ঢাকা ০৬:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাগাতিপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয় একদল প্রতারক!

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : ০১:১৫:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫ ৩০৯ বার পড়া হয়েছে

collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাগাতিপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয় একদল প্রতারক!

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের থেকে একদল প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে চলতি মাসের ২৮ তারিখ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বাগাতিপাড়া মডেল থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধারা। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাকফো গ্রামের বেল্লাল শেখ (৭২) এবং দয়ারামপুর ইউনিয়নের নন্দীকুজা এলাকার রফিকুল ইসলাম (৭৫)।

অভিযোগ সূত্রে ও মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার বসুপাড়া এলাকার সিরাজ উদ্দিনের ছেলে হাসান আলী সোহেল, জিগরী এলাকার ছমির উদ্দিনের ছেলে খাইরুজ্জামান বাসার, ক্ষিদ্র মালঞ্চি এলাকার লিটন আলীর স্ত্রী তানিয়া খাতুন সহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজন গত বছরের ৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা বেল্লাল শেখের বাড়িতে যান। সেখানে তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দেন এবং তারা আরো বলেন আমরা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় হতে আপনার মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই বাছাই করে দেখতে এসেছি। পরে সনদ দেখালে তারা সনদ ভুয়া বলে দাবি করে এবং তাকে বলে আপনারা যদি ২০ হাজার টাকা দিতে পারেন তবে আমরা কাগজপত্র সংশোধন করে দিবো। তাদের কথায় ভীত হয়ে সেই ফাদে পা দিয়ে তাদের ২০ হাজার টাকা নগদ দেন বেল্লাল শেখ ও তার পরিবার। টাকা গ্রহণের পরে তারা জানান কাগজপত্র ঠিক করে আপনাদের জানানো হবে। পরে এই চক্রই আবার গত বছরের ১২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে একই প্রক্রিয়ায় তার থেকেও ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।তবে কিছুদিন পরে ওই চক্রটির একজন সদস্য একই ঘটনায় নাটোর সদর থানায় আটক হয়। যা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় এবং টাকা নেয়ার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে এই দুই মুক্তিযোদ্ধাও সেই খবর দেখে জানতে ও বুঝতে পারে তারাও ওই প্রতারক চক্রের ফাদে পড়েছেন। পরে তারা তাদের টাকা ফেরত এবং ওই চক্রের উপর্যুক্ত শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায় তারা কথিত সাংবাদিক পরিচয়ে এলাকায় বিভিন্ন সময় এরকম অপকর্ম করে বেড়ান। স্থানীদের দাবি যারা এরকম সাংবাদিক পরিচয়ে এমন অপকর্ম করে বেড়ায় তাদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। এ বিষয়ে তাদের মুঠোফোনে জানতে চাইলে, হাসান আলী সোহেল জানান, তিনি বিষয়টি অবগত নন। তানিয়া খাতুন বলেন কে বা কাহারা আমাদের মান ক্ষুন্ন করার জন্য এসকল অপপ্রচার করতেছে এরকম কোন ঘটনা নাই। তবে খাইরুজ্জামান বাসার বলেন অভিযোগের খবর শুনে বুধবার (২৯ জানুয়ারী) বিকালে আমি , হাসান আলী সোহেল ও তানিয়া খাতুন বাগাতিপাড়া থানায় গিয়েছিলাম। সেখানে এসআই দুলালের সাথে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন উভয়পক্ষকে বিষয়টির জন্য ডাকা হবে।

বাগাতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হা-মীম তাবাসসুম প্রভা ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই মুক্তিযোদ্ধারা যাদের টাকা দিয়েছিলেন তাদের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। তারা বলেছিলেন টাকা ফেরত দিবেন তবে ফেরত না দেয়ায় আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের থানায় অভিযোগ দিয়ে আইনের আশ্রয় নেবার পরামর্শ দিয়েছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বাগাতিপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয় একদল প্রতারক!

আপডেট সময় : ০১:১৫:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

বাগাতিপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয় একদল প্রতারক!

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের থেকে একদল প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে চলতি মাসের ২৮ তারিখ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বাগাতিপাড়া মডেল থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধারা। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাকফো গ্রামের বেল্লাল শেখ (৭২) এবং দয়ারামপুর ইউনিয়নের নন্দীকুজা এলাকার রফিকুল ইসলাম (৭৫)।

অভিযোগ সূত্রে ও মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার বসুপাড়া এলাকার সিরাজ উদ্দিনের ছেলে হাসান আলী সোহেল, জিগরী এলাকার ছমির উদ্দিনের ছেলে খাইরুজ্জামান বাসার, ক্ষিদ্র মালঞ্চি এলাকার লিটন আলীর স্ত্রী তানিয়া খাতুন সহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজন গত বছরের ৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা বেল্লাল শেখের বাড়িতে যান। সেখানে তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দেন এবং তারা আরো বলেন আমরা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় হতে আপনার মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই বাছাই করে দেখতে এসেছি। পরে সনদ দেখালে তারা সনদ ভুয়া বলে দাবি করে এবং তাকে বলে আপনারা যদি ২০ হাজার টাকা দিতে পারেন তবে আমরা কাগজপত্র সংশোধন করে দিবো। তাদের কথায় ভীত হয়ে সেই ফাদে পা দিয়ে তাদের ২০ হাজার টাকা নগদ দেন বেল্লাল শেখ ও তার পরিবার। টাকা গ্রহণের পরে তারা জানান কাগজপত্র ঠিক করে আপনাদের জানানো হবে। পরে এই চক্রই আবার গত বছরের ১২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে একই প্রক্রিয়ায় তার থেকেও ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।তবে কিছুদিন পরে ওই চক্রটির একজন সদস্য একই ঘটনায় নাটোর সদর থানায় আটক হয়। যা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় এবং টাকা নেয়ার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে এই দুই মুক্তিযোদ্ধাও সেই খবর দেখে জানতে ও বুঝতে পারে তারাও ওই প্রতারক চক্রের ফাদে পড়েছেন। পরে তারা তাদের টাকা ফেরত এবং ওই চক্রের উপর্যুক্ত শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায় তারা কথিত সাংবাদিক পরিচয়ে এলাকায় বিভিন্ন সময় এরকম অপকর্ম করে বেড়ান। স্থানীদের দাবি যারা এরকম সাংবাদিক পরিচয়ে এমন অপকর্ম করে বেড়ায় তাদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। এ বিষয়ে তাদের মুঠোফোনে জানতে চাইলে, হাসান আলী সোহেল জানান, তিনি বিষয়টি অবগত নন। তানিয়া খাতুন বলেন কে বা কাহারা আমাদের মান ক্ষুন্ন করার জন্য এসকল অপপ্রচার করতেছে এরকম কোন ঘটনা নাই। তবে খাইরুজ্জামান বাসার বলেন অভিযোগের খবর শুনে বুধবার (২৯ জানুয়ারী) বিকালে আমি , হাসান আলী সোহেল ও তানিয়া খাতুন বাগাতিপাড়া থানায় গিয়েছিলাম। সেখানে এসআই দুলালের সাথে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন উভয়পক্ষকে বিষয়টির জন্য ডাকা হবে।

বাগাতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হা-মীম তাবাসসুম প্রভা ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই মুক্তিযোদ্ধারা যাদের টাকা দিয়েছিলেন তাদের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। তারা বলেছিলেন টাকা ফেরত দিবেন তবে ফেরত না দেয়ায় আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের থানায় অভিযোগ দিয়ে আইনের আশ্রয় নেবার পরামর্শ দিয়েছি।