নাটোরে মারধরের ৭দিন পর যুবলীগ কর্মীর মৃত্যু
- আপডেট সময় : ০৯:৫৬:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪ ৯৭ বার পড়া হয়েছে
নাটোরে মারধরের ৭দিন পর যুবলীগ কর্মীর মৃত্যু
নাটোরে বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলায় সাইদুর রহমান (৫৫) নামে আহত এক যুবলীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। তিনি সদর উপজেলার লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নে ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। পরিবারের অভিযোগ সাইদুর রহমানকে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে বেধড়ক মারপিট করা হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার (৬ নভেম্বর) দিবাগত রাতে তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে নিহত সাইদুর রহমানের ভাই শহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, নিহত সাইদুর রহমান বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এলাকায় একচেটিয়াভাবে বিভিন্ন পুকুর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করতেন। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে তার বিরোধ দেখা দেয়। এরই জেরে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাইদুর রহমানের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সে সময় থেকে তিনি সপরিবারে আত্মগোপনে চলে যান। গত অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে গোপনে নিজ এলাকায় এসে একটি জীর্ণ ও নির্জন বাড়িতে অবস্থান নেন তিনি। এলাকায় তার উপস্থিতি টের পেয়ে ক্ষুব্ধ লোকজন গত ২৯ অক্টোবর সকালে সাইদুরকে ধরতে ওই বাড়ি ঘেরাও করলেও কৌশলে পালিয়ে যান তিনি। পরদিন দুপুরে কয়েকজন যুবক সাইদুরকে নাটোর শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড় থেকে তুলে তার এলাকা দরাপপুর বাজারে নিয়ে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে প্রকাশ্যে বেধড়ক মারপিট করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে নাটোর আধুনিক সদর ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। রাজশাহীর হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার সন্ধ্যার দিকে তিনি মারা যান।
জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান কালু বলেন, নৃশংস ও নির্দয়ভাবে আমাদের কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার ও তদন্ত দাবী করছি।
আত্মগোপনে থাকা সাইদুরের ছোট ভাই শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে স্থানীয় বিএনপি কর্মী কাঙ্গালের নেতৃত্বে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে প্রকাশ্যে পেটানো হয়। বিএনপি কর্মীদের ভয়ে পরিবারের লোকজন আতœগোপনে থাকার পরও আতঙ্কে রয়েছে। তারা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করার মতো অবস্থাতেও নেই।
অভিযুক্ত সাবির হোসেন কাঙ্গালের সাথে এ ব্যাপারে তার মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন বলেন, ঘটনাটি কোন দলীয় ইস্যু নয়। এটি কাঙ্গালের ব্যক্তিগত বিষয়। এব্যাপরে দলের কোন দায় নেই। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিলে দলীয় কোন প্রভাব খাটানো হবেনা।
নাটোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।