জরাজীর্ণ মাটির ঘরের এক কোণে টিনের বাক্স ও বস্তায় স্বপ্নার সাফল্য!
- আপডেট সময় : ০৭:২২:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪ ৬৯ বার পড়া হয়েছে
জরাজীর্ণ মাটির ঘরের এক কোণে টিনের বাক্স ও বস্তায় স্বপ্নার সাফল্য!
দেশ বিদেশের ফুটবল মাঠে জ্বলন্ত প্রদীপের মতো আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন স্বপ্না রানী। কিন্তু সেই প্রদীপের নিচে অন্ধকার। যে মেয়েটি লাল-সবুজের পতাকা তুলে ধরছেন বিশ্ব দরবারে, অর্জন করছেন দেশের এবং নিজের সাফল্য। কিন্তু এই বাঘিনী কন্যার নিজের সাফল্যের অর্ধশত পুরষ্কার রাখতে হয়েছে জরাজীর্ণ মাটির ঘরের এক কোণে টিনের বাক্স ও বস্তায় ভরে। ফুটবল ক্যারিয়ারে অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে স্বপ্নাকে। অতি দরিদ্র ঘরে বেড়ে ওঠা এই ফুটবলকন্যা সমাজের রক্তচক্ষুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আপন মহিমায় রাঙিয়ে চলেছেন নিজেকে। প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে ওঠে আসা এই বাঘিনীই এখন বাংলাদেশের নারী ফুটবলের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর নিরেন চন্দ্রের মেয়ে স্বপ্না রানী। প্রত্যন্ত গ্রামের জরাজীর্ণ টিনের ছাপড়া ঘর থেকেই জ্বলন্ত প্রদীপের মতো আলো ছড়িয়েছেন এই নারী ফুটবলার। সেই আলো দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আলোকিত করেছে সারাবিশ্ব। তবে বাতির নিচের অন্ধকারের গল্পের মতোই তাঁর জীবনের বাস্তবতা। ফুটবল খেলে দেশের নারী ফুটবলের ভাগ্য পরিবর্তন করলেও পরিবর্তন করতে পারেননি নিজ পরিবারের ভাগ্য। এখনো মাটির জীর্ণ ঝুপড়ি ঘরেই বসবাস করছে স্বপ্নার পরিবার।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে স্বপ্না সবার ছোট। বড় বোন কৃষ্ণা রানীর আয় করা টাকাতেই চলে ফুটবল রানীর সংসারের খরচ। স্বপ্নার শোবার ঘরে দুইটি চৌকি। একটি টিনের বাক্স ও ছোট একটি ভাঙ্গাচোরা কাঠের শোকেস রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ফুটবল খেলে পাওয়া পুরস্কার রাখার যায়গা নেই ঘরটিতে। তাই বাঘিনী কন্যা স্বপ্নার সব পুরস্কার বস্তায় ভরে টিনের বাক্সতে রাখা হয়। বিদেশের মাটিতে নতুন ইতিহাস গড়ায় স্বপ্নার গ্রাম জেগে উঠেছে আনন্দের উচ্ছ্বাসে। জরাজীর্ণ বাড়িটিতে অভিনন্দন জানাতে ছুটে আসছে গ্রামবাসীরা। আর স্বপ্নার মতো স্বপ্ন দেখছেন গ্রামের অন্যান্য কিশোরীরাও।
রাঙ্গাটুঙ্গী ইউনাইটেড প্রমিলা ফুটবল একাডেমির পরিচালকতাইজুল ইসলাম বলেন, দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠা স্বপ্না রাণীর ফুটবল যাত্রা রাঙ্গাটুঙ্গী ইউনাইটেড প্রমিলা ফুটবল একাডেমি থেকে। ২০১৯ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ বয়সভিত্তিক দলে প্রথম সুযোগ পান তিনি। এরপর দেশ ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের জামশেদপুরে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ টুর্নামেন্টে অসাধারণ পারফরম্যান্স করেন তিনি। দেশের জন্যে মুকুট জয়ে পালন করেছেন গুরু দায়িত্ব।