ঢাকা ০৩:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শেরপুর সরকারী মহিলা কলেজ ছাত্রী-শিক্ষকের অ/নৈ/তি/ক প্রেম রাজশাহীতে ছাত্রকে শাসন করায় স্কুলে সিসি ক্যামেরাসহ জিনিসপত্র ভাংচুর, শিক্ষককে লাঞ্ছিত গোদাগাড়ীতে ব্র্যাকের অগ্নি প্রকল্পের সার্ভিস ম্যাপিং শেয়ারিং সভা বাগাতিপাড়ায় সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু নাটোরে নিজের শিশু সন্তানকে আছড়ে হ/ত্যা করেছে পা-ষ-ণ্ড বাবা রাজশাহী হাসপাতালে একসঙ্গে পাঁচ পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন এক মা রাজশাহীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ হত্যার ঘটনায় মামলা ধামইরহাটে ইসলামী যুব কল্যাণ পরিষদ দূর্গাপুর শাখা কার্যালয় এর শুভ উদ্বোধন ও সুধী সমাবেশ নাটোরে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের উপস্থিতিতেই শিক্ষার্থীদের দু’গ্রুপের হাতাহাতি, সমাবেশ মঞ্চ ভাংচুর রাজশাহী নগরীতে দৃষ্টিনন্দন ছয়টি ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধন

বাগাতিপাড়ায় নকল কীটনাশকে ১১ কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির ফসল নষ্ট; ডিলারের দোকানে তালা; ক্ষতিপূরণের দাবি কৃষকদের!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২৮:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ ২০২২ ৪২ বার পড়া হয়েছে
চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাগাতিপাড়ায় নকল কীটনাশকে ১১ কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির ফসল নষ্ট; ডিলারের দোকানে তালা; ক্ষতিপূরণের দাবি কৃষকদের!

বাগাতিপাড়া (নাটার) প্রতিনিধিঃ
বাগাতিপাড়ায় নকল কীটনাশকে ১১ কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির ফসল নষ্ট; ডিলারের দোকানে তালা; ক্ষতিপূরণের দাবি কৃষকদের! নাটারর বাগাতিপাড়ায় নকল কীটনাশক প্রয়াগ করে ১১ কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয় গছ। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ক্ষতিপূরণর দাবিতে বাজারের কীটনাশক ডিলারের দোকানে তালা ঝুলিয় দেয় এবং ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি কর্মকর্তা বরাবর লিখত অভিযোগ করেন।

কৃষকদের লিখিত অভিযাগ পেয়ে বুধবার (২ মার্চ) উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) (ভারপ্রাপ্ত ইউএনও) এবং কষি দপ্তরের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

কৃষকেরা জানান, চলতি মৌসুমে উপজলার খাটখইর মাঠে তারা পেঁয়াজ, রসুন, পেয়ারাসহ বিভিন ফসলের আবাদ করেছেন। এসব ফসলের রোগ বালাই দূর করতে কীটনাশক প্রয়োগ করেন। কিন্তু সম্প্রতি ওই এলাকার হাকিমপুর বাজারর শরিফুল ইসলামের ‘কাউছার ট্রডার্স’ এবং সোহরাব হোসেনের দোকান থেকে বিভিন্ন কোম্পানির নামের কীটনাশক ক্রয় করে তাদের ফসলে স্প্রে করেন। প্রায় ১০ থেকে ২৫ দিন পূর্বে এই বালাইনাশক স্প্রের পর ১১ জন কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির পেঁয়াজ, রসুন এবং পেয়ারা নষ্ট হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা হলেন, বিকাশ, রাজিব, কুরবান, আশরাফ, রতন, নজরুল, মতিউর, বিপ্লব, আসাদ, কামরুল, সালমান।

ফসল ক্ষতির বিষয়গুলা কৃষকরা দোকান মালিকদের জানালেও কোনো প্রকার ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা সংশ্লিষ্ট কীটনাশক কোম্পানীর লোকজনদের জানান। কোম্পানীর লোকজন মঙ্গলবার মাঠ পরিদর্শন করেন এবং স্প্রেকৃত কীটনাশকগুলো দেখে নকল বলে জানান। এ সময় কৃষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে হাকিমপুর বাজারের ওই দুই কীটনাশক ডিলারের দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেন এবং ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযাগ করেন।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রাজিব বলেন, তিনি চলতি মৌসুমে তিন মাসর জন্য বিঘা প্রতি ১০ মণ গমের বিনিময়ে জমি লিজ নিয়ে সাড়ে চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করছিলেন। নকল কীটনাশক প্রয়োগের পর তার সব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তার মাথায় হাত পড়েছে।

কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, ওই দুই দোকান থেকে কীটনাশক ক্রয় করে পেয়ারা বাগানে প্রয়োগ করায় তার বাগানের গাছ পুড়ে গেছে, পেয়ারায় লাল দাগ পড়ছে, নতুন নতুন ফুল মরে যাচ্ছে। তিনি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এসব বিষয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্মকর্তারা কীটনাশক বিক্রেতা মালিকদের সামান্য জরিমানা করেছেন। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

ওই মাঠের ক্ষতিগ্রস্ত পেঁয়াজ-রসুনের জমি ও পেয়ারা বাগানে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজের গাছগুলো মরে গেছে, কিছু কিছু গাছের পাতার মাথাগুলো মরে পুরো গাছ হলদেভাব হয়েছে। আর পেয়ারার নতুন ফুলগুলো মরে গেছে, পেয়ারার গায়ে কালো দাগ পড়েছে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তাছাড়া স্প্রে করা কীটনাশকের নমুনা কৃষকদের কাছে থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো টেস্টের জন্য ল্যাবে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও নিশাত আনজুম অনন্যা বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের ক্ষেত পরিদর্শন করা হয়েছে। তাছাড়া অভিযুক্ত দুই কীটনাশক ডিলারের দোকানে কৃষকদের লাগানো তালা খুলে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সেখানে মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক পাওয়া যায়। সঠিক পথে কীটনাশক না কিনে বাহিরে থেকে কিছু কীটনাশক কিনে বিক্রির কথা স্বীকার করেছে দোকান মালিকরা।

এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ওই সকল অপরাধের জন্য কাউছার ট্রেডার্স এর শরিফুল ইসলামকে ৭ হাজার এবং অপর দোকান মালিক সোহরাব হোসেনের ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বাগাতিপাড়ায় নকল কীটনাশকে ১১ কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির ফসল নষ্ট; ডিলারের দোকানে তালা; ক্ষতিপূরণের দাবি কৃষকদের!

আপডেট সময় : ১১:২৮:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ ২০২২

বাগাতিপাড়ায় নকল কীটনাশকে ১১ কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির ফসল নষ্ট; ডিলারের দোকানে তালা; ক্ষতিপূরণের দাবি কৃষকদের!

বাগাতিপাড়া (নাটার) প্রতিনিধিঃ
বাগাতিপাড়ায় নকল কীটনাশকে ১১ কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির ফসল নষ্ট; ডিলারের দোকানে তালা; ক্ষতিপূরণের দাবি কৃষকদের! নাটারর বাগাতিপাড়ায় নকল কীটনাশক প্রয়াগ করে ১১ কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয় গছ। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ক্ষতিপূরণর দাবিতে বাজারের কীটনাশক ডিলারের দোকানে তালা ঝুলিয় দেয় এবং ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি কর্মকর্তা বরাবর লিখত অভিযোগ করেন।

কৃষকদের লিখিত অভিযাগ পেয়ে বুধবার (২ মার্চ) উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) (ভারপ্রাপ্ত ইউএনও) এবং কষি দপ্তরের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

কৃষকেরা জানান, চলতি মৌসুমে উপজলার খাটখইর মাঠে তারা পেঁয়াজ, রসুন, পেয়ারাসহ বিভিন ফসলের আবাদ করেছেন। এসব ফসলের রোগ বালাই দূর করতে কীটনাশক প্রয়োগ করেন। কিন্তু সম্প্রতি ওই এলাকার হাকিমপুর বাজারর শরিফুল ইসলামের ‘কাউছার ট্রডার্স’ এবং সোহরাব হোসেনের দোকান থেকে বিভিন্ন কোম্পানির নামের কীটনাশক ক্রয় করে তাদের ফসলে স্প্রে করেন। প্রায় ১০ থেকে ২৫ দিন পূর্বে এই বালাইনাশক স্প্রের পর ১১ জন কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির পেঁয়াজ, রসুন এবং পেয়ারা নষ্ট হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা হলেন, বিকাশ, রাজিব, কুরবান, আশরাফ, রতন, নজরুল, মতিউর, বিপ্লব, আসাদ, কামরুল, সালমান।

ফসল ক্ষতির বিষয়গুলা কৃষকরা দোকান মালিকদের জানালেও কোনো প্রকার ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা সংশ্লিষ্ট কীটনাশক কোম্পানীর লোকজনদের জানান। কোম্পানীর লোকজন মঙ্গলবার মাঠ পরিদর্শন করেন এবং স্প্রেকৃত কীটনাশকগুলো দেখে নকল বলে জানান। এ সময় কৃষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে হাকিমপুর বাজারের ওই দুই কীটনাশক ডিলারের দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেন এবং ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযাগ করেন।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রাজিব বলেন, তিনি চলতি মৌসুমে তিন মাসর জন্য বিঘা প্রতি ১০ মণ গমের বিনিময়ে জমি লিজ নিয়ে সাড়ে চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করছিলেন। নকল কীটনাশক প্রয়োগের পর তার সব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তার মাথায় হাত পড়েছে।

কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, ওই দুই দোকান থেকে কীটনাশক ক্রয় করে পেয়ারা বাগানে প্রয়োগ করায় তার বাগানের গাছ পুড়ে গেছে, পেয়ারায় লাল দাগ পড়ছে, নতুন নতুন ফুল মরে যাচ্ছে। তিনি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এসব বিষয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্মকর্তারা কীটনাশক বিক্রেতা মালিকদের সামান্য জরিমানা করেছেন। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

ওই মাঠের ক্ষতিগ্রস্ত পেঁয়াজ-রসুনের জমি ও পেয়ারা বাগানে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজের গাছগুলো মরে গেছে, কিছু কিছু গাছের পাতার মাথাগুলো মরে পুরো গাছ হলদেভাব হয়েছে। আর পেয়ারার নতুন ফুলগুলো মরে গেছে, পেয়ারার গায়ে কালো দাগ পড়েছে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তাছাড়া স্প্রে করা কীটনাশকের নমুনা কৃষকদের কাছে থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো টেস্টের জন্য ল্যাবে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও নিশাত আনজুম অনন্যা বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের ক্ষেত পরিদর্শন করা হয়েছে। তাছাড়া অভিযুক্ত দুই কীটনাশক ডিলারের দোকানে কৃষকদের লাগানো তালা খুলে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সেখানে মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক পাওয়া যায়। সঠিক পথে কীটনাশক না কিনে বাহিরে থেকে কিছু কীটনাশক কিনে বিক্রির কথা স্বীকার করেছে দোকান মালিকরা।

এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ওই সকল অপরাধের জন্য কাউছার ট্রেডার্স এর শরিফুল ইসলামকে ৭ হাজার এবং অপর দোকান মালিক সোহরাব হোসেনের ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।