বাগাতিপাড়ায় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তা সংকটে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত
- আপডেট সময় : ০১:৪২:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২১ ৩১৭ বার পড়া হয়েছে
বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধিঃ
৫৬ টি বিদ্যালয়ের ১৮ টিতেই প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য। উপজেলা শিক্ষা দপ্তরে রয়েছে মাত্র একজন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা। এতে করে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ডঃ সাবরিনা আনাম ২০১৫ সাল থেকে ডেপুটেশনে রাজশাহী ডিডি অফিসে কর্মরত আছেন। গত মাসে সেই ডেপুটেশন বাতিল হলেও তিনি এখনও এই উপজেলায় যোগদান করেন নি। এদিকে সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মজনু মিয়া গতবছরের (২০২০) অক্টোবর মাসে বদলি হয়ে জেলার সিংড়া উপজেলায় যাওয়ায় সেই পদটিও শূন্য হয়ে যায়।
উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় মোট ৫৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে নব্য সরকারি হওয়া ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নে নামো হাটদৌল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পাঁকা ইউনিয়নে তকিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যানিকেতনে প্রধান শিক্ষক পদ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তাই উপজেলায় ৩ টি পদের বিপরীতে একজন শিক্ষা কর্মকর্তা ও এক তৃতীয়াংশ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলেও অফিস সূত্রে জানা গেছে।
পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রওশন কামাল বলেন, সহকারি শিক্ষকদের কাজ শিক্ষার্থীদের পাঠদান দেয়া। প্রধান শিক্ষক না থাকায় সেই পাঠদান ব্যহত হয়। আবার তাঁদের বিদ্যালয়ে দেড় বছরের অধিক সময় ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। আর বিদ্যালয়টি কেন্দ্রীয় হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষার উপজেলা পর্যায়ের সকল কার্যক্রম সেখানে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এছাড়া আদালতে বিদ্যালয়ের জমি সংক্রান্ত মামলা চলমান থাকায় প্রধান শিক্ষক না থাকায় অনেক সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন।
একজন প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিনজন শিক্ষা কর্মকার মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে দুই জনই বিশেষ করে প্রধান কর্মকর্তা না থাকায় পুরো উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থাটাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আবার কর্মকর্তা একজন হওয়ায় শিক্ষকরাও বিভিন্ন সময় নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। দেখা যাচ্ছে স্যার স্কুল পরিদর্শনে গেছেন অথবা মিটিংয়ে আছেন সেই সময় শিক্ষকরা অফিসে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুল ইসলাম মন্ডল বলেন, সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রধান কাজ বিদ্যালয় পরিদর্শন করা। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় সেই কাজে ঘাটতি পড়েছে। আবার বিভিন্ন মিটিংয়ে অংশ গ্রহণ এবং তিনজনের কাজ একা করতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন তিনি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ডঃ সাবরিনা আনাম বলেন, তাঁর ডেপুটেশন এখনও বাতিল হয়নি। তিনি রাজশাহী ডিডি অফিসেই কর্মরত আছেন।
নাটোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এরশাদ উদ্দিন আহমেদ জানান, বাগাতিপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ডেপুটেশন বাতিলের চিঠি পেয়েছিলেন। তিনি আবার সেটি স্থগিত করিয়াছেন কিনা এই বিষয়ে তিনি জানেন না। আর প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ২০১৩ সাল থেকে বন্ধ থাকায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সরকার উদ্যোগ নিয়েছেন, আশা করছেন অল্প দিনের মধ্যে সেটি পুরোন হয়ে যাবে।