ঢাকা ০৫:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজশাহীতে আ.লীগের নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার ১১ লালপুরে প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির শপথ গ্রহন বাগমারায় “উদীয়মান তরুণ সংঘের” উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ রাজশাহীর সাবেক এমপি আসাদের জামিন নামঞ্জুর ঝিনাইগাতীতে পৌণে ১ কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ীসহ গ্রেফতার এক! বাগাতিপাড়ায় নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের এমডিকে অভিনন্দন জানিয়ে শোভাযাত্রা ফের সাজেক পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করলো জেলা প্রশাসন পুঠিয়ায় বিআরটিসি বাসের ধাক্কায় নারী ভ্যান আরোহী নিহত রাজশাহীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ২০ রাজশাহীতে বিভাগীয় কমিশনারের সাথে জামায়াত নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ

ঠাকুরগাঁওয়ে আ’ লীগ নেতাকে তুলে নেওয়ার ৮ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

ঠাকুরগাঁও:
  • আপডেট সময় : ১২:৪৫:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ৪০ বার পড়া হয়েছে

collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঠাকুরগাঁওয়ে আ’ লীগ নেতাকে তুলে নেওয়ার ৮ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

ঠাকুরগাঁও পৌর আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহফুজার রহমান রিপনকে ফিল্মি স্টাইলে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। থানায় নিয়ে যাওয়ার প্রায় আট ঘণ্টা পর আবার এই নেতাকে ছেড়েও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। তবে এব্যাপারে কিছুই জানেন বলে সাংবাদিকদের জানান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুর রহমান। অথচ আওয়ামী লীগ নেতাকে তারই (ওসি) রুমের পাশের একটি রুমে ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে শহরের হাজীপাড়া পঞ্চগড়-দিনাজপুর সড়ক বাস টার্মিনালের পাশে আওয়ামী লীগ নেতার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠন থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়।

সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, গত বুধবার দুপুর ১২টা ৩ মিনিটে শহরের বাস টার্মিনাল সড়কের পাশে অবস্থিত নিশু টেড্রাসের স্বত্বাধিকারী ও পৌর আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহফুজার রহমান রিপনকে দুইজন ব্যক্তি একটি মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়। আওয়ামী লীগ নেতা রিপনকে মোটরসাইকেলে করে ‍তুলে নেন সদর থানার এএসআই খাদেমুল ইসলাম ও কনস্টেবল সরব।

জানা গেছে, মাহফুজার রহমান রিপনকে নিয়ে যাওয়ার পথে তার পকেটে থাকা ১৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন এএসআই খাদেমুল ইসলাম। সঙ্গে থাকা মুঠোফোনটি কেড়ে নেন তিনি। থানায় নেওয়ার পর প্রায় আট ঘণ্টা রিপনকে ওসির পাশের রুমে আটকে রাখা হয়। আটকের পর চলে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে দর কষাকষি। সন্ধ্যার পরে আবার তাকে থানা থেকে ছেড়েও দেয় পুলিশ।

এবিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মাহফুজার রহমান রিপন সাংবাদিকদের জানান, তাকে নিয়ে যাওয়ার পরে একটি ছোট রুমে রাখা হয়। তার মুঠোফোনটি নিয়ে নেয় পুলিশ এবং মুঠোফোন থেকে কিছু ছবি বের করে তাকে দেখান আর বলেন, আপনি আওয়ামী লীগের অর্থ জোগান দাতা ছিলেন। রিপনকে বিস্ফোরক আইনে মামলা দেওয়ার কথা কয়েক দফায় বলা হয়। পরে সন্ধ্যার আগে বিভিন্ন মাধ্যমে তদবীর করে থানা থেকে বের হয়ে আসেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।

তবে আওয়ামী লীগ নেতা রিপন আট ঘণ্টার অধিক সময় ধরে থানায় আটক করে রাখা হলেও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে সাংবাদিকদের জানায় পুলিশ। তাদের ভাষ্য, এই নামে কাউকে থানায় নিয়ে আসা হয়নি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এএসআই খাদেমুল ইসলাম জানান, তিনি কাউকে তুলে নিয়ে যাননি এবং রিপন নামে কাউকে চিনেন না।
তবে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি শহীদুর রহমান জানান ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, আমি সারাদিন থানায় ছিলাম না। কাউকে নিয়ে আসা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। কিন্তু কেউ যদি নিয়ে এসে ছেড়ে দেয়, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, সদর থানা পুলিশের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। লিখছেন, এমন পুলিশ সদর থানায় কখনো আসেনি। পুলিশের কথা ও আচরণে বুঝা যাচ্ছে তারা আওয়ামী লীগের এজেন্ট।

সংবাদকর্মী ফরিদুল ইসলাম রাঞ্জু লিখেন, ‘সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তার রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে রেখেও অবশেষে দেখা করেনি। সাংবাদিক পরিচয় পাবার পরও এই অবস্থা। তাহলে সাধারণ মানুষ কার কাছে যাবে? এদিকে পুলিশ ধরা ছাড়ায় ব্যস্ত।
অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক শাওন আমীন লিখেন, ঠাকুরগাঁও সালন্দর ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা বিশ্বনাথ (বিশ্ব মেম্বার)কে পুলিশ গভীর রাতে ধরে নিয়ে গেলে ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি গোলাম মাওলা চৌধুরী তাকে ছাড়ার জন্য পুলিশের সাথে দেন দরবার করে। শোনা যায় ৪ লক্ষাধিক টাকায় বিশ্বকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তিনি আরেক পোস্টে লিখেন, মফিজুল মেম্বারের সাথে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ থাকার কারণে ঠাকুরগাঁও সদর থানার এসআই শফিকুল বাদী হয়ে বিএনপি কর্মী মতিউরকে চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে হামলার ঘটনায় মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়। আরেক পোস্টে লিখেন, নিরাপদ আর্মী সোহেলের বাবাকে হত্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য ঠাকুরগাঁও থানার ওসি মেম্বার মফিজুলের সাথে আঁতাত করে গভীর রাতে বৃদ্ধ হানিফের বাড়িতে হানা।

আরেক সংবাদকর্মী কামরুল হাসান লিখেন, ঠাকুরগাঁও সদর থানার পুলিশকে নিয়ে এতো বিতর্ক কেন? Pratidiner Thakurgaon নামে একটি পেইজ থেকে পোস্ট দেওয়া হয়, ঠাকুরগাঁও পৌর আওয়ামী লীগ নেতা রিপনকে সকালে তুলে নিয়ে গিয়ে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয় সদর থানা পুলিশ। ওসি বলেন, আমি কিছু জানি না। জানেটা কে?

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ঠাকুরগাঁওয়ে আ’ লীগ নেতাকে তুলে নেওয়ার ৮ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

আপডেট সময় : ১২:৪৫:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

ঠাকুরগাঁওয়ে আ’ লীগ নেতাকে তুলে নেওয়ার ৮ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

ঠাকুরগাঁও পৌর আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহফুজার রহমান রিপনকে ফিল্মি স্টাইলে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। থানায় নিয়ে যাওয়ার প্রায় আট ঘণ্টা পর আবার এই নেতাকে ছেড়েও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। তবে এব্যাপারে কিছুই জানেন বলে সাংবাদিকদের জানান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুর রহমান। অথচ আওয়ামী লীগ নেতাকে তারই (ওসি) রুমের পাশের একটি রুমে ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে শহরের হাজীপাড়া পঞ্চগড়-দিনাজপুর সড়ক বাস টার্মিনালের পাশে আওয়ামী লীগ নেতার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠন থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়।

সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, গত বুধবার দুপুর ১২টা ৩ মিনিটে শহরের বাস টার্মিনাল সড়কের পাশে অবস্থিত নিশু টেড্রাসের স্বত্বাধিকারী ও পৌর আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহফুজার রহমান রিপনকে দুইজন ব্যক্তি একটি মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়। আওয়ামী লীগ নেতা রিপনকে মোটরসাইকেলে করে ‍তুলে নেন সদর থানার এএসআই খাদেমুল ইসলাম ও কনস্টেবল সরব।

জানা গেছে, মাহফুজার রহমান রিপনকে নিয়ে যাওয়ার পথে তার পকেটে থাকা ১৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন এএসআই খাদেমুল ইসলাম। সঙ্গে থাকা মুঠোফোনটি কেড়ে নেন তিনি। থানায় নেওয়ার পর প্রায় আট ঘণ্টা রিপনকে ওসির পাশের রুমে আটকে রাখা হয়। আটকের পর চলে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে দর কষাকষি। সন্ধ্যার পরে আবার তাকে থানা থেকে ছেড়েও দেয় পুলিশ।

এবিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মাহফুজার রহমান রিপন সাংবাদিকদের জানান, তাকে নিয়ে যাওয়ার পরে একটি ছোট রুমে রাখা হয়। তার মুঠোফোনটি নিয়ে নেয় পুলিশ এবং মুঠোফোন থেকে কিছু ছবি বের করে তাকে দেখান আর বলেন, আপনি আওয়ামী লীগের অর্থ জোগান দাতা ছিলেন। রিপনকে বিস্ফোরক আইনে মামলা দেওয়ার কথা কয়েক দফায় বলা হয়। পরে সন্ধ্যার আগে বিভিন্ন মাধ্যমে তদবীর করে থানা থেকে বের হয়ে আসেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।

তবে আওয়ামী লীগ নেতা রিপন আট ঘণ্টার অধিক সময় ধরে থানায় আটক করে রাখা হলেও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে সাংবাদিকদের জানায় পুলিশ। তাদের ভাষ্য, এই নামে কাউকে থানায় নিয়ে আসা হয়নি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এএসআই খাদেমুল ইসলাম জানান, তিনি কাউকে তুলে নিয়ে যাননি এবং রিপন নামে কাউকে চিনেন না।
তবে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি শহীদুর রহমান জানান ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, আমি সারাদিন থানায় ছিলাম না। কাউকে নিয়ে আসা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। কিন্তু কেউ যদি নিয়ে এসে ছেড়ে দেয়, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, সদর থানা পুলিশের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। লিখছেন, এমন পুলিশ সদর থানায় কখনো আসেনি। পুলিশের কথা ও আচরণে বুঝা যাচ্ছে তারা আওয়ামী লীগের এজেন্ট।

সংবাদকর্মী ফরিদুল ইসলাম রাঞ্জু লিখেন, ‘সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তার রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে রেখেও অবশেষে দেখা করেনি। সাংবাদিক পরিচয় পাবার পরও এই অবস্থা। তাহলে সাধারণ মানুষ কার কাছে যাবে? এদিকে পুলিশ ধরা ছাড়ায় ব্যস্ত।
অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক শাওন আমীন লিখেন, ঠাকুরগাঁও সালন্দর ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা বিশ্বনাথ (বিশ্ব মেম্বার)কে পুলিশ গভীর রাতে ধরে নিয়ে গেলে ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি গোলাম মাওলা চৌধুরী তাকে ছাড়ার জন্য পুলিশের সাথে দেন দরবার করে। শোনা যায় ৪ লক্ষাধিক টাকায় বিশ্বকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তিনি আরেক পোস্টে লিখেন, মফিজুল মেম্বারের সাথে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ থাকার কারণে ঠাকুরগাঁও সদর থানার এসআই শফিকুল বাদী হয়ে বিএনপি কর্মী মতিউরকে চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে হামলার ঘটনায় মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়। আরেক পোস্টে লিখেন, নিরাপদ আর্মী সোহেলের বাবাকে হত্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য ঠাকুরগাঁও থানার ওসি মেম্বার মফিজুলের সাথে আঁতাত করে গভীর রাতে বৃদ্ধ হানিফের বাড়িতে হানা।

আরেক সংবাদকর্মী কামরুল হাসান লিখেন, ঠাকুরগাঁও সদর থানার পুলিশকে নিয়ে এতো বিতর্ক কেন? Pratidiner Thakurgaon নামে একটি পেইজ থেকে পোস্ট দেওয়া হয়, ঠাকুরগাঁও পৌর আওয়ামী লীগ নেতা রিপনকে সকালে তুলে নিয়ে গিয়ে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয় সদর থানা পুলিশ। ওসি বলেন, আমি কিছু জানি না। জানেটা কে?