ঢাকা ০২:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শেরপুর সরকারী মহিলা কলেজ ছাত্রী-শিক্ষকের অ/নৈ/তি/ক প্রেম রাজশাহীতে ছাত্রকে শাসন করায় স্কুলে সিসি ক্যামেরাসহ জিনিসপত্র ভাংচুর, শিক্ষককে লাঞ্ছিত গোদাগাড়ীতে ব্র্যাকের অগ্নি প্রকল্পের সার্ভিস ম্যাপিং শেয়ারিং সভা বাগাতিপাড়ায় সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু নাটোরে নিজের শিশু সন্তানকে আছড়ে হ/ত্যা করেছে পা-ষ-ণ্ড বাবা রাজশাহী হাসপাতালে একসঙ্গে পাঁচ পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন এক মা রাজশাহীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ হত্যার ঘটনায় মামলা ধামইরহাটে ইসলামী যুব কল্যাণ পরিষদ দূর্গাপুর শাখা কার্যালয় এর শুভ উদ্বোধন ও সুধী সমাবেশ নাটোরে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের উপস্থিতিতেই শিক্ষার্থীদের দু’গ্রুপের হাতাহাতি, সমাবেশ মঞ্চ ভাংচুর রাজশাহী নগরীতে দৃষ্টিনন্দন ছয়টি ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধন

ছেলে থেকে মেয়ে হওয়ায় মেধা শর্মা কে দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫২:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ৪৩ বার পড়া হয়েছে
চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছেলে থেকে মেয়ে হওয়ায় মেধা শর্মা কে দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়

আলমগীর হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ছেলে থেকে মেয়ে হওয়ায় মেধা শর্মা কে দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে এক ছেলে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করে মেয়ে হয়েছেন। এ নিয়ে উপজেলার থুমনিয়া গ্রামে চলছে তোলপাড়। দলে দলে লোক আসছে ওই বাড়িতে।

২৭ জানুয়ারি ১৯৯৯ সালে ওই গ্রামে ছেলে হয়ে জন্ম নেন সুবল শীল। সেখানকার পরিবেশে বেড়ে ওঠেন। কিশোর বয়সে সুবলের আচরণ ছিল মেয়েদের মতো। আলতা, শাড়ি, চুড়ি পড়তে তার ভালো লাগতো। এজন্য পাড়ার বন্ধুরা তাকে ‘হিজড়া’ বলে হাসাহাসি করতো।

সুবলের মনেও প্রশ্ন জাগতো সে পুরুষ নাকি মেয়ে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ ছিলো না তার। এরপর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চিকিৎসার মাধ্যমে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করে সুবল শীল থেকে হয়েছেন মেধা শর্মা।

পুরুষ থেকে রূপান্তরিত নারী হওয়া মেধা শর্মার মা আলো রানী ও বাবা জগেশ শীল বলেন, সুবল যখন ছোট তখন থেকে তার আচরণ মেয়েদের মতো। মেয়েদের মতো সাজগোজ করতে তার ভালো লাগতো। আমরা অনেক চিন্তিত ছিলাম। অনেক চেষ্টা করেও তার আচরণ আমরা পাল্টাতে পারিনি। এমন স্বভাব পাল্টাতে অনেক গালমন্দও করতাম। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। অবশেষে আমার ছেলে এখন রূপান্তরিত মেয়ে।

রূপান্তরিত নারী হওয়ার সিদ্ধান্তে প্রথমে রাজি হননি বাবা মা। পরবর্তীতে সন্তানের সুখ মনে করে সন্তানের ইচ্ছাকেই মেনে নিয়েছেন তারা। এখন পরিবারের সবার সঙ্গেই মিলেমিশে রয়েছেন তিনি। মেধার পরিবারে বাবা-মা, দাদিসহ রয়েছে আরও এক ভাই ও এক বোন। তারাও তাকে সহযোগিতা করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

মেধা শর্মা জানান, লিঙ্গ পরিবর্তন চিকিৎসাকালীন পরিবার ব্যাতীত সবার কাছে বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন তিনি। হঠাৎ বাড়িতে এসে পাড়ায় জানাজানি হলে সবাই তাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় জমায়। অনেকেই খারাপ মন্তব্যও করে। আবার অনেকে সাপোর্ট করে অনুপ্রেরণাও জোগায়।

তিনি বলেন, সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমার ইচ্ছাশক্তি আর আমার স্বপ্ন। আমার পরিবার আমাকে মেনে নিয়েছে। আমি আমার পরিবার ও সমাজের জন্য কিছু করতে চাই। সমাজের অধিকাংশ মানুষ মনে করছে আমি এখন সমাজের বোঝা। কিন্তু আমি আমার কাজ দিয়ে এ ধারণা বদলাতে চাই।

নিজেকে একজন এয়ার হোস্টেজ হিসেবে দেখতে চান মেধা শর্মা। পাশাপাশি করতে চান মডেলিং। সেইসঙ্গে রূপান্তরিত নারীদের এগিয়ে নিয়ে যেতে চান নিজে নেতৃত্ব দিয়ে।

স্থানীয় তাপস রায় বলেন, ছোটবেলা থেকেই সুবলের কথা ও চলাফেরা মেয়েদের মতো ছিল। এমন স্বভাবের জন্য তাকে নিয়ে অনেকেই হাসাহাসি করতো। পরিবার অনেক চেষ্টা করেও তার এমন স্বভাব বদলাতে পারেনি।

জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক সংস্কৃতি কর্মী রেজওয়ানুল হক রিজু মনে করেন, মেধা শর্মার পরিচয় সে একজন মানুষ। তার ইচ্ছা, তার স্বপ্ন পূরণ করতে সমাজের সব মানুষের এগিয়ে আসা উচিৎ। তাকে কটাক্ষ না করে সহযেগিতা করা উচিৎ। তার সমঅধিকার নিশ্চিৎ হবে সমাজে এটাই প্রত্যাশা করি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ছেলে থেকে মেয়ে হওয়ায় মেধা শর্মা কে দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়

আপডেট সময় : ০৯:৫২:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২২

ছেলে থেকে মেয়ে হওয়ায় মেধা শর্মা কে দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়

আলমগীর হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ছেলে থেকে মেয়ে হওয়ায় মেধা শর্মা কে দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে এক ছেলে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করে মেয়ে হয়েছেন। এ নিয়ে উপজেলার থুমনিয়া গ্রামে চলছে তোলপাড়। দলে দলে লোক আসছে ওই বাড়িতে।

২৭ জানুয়ারি ১৯৯৯ সালে ওই গ্রামে ছেলে হয়ে জন্ম নেন সুবল শীল। সেখানকার পরিবেশে বেড়ে ওঠেন। কিশোর বয়সে সুবলের আচরণ ছিল মেয়েদের মতো। আলতা, শাড়ি, চুড়ি পড়তে তার ভালো লাগতো। এজন্য পাড়ার বন্ধুরা তাকে ‘হিজড়া’ বলে হাসাহাসি করতো।

সুবলের মনেও প্রশ্ন জাগতো সে পুরুষ নাকি মেয়ে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ ছিলো না তার। এরপর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চিকিৎসার মাধ্যমে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করে সুবল শীল থেকে হয়েছেন মেধা শর্মা।

পুরুষ থেকে রূপান্তরিত নারী হওয়া মেধা শর্মার মা আলো রানী ও বাবা জগেশ শীল বলেন, সুবল যখন ছোট তখন থেকে তার আচরণ মেয়েদের মতো। মেয়েদের মতো সাজগোজ করতে তার ভালো লাগতো। আমরা অনেক চিন্তিত ছিলাম। অনেক চেষ্টা করেও তার আচরণ আমরা পাল্টাতে পারিনি। এমন স্বভাব পাল্টাতে অনেক গালমন্দও করতাম। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। অবশেষে আমার ছেলে এখন রূপান্তরিত মেয়ে।

রূপান্তরিত নারী হওয়ার সিদ্ধান্তে প্রথমে রাজি হননি বাবা মা। পরবর্তীতে সন্তানের সুখ মনে করে সন্তানের ইচ্ছাকেই মেনে নিয়েছেন তারা। এখন পরিবারের সবার সঙ্গেই মিলেমিশে রয়েছেন তিনি। মেধার পরিবারে বাবা-মা, দাদিসহ রয়েছে আরও এক ভাই ও এক বোন। তারাও তাকে সহযোগিতা করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

মেধা শর্মা জানান, লিঙ্গ পরিবর্তন চিকিৎসাকালীন পরিবার ব্যাতীত সবার কাছে বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন তিনি। হঠাৎ বাড়িতে এসে পাড়ায় জানাজানি হলে সবাই তাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় জমায়। অনেকেই খারাপ মন্তব্যও করে। আবার অনেকে সাপোর্ট করে অনুপ্রেরণাও জোগায়।

তিনি বলেন, সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমার ইচ্ছাশক্তি আর আমার স্বপ্ন। আমার পরিবার আমাকে মেনে নিয়েছে। আমি আমার পরিবার ও সমাজের জন্য কিছু করতে চাই। সমাজের অধিকাংশ মানুষ মনে করছে আমি এখন সমাজের বোঝা। কিন্তু আমি আমার কাজ দিয়ে এ ধারণা বদলাতে চাই।

নিজেকে একজন এয়ার হোস্টেজ হিসেবে দেখতে চান মেধা শর্মা। পাশাপাশি করতে চান মডেলিং। সেইসঙ্গে রূপান্তরিত নারীদের এগিয়ে নিয়ে যেতে চান নিজে নেতৃত্ব দিয়ে।

স্থানীয় তাপস রায় বলেন, ছোটবেলা থেকেই সুবলের কথা ও চলাফেরা মেয়েদের মতো ছিল। এমন স্বভাবের জন্য তাকে নিয়ে অনেকেই হাসাহাসি করতো। পরিবার অনেক চেষ্টা করেও তার এমন স্বভাব বদলাতে পারেনি।

জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক সংস্কৃতি কর্মী রেজওয়ানুল হক রিজু মনে করেন, মেধা শর্মার পরিচয় সে একজন মানুষ। তার ইচ্ছা, তার স্বপ্ন পূরণ করতে সমাজের সব মানুষের এগিয়ে আসা উচিৎ। তাকে কটাক্ষ না করে সহযেগিতা করা উচিৎ। তার সমঅধিকার নিশ্চিৎ হবে সমাজে এটাই প্রত্যাশা করি।