ঢাকা ০২:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাগাতিপাড়ায় জুলাই শহীদ দিবসে আলোচনা সভা বাউয়েটে ছয় দিনব্যাপী শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত গোদাগাড়ীতে জেন্ডার ন্যায্যতা ও জলবায়ু ন্যায্যতার আন্তঃসম্পর্ক’ বিষয়ক দিনব্যাপী কমিউনিটি স্কুল কর্মশালা যারা জিয়াউর রহমানের ছবি অবমাননাকারী কুলাঙ্গারদের খুঁজে বের করা হবে- ফরহাদ হোসেন আজাদ নীলফামারীর ডোমারে গৃহবধূ হত্যার সাথে জড়িত শ্বাশুড়ি রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার নালিতাবাড়ীতে নন্নী-পোড়াগাঁও মৈত্রী কলেজে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সংঘর্ষ, আটক ১৮ সেনাপ্রধানের নির্দেশনায় গরম পানিতে ঝলসে যাওয়া নারীর বিনামূল্যে চিকিৎসা সিএমএইচে রাণীনগরে দল গতিশীল করতে যুবদলের সভা অনুষ্ঠিত শেরপুরে জুলাই বিপ্লব স্মরণে শিশুদের কবিতা আবৃত্তি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর এমপিওভুক্তির দাবিতে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন

পঞ্চগড়ে চা ফ্যাক্টরিতে চিরুনি অভিযান, জরিমানা সহ আটক দুই

উমর ফারুক, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৮:২৮:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫ ১১২ বার পড়া হয়েছে

Collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পঞ্চগড়ে চা ফ্যাক্টরিতে চিরুনি অভিযান, জরিমানা সহ আটক দুই

বাংলাদেশ চা বোর্ড কতৃক সাম্প্রতিক ‘চিরুনি অভিযানে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় বোডলীফ চা ফ্যাক্টরির মালিক ও ক্ষদ্র প্যাকেটজাত করন চা কারখানার ব্যাবসায়ীদের অনিয়মের অভিযোগে জরিমানা সহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু চা ফ্যাক্টরিতে চা উৎপাদনের অনিয়ম, নিলাম ছাড়াই অবৈধভাবে চা বিক্রি,অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং চা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে এই অভিযান চালানো হয় বলে জানায় বাংলাদেশ চা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড়ের অনেক চা প্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাক্টরি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়ম পরিলক্ষিত হচ্ছিল।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: অবৈধভাবে চা উৎপাদন ও বিপণন: অনেক কারখানা অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি চা উৎপাদন করে এবং নিলাম বাজারের বাইরে বিক্রি করে, যার ফলে সরকার রাজস্ব হারায়। কিছু কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চা প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছিল, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। চা আইন-২০১৬ এর বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করে কারখানা সম্প্রসারণ, উৎপাদিত চায়ের পরিমাণে গরমিল, এবং কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এছারাও কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর মাধ্যমে অবৈধভাবে চা পরিবহন করা হচ্ছিল, যা চোরাচালানের ইঙ্গিত দেখা দেয়। এই অনিয়ম গুলো বন্ধ করতে বাংলাদেশ চা বোর্ড কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

সম্প্রতি চালানো ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে: মৈত্রী টি কারখানাকে ২ লক্ষ টাকা নর্থ বেংগল ২০ হাজার টাকা, বিসমিল্লাহ- ৫০ হাজার টাকা, বাংলা টি- ২০ হাজার টাকা,ও সুরমা পূর্ণিমা- ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও মৌলিটি ফ্যাক্টরিকে সাময়ীক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পামাপাশব জেলা শহরের তিনটি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে প্রায় ৯০ বস্তা অবৈধ চা জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলায় অবৈধভাবে টি হাউস খুলে চা বর্জ্য বিভিন্ন কোম্পানির মোড়ক নকল করে প্যাকেট জাত করার অপরাধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দুই জনকে এক মাস করে জেল দেয়া হয়। অস্বাস্থ্যকর ডাস্ট চা গুলোকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

সাজেদা রফিক টি ফ্যাক্টরির স্বত্বাধিকারী আরিফুজ্জামান ডেইলি ট্রাইবুনালকে জানান, বাংলাদেশ চা বোর্ড কতৃক অভিযানের পর থেকে পঞ্চগড়ের চা কারখানার মালিকদের মধ্যে সচেতনতা বিরাজ করছে। যারা এতদিন ধরে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ব্যবসা করে আসছিলেন, তারা এখন আতঙ্কে রয়েছেন। আর যারা সৎ এবং নিয়ম মেনে কারখানা পরিচালনা করছেন তারা এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন, তবে এই অভিযান অব্যাহত থাকলে চা শিল্পের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন তিনি। পাশাপাশি এই অভিযান পঞ্চগড়ের চা শিল্পে দীর্ঘমেয়াদী ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং গুণগত মানের চা উৎপাদন নিশ্চিত হবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।

পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন জানান,পঞ্চগড় জেলায় বর্তমান ২৬ টি চা প্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাক্টরি চালু রয়েছে, এছাড়াও প্রায় ৩০ টি অনুমোদন বিহীন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্যাকেট জাতকরন চা কারখানা গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় চা শিল্পের মান উন্নয়নে সচেতনতার বৃদ্ধির লক্ষ্যে টানা তিন দিন আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হযেছে। যারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চা উৎপাদন করছে বা অনিয়মের মধ্যে ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ চা বোর্ডের উপসচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবিনা ইয়াছমিন বিশেষ অভিযান পরিচালনায় এসে জানান,চা বোর্ডের নির্দেশনায় পঞ্চগড় জেলার চা প্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাক্টরি ও ক্ষুদ্র প্যাকেটজাতকরণ চা-কারখানা গুলোর অস্বাস্থ্যকর চা তৈরি ও ফ্যাক্টরি কর্তৃক চা সরবরাহে রাজস্ব ফাকি সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। চা শিল্পর মান উন্নয়ন ও সরকারের রাজস্ব আয়ের বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামীতেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানায় বাংলাদেশ চা বোর্ডের এই কর্মকর্তা। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ চা বোর্ডের,পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আফ্রিদা ইয়াসমিন, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সেলিনা আক্তার লিপা, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা,আরিফ খান প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পঞ্চগড়ে চা ফ্যাক্টরিতে চিরুনি অভিযান, জরিমানা সহ আটক দুই

আপডেট সময় : ০৮:২৮:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

পঞ্চগড়ে চা ফ্যাক্টরিতে চিরুনি অভিযান, জরিমানা সহ আটক দুই

বাংলাদেশ চা বোর্ড কতৃক সাম্প্রতিক ‘চিরুনি অভিযানে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় বোডলীফ চা ফ্যাক্টরির মালিক ও ক্ষদ্র প্যাকেটজাত করন চা কারখানার ব্যাবসায়ীদের অনিয়মের অভিযোগে জরিমানা সহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু চা ফ্যাক্টরিতে চা উৎপাদনের অনিয়ম, নিলাম ছাড়াই অবৈধভাবে চা বিক্রি,অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং চা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে এই অভিযান চালানো হয় বলে জানায় বাংলাদেশ চা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড়ের অনেক চা প্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাক্টরি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়ম পরিলক্ষিত হচ্ছিল।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: অবৈধভাবে চা উৎপাদন ও বিপণন: অনেক কারখানা অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি চা উৎপাদন করে এবং নিলাম বাজারের বাইরে বিক্রি করে, যার ফলে সরকার রাজস্ব হারায়। কিছু কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চা প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছিল, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। চা আইন-২০১৬ এর বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করে কারখানা সম্প্রসারণ, উৎপাদিত চায়ের পরিমাণে গরমিল, এবং কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এছারাও কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর মাধ্যমে অবৈধভাবে চা পরিবহন করা হচ্ছিল, যা চোরাচালানের ইঙ্গিত দেখা দেয়। এই অনিয়ম গুলো বন্ধ করতে বাংলাদেশ চা বোর্ড কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

সম্প্রতি চালানো ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে: মৈত্রী টি কারখানাকে ২ লক্ষ টাকা নর্থ বেংগল ২০ হাজার টাকা, বিসমিল্লাহ- ৫০ হাজার টাকা, বাংলা টি- ২০ হাজার টাকা,ও সুরমা পূর্ণিমা- ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও মৌলিটি ফ্যাক্টরিকে সাময়ীক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পামাপাশব জেলা শহরের তিনটি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে প্রায় ৯০ বস্তা অবৈধ চা জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলায় অবৈধভাবে টি হাউস খুলে চা বর্জ্য বিভিন্ন কোম্পানির মোড়ক নকল করে প্যাকেট জাত করার অপরাধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দুই জনকে এক মাস করে জেল দেয়া হয়। অস্বাস্থ্যকর ডাস্ট চা গুলোকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

সাজেদা রফিক টি ফ্যাক্টরির স্বত্বাধিকারী আরিফুজ্জামান ডেইলি ট্রাইবুনালকে জানান, বাংলাদেশ চা বোর্ড কতৃক অভিযানের পর থেকে পঞ্চগড়ের চা কারখানার মালিকদের মধ্যে সচেতনতা বিরাজ করছে। যারা এতদিন ধরে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ব্যবসা করে আসছিলেন, তারা এখন আতঙ্কে রয়েছেন। আর যারা সৎ এবং নিয়ম মেনে কারখানা পরিচালনা করছেন তারা এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন, তবে এই অভিযান অব্যাহত থাকলে চা শিল্পের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন তিনি। পাশাপাশি এই অভিযান পঞ্চগড়ের চা শিল্পে দীর্ঘমেয়াদী ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং গুণগত মানের চা উৎপাদন নিশ্চিত হবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।

পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন জানান,পঞ্চগড় জেলায় বর্তমান ২৬ টি চা প্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাক্টরি চালু রয়েছে, এছাড়াও প্রায় ৩০ টি অনুমোদন বিহীন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্যাকেট জাতকরন চা কারখানা গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় চা শিল্পের মান উন্নয়নে সচেতনতার বৃদ্ধির লক্ষ্যে টানা তিন দিন আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হযেছে। যারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চা উৎপাদন করছে বা অনিয়মের মধ্যে ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ চা বোর্ডের উপসচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবিনা ইয়াছমিন বিশেষ অভিযান পরিচালনায় এসে জানান,চা বোর্ডের নির্দেশনায় পঞ্চগড় জেলার চা প্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাক্টরি ও ক্ষুদ্র প্যাকেটজাতকরণ চা-কারখানা গুলোর অস্বাস্থ্যকর চা তৈরি ও ফ্যাক্টরি কর্তৃক চা সরবরাহে রাজস্ব ফাকি সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। চা শিল্পর মান উন্নয়ন ও সরকারের রাজস্ব আয়ের বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামীতেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানায় বাংলাদেশ চা বোর্ডের এই কর্মকর্তা। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ চা বোর্ডের,পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আফ্রিদা ইয়াসমিন, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সেলিনা আক্তার লিপা, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা,আরিফ খান প্রমুখ।