বাগাতিপাড়ায় চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া শিশু “আজমির” নানার সাথে বাড়ির পথে
- আপডেট সময় : ১০:০৮:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬৪ বার পড়া হয়েছে
বাগাতিপাড়ায় চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া শিশু “আজমির” নানার সাথে বাড়ির পথে
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় লোকমানপুর স্টেশনের অদূরে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া শিশু আজমির হোসেন (১১) তার নানা জানে আলমের সাথে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছে। সোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্স থেকে ছাড় পত্র নিয়ে তারা রওনা হয়। আজমির হোসেন নোয়াখালি জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাদিনগর গ্রামের জানে আলমের নাতী। সে স্থানীয় একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া তিনটার দিকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস আন্ত:নগর ট্রেন থেকে লোকমানপুর রেলস্টেশনের পশ্চিমদিকে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের কৃষ্ণা কৃষি খামার এলাকায় পড়ে যায় আজমির। রেল লাইনের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেসময় ঠিকানা জানতে চাইলে তার বাসা ঢাকার মৌচাক এলাকায় বুজগার্ডেনে এবং তার পিতার নাম রাজু, মায়ের নাম জান্নাত আক্তার আসমা বলে জানিয়েছিল শিশুটি। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধারকারীদের মধ্যে স্থানীয় যুবক স্বপন, মিলন ও রিপনসহ স্থানীয় সাংবাদিক সুইট শিশুটির পরিবারের সন্ধান শুরু করেন। এছাড়া ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্নভাবে তার স্বজনদের খোঁজ শুরু হয়। পরে ঢাকায় তাদের আত্মীয়দের খোঁজ পেলে তারা নোয়াখালির শিশুটির নানা জানে আলমকে খবর দেন। পরে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে জানে আলম তার প্রতিবেশী এক ভাতিজাকে সাথে করে বাগাতিপাড়ায় আসেন।
শিশুটির নানা জানে আলম জানান, আড়াই মাস বয়সে আজমিরের বাবা-মায়ের মধ্যে ডিভোর্স হয়। এরপর থেকে তিনিই তার নাতির দেখভাল করেন। সেখানে স্থানীয় একটি মাদরাসায় চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ে আজমির। তবে মাঝে মধ্যে সে বাড়ি থেকে হারিয়ে যায়। এবারো ১৮-২০ দিন পূর্বে সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। অবশেষে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরে বাগাতিপাড়া হাসপাতালে তার খোঁজ পান।
আহত শিশু আজমির জানায়, রাজশাহী থেকে খুলনা যাওয়ার জন্য সে ওই ট্রেনে উঠে। ট্রেনে যাওয়ার সময় হঠাতই সে ট্রেন থেকে পড়ে যায়। উদ্ধারকারী যুবক স্বপন ও মিলন জানান, শিশুটির পরিবারের সন্ধান পাওয়ায় তারা বেশ খুশি। তবে এরকম মানবিক কাজে সবাইকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান।
সাংবাদিক সুইট বলেন, শিশু আজমির হোসেন কে আহত অবস্থায় পাওয়ার পর থেকেই উপজেলার লোকমানপুর এলাকার কয়েকজন যুবকের সাথে তিনিও শিশুটির পরিবারের সন্ধান শুরু করেন। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আজমিরের নানার কাছে তাকে মোটামুটি সুস্থ্য অবস্থায় দিতে পেড়ে অনেক ভালো লাগছে। এমন মানবিক কাজে সবাইকে নিঃস্বার্থভাবে এগিয়ে আসতে হবে। মানবতার কাজে স্থানীয় প্রাসাশনের সহযোগিতা কামনা করেন সাংবাদিক সুইট।
বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রাজ্জাক জানান, গুরুত্বর আহতাবস্থায় ভর্তির পর থেকে আজমিরকে চিকিৎসাসহ পর্যবেক্ষন করা হয়। বর্তমানে সে আশঙ্খামুক্ত তাই পরবর্তী চিকিৎসা পত্র সহ শিশুটিকে ছাড় পত্র দেওয়া হয়েছে। শিশুটি তার নানার সাথে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।