পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ছাত্রলীগে
- আপডেট সময় : ১০:৪৪:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২১ ১৪২ বার পড়া হয়েছে
উমর ফরুক, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড়ে জেলা ছাত্রলীগের মোঃ সাগর (২০) এবং মোঃ লায়ন (২২) কে হাফিজাবাদ ইউনিয়নের তালমা-দলুয়াপাড়া এলাকায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীরা, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর এই দুই কর্মীকে পরিকল্পিতভাবে প্রকাশ্যে হত্যার চেষ্টা ও কুপিয়ে যখম করার অপরাধে বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে ছাত্রলীগ, উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো পঞ্চগড় শহর। গ্রেপ্তার করতে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে পঞ্চগড় জেলা ছাত্রলীগ। অন্যথায় পঞ্চগড় শহর অচল করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন ছাত্রলীগ নেতারা। এ ঘটনায় ৩০ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ বের করে জেলা ছাত্রলীগ। ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচিতে পালন করে পঞ্চগড় শেরে বাংলা পার্কে। এরপর জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। পঞ্চগড় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মোহাম্মদ নোমান হাসান বক্তব্যে বলেন, আমার ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে, প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে জখম করেছে। এখনো রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। মেহেদী হাসান রুবেলকে পুলিশ আটক করলেও আইনুল হক (৫৫), মোস্তাফিজুর রহমান (৩৭), মোঃ রাসেল (২৮), নাহিদ হোসেন (৪০), আজিজুল ইসলাম (৩২), আমিনুল ইসলাম (৫০), আছিরুল ইসলাম (৪২) সহ আরো ১৫/২০জন অজ্ঞাতনামা অপরাধীরা প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গতকাল বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশকে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি পুলিশ। তাই পুনরায় রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। এবিষয়ে তদন্ত করে দেখা যায়, তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের আগের রাতে শনিবার ২৭ নভেম্বর পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদে দুই তরুণকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাফিজাবাদ ইউপিতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ছুরিকাঘাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর দুই কর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মেহেদী হাসান রুবেল (২৬) নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। ভোটের আগের রাতে আটটার দিকে হাফিজাবাদ ইউনিয়নের তালমা-দলুয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত দুজনকে প্রথমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত দুই তরুণ হলেন হাফিজাবাদ ইউনিয়নের দলুয়াপাড়া এলাকার শাহজাহান আলীর ছেলে মোঃ সাগর (২০) এবং একই এলাকার মনতাজ আলীর ছেলে মোঃ লায়ন (২২)। তাঁরা দুজনই ছাত্রলীগ কর্মী এবং আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুসা কলিমুল্লাহ প্রধানের নৌকা প্রতীকের কর্মী। আর আটক মেহেদী হাসান রুবেল একই ইউনিয়নের ফকিরপাড়া এলাকার ফারাজুল ইসলামের ছেলে। তিনি ছাত্রলীগ কর্মী হলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইসমাইল হোসেনের লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন করছিলেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোটের আগের রাতে মেহেদীসহ লাঙ্গল প্রতীকের কয়েকজন কর্মী-সমর্থক দলুয়াপাড়া এলাকার আইনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে যান। এ সময় দলুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থক সাগর ও লায়নের সঙ্গে তাঁদের বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। লায়ন ও সাগর ছুরিকাহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। আর ঘটনাস্থল থেকে মেহেদীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয় লোকজন। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মোঃ কাওসার আহমেদ বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসা দুজন রোগীই গুরুতর আহত অবস্থায় ছিলেন। তাঁদের দুজনকেই ধারালো কোনো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আহত দুজনের মধ্যে সাগরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর বাঁ কানের নিচে চোয়ালসহ গলা পর্যন্ত কেটে গেছে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুজনকেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এবিষয়ে পঞ্চগড় সদর থানার ওসি, আব্দুল লতিফ মিয়ার সাথে কথা বল্লে তিনি জানান, জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে ।