ঢাকা ০৫:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজশাহীতে আ.লীগের নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার ১১ লালপুরে প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির শপথ গ্রহন বাগমারায় “উদীয়মান তরুণ সংঘের” উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ রাজশাহীর সাবেক এমপি আসাদের জামিন নামঞ্জুর ঝিনাইগাতীতে পৌণে ১ কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ীসহ গ্রেফতার এক! বাগাতিপাড়ায় নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের এমডিকে অভিনন্দন জানিয়ে শোভাযাত্রা ফের সাজেক পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করলো জেলা প্রশাসন পুঠিয়ায় বিআরটিসি বাসের ধাক্কায় নারী ভ্যান আরোহী নিহত রাজশাহীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ২০ রাজশাহীতে বিভাগীয় কমিশনারের সাথে জামায়াত নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ

জামিনে বেরিয়ে অপহরণ মামলা আসামিরা ভিকটিমসহ পরিবারকে হুমকি

এম এম মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪ ৫২ বার পড়া হয়েছে

collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জামিনে বেরিয়ে অপহরণ মামলা আসামিরা ভিকটিমসহ পরিবারকে হুমকি

রাজশাহী মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানায় অপহরণ মামলার আসামিরা জামিনে বেরিয়ে ভিকটিমকে আবারও অপহরণের চেষ্টা ও তাঁর পরিবারকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেওয়া অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার ( ২ নভেম্বর) বেলা ১১ টার ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ করেছেন।অপহরণ মামলার বাদি মোছা: চাম্পা বেগম বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৪ টার এয়ারপোর্ট থানার ঝুজকাই গ্রামের ওবাইদুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, ছেলে তামিম হোসেনসহ ৪/৫ মিলে ইমন আলীকে অটোরিকশা যোগে অপহরণ করে। পরে অপহরণকারিরা আমার কাছে ২ লাখ ৩০ টাকা মুক্তিপন দাবি করেন। এ বিষয়ে ইমন আলীর মা চাম্পা এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করলে তিন দিন পর ভিকটিমকে উদ্ধার করে। অপহরণ মামলার আসামিররা আসামিরা জামিনে বেরিয়ে আবারও ইমন আলী অপহরণসহ পরিবারকে হুমকি প্রদান করছে এবং ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করছে।

থানায় মামলা ও ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য থেকে জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল’২০২৪ (ঈদের পরেরদিন) মামলার আসামী আনিসুর রহমান তার একটি অটোরিক্সা ড্রাইভার ইমন আলীকে ভাড়ামারার উদ্দেশ্যে দেয়। দু-একটি লোকাল ভাড়া মারার পর, রাজশাহী বিশ্নবিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে দুজন যাত্রী ইজিবাইকটি রিজার্ভ ভাড়া নেয়। যাত্রী নিয়ে ড্রাইভার ইমন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হবার প্রায় ত্রিশ মিনিট পর যাত্রীরা সড়কের পাশের একটি চায়ের দোকানে চা পান করে আবারো গাড়িতে উঠে। কিছুক্ষণ পরে অটোতে থাকা যাত্রীরা ড্রাইভার সুমনকে ছোট একটি জুসের (লাচ্চি) প্যাকেট দেয় খাবার জন্য। প্রথমে সে খেতে না চাইলেও যাত্রীদের জুস খেতে দেখে সেও জুসের প্যাকেটটা হাতে নিয়ে গাড়ি চালানোর পাশাপাশি সেটি খেয়ে নেয়। জুস খাবার মিনিট দশেক পরে ইমনের চোঁখে ভর করে প্রচন্ড ঘুম। প্রচন্ড ক্লান্তিবোধ আসে শরীরে। সে বাধ্য হয়ে অটোরিক্সাটি রাস্তার পাশে থামিয়ে দেয়। তারপরের কয়েকঘন্টায় কি হয়েছে সে সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেনা চালক ইমন। দুপুর আড়াই টার সময় অটোরিকশা চালক ইমন আলী চারঘাট উপজেলার বাদুরিয়া ঈদগাঁ’র পাশে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরবর্তীতে গ্রামের লোকজন ইমনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ইমনের চিকিৎসায় জ্ঞান ফেরার পর তার স্বজনদের কাছে ফোন দেয় ইমনকে উদ্ধারকারী ব্যক্তিরা।

ইমনকে অজ্ঞান করে অটোরিক্সা ছিনতাই (চুরি) হবার বিষয়টি আনিসুর রহমানকে বললে তিনি বিশ্বাস করেন না। ক্ষতি পূরণ বাবদ ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। বিষয়টি গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারা সালিশের মাধ্যমে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে ইমনের পরিবার দিতে রাজি হলেও আনিসুর রহমান সেই সালিশ মেনে নেয়নি। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, আমাকে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকাই দিতে হবে। তার কয়েকমাস পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঝুজকাই নামক এলাকা থেকে অভিযুক্তরা জোড়পূর্বক ইমনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বিষয়টি স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে শোনার পর অপহরণকারিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা পূর্বের ন্যায় দুই লাখ ত্রিশ হাজার টাকা দাবি করে। অপহরণের কয়েকদিন পর ইমনকে তারা ছেড়ে দেয়। অপহরণে থাকা ইমনের সাথে অপহরণকারিরা অমানুষিক অত্যাচার করে। শরীর থেকে সমস্ত পোশাক কেড়ে নিয়ে তাকে উলঙ্গবস্থায় রাখে বলে জানান ইমন ও তার পরিবার।

আসামীরা জামিনে বের হয়ে পূর্বের ন্যায় ভুক্তভোগী ইমনকে আবারও অপহরণের চেষ্টাসহ পরিবারের সদস্যদেরকে মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি প্রদর্শণ ও হুমকি থামকি দিচ্ছে বলে জানান বাদী চম্পা। বিষয়টি নিয়ে এয়ারপোর্ট থানায় গেলে পুলিশ তেমন আইনি সহযোগিতা করছেন না।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন আকতার বলেন, ইমন আলীকে অপহরণের বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিরা যদি ভিকটিমসহ পরিবারের লোকজনকে সাথে কোন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। তাহলে পুলিশ পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জামিনে বেরিয়ে অপহরণ মামলা আসামিরা ভিকটিমসহ পরিবারকে হুমকি

আপডেট সময় : ০৯:৫৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪

জামিনে বেরিয়ে অপহরণ মামলা আসামিরা ভিকটিমসহ পরিবারকে হুমকি

রাজশাহী মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানায় অপহরণ মামলার আসামিরা জামিনে বেরিয়ে ভিকটিমকে আবারও অপহরণের চেষ্টা ও তাঁর পরিবারকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেওয়া অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার ( ২ নভেম্বর) বেলা ১১ টার ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ করেছেন।অপহরণ মামলার বাদি মোছা: চাম্পা বেগম বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৪ টার এয়ারপোর্ট থানার ঝুজকাই গ্রামের ওবাইদুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, ছেলে তামিম হোসেনসহ ৪/৫ মিলে ইমন আলীকে অটোরিকশা যোগে অপহরণ করে। পরে অপহরণকারিরা আমার কাছে ২ লাখ ৩০ টাকা মুক্তিপন দাবি করেন। এ বিষয়ে ইমন আলীর মা চাম্পা এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করলে তিন দিন পর ভিকটিমকে উদ্ধার করে। অপহরণ মামলার আসামিররা আসামিরা জামিনে বেরিয়ে আবারও ইমন আলী অপহরণসহ পরিবারকে হুমকি প্রদান করছে এবং ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করছে।

থানায় মামলা ও ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য থেকে জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল’২০২৪ (ঈদের পরেরদিন) মামলার আসামী আনিসুর রহমান তার একটি অটোরিক্সা ড্রাইভার ইমন আলীকে ভাড়ামারার উদ্দেশ্যে দেয়। দু-একটি লোকাল ভাড়া মারার পর, রাজশাহী বিশ্নবিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে দুজন যাত্রী ইজিবাইকটি রিজার্ভ ভাড়া নেয়। যাত্রী নিয়ে ড্রাইভার ইমন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হবার প্রায় ত্রিশ মিনিট পর যাত্রীরা সড়কের পাশের একটি চায়ের দোকানে চা পান করে আবারো গাড়িতে উঠে। কিছুক্ষণ পরে অটোতে থাকা যাত্রীরা ড্রাইভার সুমনকে ছোট একটি জুসের (লাচ্চি) প্যাকেট দেয় খাবার জন্য। প্রথমে সে খেতে না চাইলেও যাত্রীদের জুস খেতে দেখে সেও জুসের প্যাকেটটা হাতে নিয়ে গাড়ি চালানোর পাশাপাশি সেটি খেয়ে নেয়। জুস খাবার মিনিট দশেক পরে ইমনের চোঁখে ভর করে প্রচন্ড ঘুম। প্রচন্ড ক্লান্তিবোধ আসে শরীরে। সে বাধ্য হয়ে অটোরিক্সাটি রাস্তার পাশে থামিয়ে দেয়। তারপরের কয়েকঘন্টায় কি হয়েছে সে সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেনা চালক ইমন। দুপুর আড়াই টার সময় অটোরিকশা চালক ইমন আলী চারঘাট উপজেলার বাদুরিয়া ঈদগাঁ’র পাশে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরবর্তীতে গ্রামের লোকজন ইমনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ইমনের চিকিৎসায় জ্ঞান ফেরার পর তার স্বজনদের কাছে ফোন দেয় ইমনকে উদ্ধারকারী ব্যক্তিরা।

ইমনকে অজ্ঞান করে অটোরিক্সা ছিনতাই (চুরি) হবার বিষয়টি আনিসুর রহমানকে বললে তিনি বিশ্বাস করেন না। ক্ষতি পূরণ বাবদ ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। বিষয়টি গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারা সালিশের মাধ্যমে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে ইমনের পরিবার দিতে রাজি হলেও আনিসুর রহমান সেই সালিশ মেনে নেয়নি। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, আমাকে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকাই দিতে হবে। তার কয়েকমাস পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঝুজকাই নামক এলাকা থেকে অভিযুক্তরা জোড়পূর্বক ইমনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বিষয়টি স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে শোনার পর অপহরণকারিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা পূর্বের ন্যায় দুই লাখ ত্রিশ হাজার টাকা দাবি করে। অপহরণের কয়েকদিন পর ইমনকে তারা ছেড়ে দেয়। অপহরণে থাকা ইমনের সাথে অপহরণকারিরা অমানুষিক অত্যাচার করে। শরীর থেকে সমস্ত পোশাক কেড়ে নিয়ে তাকে উলঙ্গবস্থায় রাখে বলে জানান ইমন ও তার পরিবার।

আসামীরা জামিনে বের হয়ে পূর্বের ন্যায় ভুক্তভোগী ইমনকে আবারও অপহরণের চেষ্টাসহ পরিবারের সদস্যদেরকে মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি প্রদর্শণ ও হুমকি থামকি দিচ্ছে বলে জানান বাদী চম্পা। বিষয়টি নিয়ে এয়ারপোর্ট থানায় গেলে পুলিশ তেমন আইনি সহযোগিতা করছেন না।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন আকতার বলেন, ইমন আলীকে অপহরণের বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিরা যদি ভিকটিমসহ পরিবারের লোকজনকে সাথে কোন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। তাহলে পুলিশ পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।