ঢাকা ১০:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিয়োগ ও বেতন বাণিজ্যে করে অঢেল সম্পদের মালিক অধ্যক্ষ মালেক

এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০৩ বার পড়া হয়েছে

collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিয়োগ ও বেতন বাণিজ্যে করে অঢেল সম্পদের মালিক অধ্যক্ষ মালেক

নিয়োগ ও বেতন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি করে বিলাসবহুল দুটি বাড়িসহ অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন মোহনপুর গার্লস ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো.আব্দুল মালেক মন্ডল। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জন্য মোহনপুর গার্লস ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দ স্বাক্ষর করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের জন্য উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসারকে আহবায়ক করে সমবায় অফিসার ও যুব উন্নয়ন অফিসারকে নির্বাচিত করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ইতিপূর্বে প্রায় ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির কারণে কলেজের গভনিং বডির সাবেক সভাপতি দীলিপ কুমার সরকার তপন চলতি বছরের ১১ মার্চ অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করেন। এরপর ২১ মার্চ অধ্যক্ষ মো. আব্দুল মালেক মন্ডলকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ নির্বাচিত হওয়ার পর এমপির ভাই কামরুজ্জামানের প্রভাব খাটিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. একরামুল হককে সভাপতি করে অর্থের বিনিময়ে তিনি অধ্যক্ষ পদে ফিরে আসেন। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যক্ষ মো.আব্দুল মালেক মন্ডলের বিরুদ্ধে নিয়োগ ও বেতন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেন কলেজের শিক্ষক কর্মচারীরা।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মোহনপুর গার্লস ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ মো.আব্দুল মালেক মন্ডল ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাত করেন। এছাড়াও গত ২০১৯ সালের উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুল আলিম কাজী তার বন্ধুর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সরকারি করণের একটি ভূয়া চিঠি নিয়ে এসে সহকারী অধ্যাপক মো. শামসুদ্দিন মোল্লাকে আহবায়ক করে শিক্ষক কর্মচারীর কাছ থেকে ৫৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে অধ্যক্ষ নিজেই আত্মসাত করেন। সহকারী অধ্যাপক ১৬ জনের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা, সিনিয়র প্রভাষক ১২ জনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা, তৃতীয় শিক্ষক ৯ জনের কাছ থেকে ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ ১৫ বছরের টিউশন ফি ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথিদের উপহার ক্রয়ের বিপুল পরিমাণ টাকা উত্তোলন করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করে রাজশাহী শহরের কয়েরদাড়ায় ৮০ লাখ টাকা দিয়ে ৪ কাটা জমি ক্রয় করেন। মোহনপুর উপজেলা বিদ্যুৎ পাওয়ার অফিসের পাশে ৫০ লাখ টাকা খরচ করে একতলা ফ্লাট বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও তার নিজ গ্রাম মুল্লিকপুরে ৭০ লাখ টাকা খরচ করে ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ করেছেন।

মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়শা সিদ্দিকা বলেন, মোহনপুর গার্লস ডিগ্রি কলেজর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষক কর্মচারীরা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মোহনপুর গার্লস ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো.আব্দুল মালেক মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করে পরে কথা হবে বলে ফোন কেটে দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নিয়োগ ও বেতন বাণিজ্যে করে অঢেল সম্পদের মালিক অধ্যক্ষ মালেক

আপডেট সময় : ০৯:৪৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিয়োগ ও বেতন বাণিজ্যে করে অঢেল সম্পদের মালিক অধ্যক্ষ মালেক

নিয়োগ ও বেতন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি করে বিলাসবহুল দুটি বাড়িসহ অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন মোহনপুর গার্লস ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো.আব্দুল মালেক মন্ডল। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জন্য মোহনপুর গার্লস ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দ স্বাক্ষর করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের জন্য উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসারকে আহবায়ক করে সমবায় অফিসার ও যুব উন্নয়ন অফিসারকে নির্বাচিত করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ইতিপূর্বে প্রায় ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির কারণে কলেজের গভনিং বডির সাবেক সভাপতি দীলিপ কুমার সরকার তপন চলতি বছরের ১১ মার্চ অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করেন। এরপর ২১ মার্চ অধ্যক্ষ মো. আব্দুল মালেক মন্ডলকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ নির্বাচিত হওয়ার পর এমপির ভাই কামরুজ্জামানের প্রভাব খাটিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. একরামুল হককে সভাপতি করে অর্থের বিনিময়ে তিনি অধ্যক্ষ পদে ফিরে আসেন। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যক্ষ মো.আব্দুল মালেক মন্ডলের বিরুদ্ধে নিয়োগ ও বেতন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেন কলেজের শিক্ষক কর্মচারীরা।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মোহনপুর গার্লস ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ মো.আব্দুল মালেক মন্ডল ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাত করেন। এছাড়াও গত ২০১৯ সালের উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুল আলিম কাজী তার বন্ধুর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সরকারি করণের একটি ভূয়া চিঠি নিয়ে এসে সহকারী অধ্যাপক মো. শামসুদ্দিন মোল্লাকে আহবায়ক করে শিক্ষক কর্মচারীর কাছ থেকে ৫৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে অধ্যক্ষ নিজেই আত্মসাত করেন। সহকারী অধ্যাপক ১৬ জনের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা, সিনিয়র প্রভাষক ১২ জনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা, তৃতীয় শিক্ষক ৯ জনের কাছ থেকে ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ ১৫ বছরের টিউশন ফি ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথিদের উপহার ক্রয়ের বিপুল পরিমাণ টাকা উত্তোলন করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করে রাজশাহী শহরের কয়েরদাড়ায় ৮০ লাখ টাকা দিয়ে ৪ কাটা জমি ক্রয় করেন। মোহনপুর উপজেলা বিদ্যুৎ পাওয়ার অফিসের পাশে ৫০ লাখ টাকা খরচ করে একতলা ফ্লাট বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও তার নিজ গ্রাম মুল্লিকপুরে ৭০ লাখ টাকা খরচ করে ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ করেছেন।

মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়শা সিদ্দিকা বলেন, মোহনপুর গার্লস ডিগ্রি কলেজর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষক কর্মচারীরা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মোহনপুর গার্লস ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো.আব্দুল মালেক মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করে পরে কথা হবে বলে ফোন কেটে দেন।