকে বলেন, বিচারক সংকটের কারণে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। বিচারক নিয়োগ ছাড়া এর কোনো সমাধান আছে বলে মনে করি না।
ঠাকুরগাঁও আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান বলেন, মামলা নিষ্পত্তিতে বিচারক সংকট এখন বড় সমস্যা। আমরা বিচার কার্যক্রমের গতি বাড়াতে সাক্ষীদের দ্রুতই উপস্থাপন করছি। আশাকরি শিগগিরই বিচারকের শূন্য পদ পূরণ হলে মামলার জট কমবে। ঠাকুরগাঁও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম বলেন, ১২ জনকে দিয়ে ১৮ জনের কাজ করতে হয়। এতে দিনকে দিন সাধারন মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বিচারক সংকটে আদালতে বাড়ছে মামলার জট

আপডেট সময় : ০১:৩৭:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২২

আলমগীর হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের আদালতে বিচারক সংকটের কারণে বাড়ছে মামলার জট। প্রতিনিয়ত প্রচুর মামলা আসলেও বিচার কাজ চালানোর জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক বিচারক না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। মামলা এগোচ্ছে না স্বাভাবিক গতিতে। এতে বিচার প্রার্থীদের মামলার পেছনে ঘুরতে হয় বছরের পর বছর।
এসব মামলার পক্ষ-বিপক্ষের বিচারপ্রার্থীরা দূর-দূরান্ত থেকে এসে দিনের পর দিন আদালত চত্বরে ধরনা দিলেও সময় মতো রায় না পাওয়ার অভিযোগ তাদের।
ঠাকুরগাঁও জেলার ৫টি উপজেলার ৬টি থানার মামলা ছাড়াও আদালতে করা মামলার বিচারকার্য পরিচালিত হয়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজকোর্টের ১৮টি আদালতে। কিন্তু দুটি কোর্টে ১৮ জন বিচারক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ১২ জন। তাই বাধ্য হয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বিচারক নিয়েই চলছে কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ধরে বিচারক শূন্যতায় দেওয়ানি, ফৌজদারি, আমলি ও নারী, শিশু এবং মানবপাচার মামলার রায় অপেক্ষমান থাকায় জট বেধেছে। ফলে বাড়ছে মামলার জট।
বিচারের আশায় বছরের পর বছর আদালতে ঘুরছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার  আচকা  ইউনিয়নের আচকা গ্রামের নাছিমা খানম। কিন্তু বিচারক সংকটে তার দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলা নিষ্পত্তি হয়নি আজও। মামলা চালাতে গিয়ে এখন তিনি নিঃস্ব প্রায়।
শুধু নাছিমা নন, এভাবে বছরের পর বছর বিচারের আশায় আছেন ঠাকুরগাঁও জেলার কয়েক লাখ মানুষ। ফলে সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিচারক সংকটকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগী মানুষ ও আইনজীবীরা। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জজশিপ ও ম্যাজিস্ট্রেসিতে ১৭ হাজারের বেশি মামলার জট লেগে আছে। বিচারক সংকটে এসব মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে না। ফলে, একদিকে যেমন মামলা জট লেগে আছে, অপরদিকে বিচারক সংকটে বিচার না পেয়ে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আস্থার সংকট তৈরি হচ্ছে বিচার ব্যবস্থার ওপর। বাড়ছে অপরাধ।  ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মনসুর আলী বলেন, আমি ৮ বছর ধরে আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছি। এখনো কোনো দিক পাচ্ছি না। কবে নাগাদ মামলা নিষ্পত্তি হবে জানি না। মৃত্যুর আগে বিচার দেখে যেতে পারবো তো? ঠাকুরগাঁও আদালতের অ্যাডভোকেট আশিকুর রহমান  সাংবাদিকদেরকে বলেন, বিচারক সংকটের কারণে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। বিচারক নিয়োগ ছাড়া এর কোনো সমাধান আছে বলে মনে করি না।
ঠাকুরগাঁও আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান বলেন, মামলা নিষ্পত্তিতে বিচারক সংকট এখন বড় সমস্যা। আমরা বিচার কার্যক্রমের গতি বাড়াতে সাক্ষীদের দ্রুতই উপস্থাপন করছি। আশাকরি শিগগিরই বিচারকের শূন্য পদ পূরণ হলে মামলার জট কমবে। ঠাকুরগাঁও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম বলেন, ১২ জনকে দিয়ে ১৮ জনের কাজ করতে হয়। এতে দিনকে দিন সাধারন মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।