ঢাকা ০২:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শেরপুর সরকারী মহিলা কলেজ ছাত্রী-শিক্ষকের অ/নৈ/তি/ক প্রেম রাজশাহীতে ছাত্রকে শাসন করায় স্কুলে সিসি ক্যামেরাসহ জিনিসপত্র ভাংচুর, শিক্ষককে লাঞ্ছিত গোদাগাড়ীতে ব্র্যাকের অগ্নি প্রকল্পের সার্ভিস ম্যাপিং শেয়ারিং সভা বাগাতিপাড়ায় সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু নাটোরে নিজের শিশু সন্তানকে আছড়ে হ/ত্যা করেছে পা-ষ-ণ্ড বাবা রাজশাহী হাসপাতালে একসঙ্গে পাঁচ পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন এক মা রাজশাহীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ হত্যার ঘটনায় মামলা ধামইরহাটে ইসলামী যুব কল্যাণ পরিষদ দূর্গাপুর শাখা কার্যালয় এর শুভ উদ্বোধন ও সুধী সমাবেশ নাটোরে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের উপস্থিতিতেই শিক্ষার্থীদের দু’গ্রুপের হাতাহাতি, সমাবেশ মঞ্চ ভাংচুর রাজশাহী নগরীতে দৃষ্টিনন্দন ছয়টি ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধন

গোদাগাড়ীর চরে মাদককারবারিদের ২ দফা হামলায় ৪ পুলিশ আহত!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:২৭:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১১৪ বার পড়া হয়েছে

Collected

চ্যানেল এ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গোদাগাড়ীর চরে মাদককারবারিদের ২ দফা হামলায় ৪ পুলিশ আহত!

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মাদক উদ্ধারের অভিযানে গিয়ে সংঘবদ্ধ মাদককারবারিদের দুই দফা হামলায় থানার চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কনস্টেবল মাহবুবকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কনস্টেবল মাহবুবের মাথা ফেটে গেলে হাসপাতালে ভর্তির পর ১২টি সেলাই দিতে হয়েছে বলে জানা গেছে। মাহবুবের একটি হাতও ভেঙে গেছে। আহত এসআই আতিকুর রহমানসহ অপর তিন পুলিশকে উপজেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দফায় দফায় এসব ঘটনা ঘটে উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বারীনগর ও ময়নারটেক এলাকাসহ চরাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামে।এদিকে পুলিশের দাবি, শুক্রবার বিকালে গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বারীনগর গ্রামে মাদক উদ্ধারে গেলে সংঘবদ্ধ মাদককারবারি দলের নেতা তোজাম্মেল মেম্বারের নেতৃত্বে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। গ্রামবাসী চার পুলিশকে চারদিক থেকে ঘেরাও দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে। রাতভর অভিযান চালিয়ে দুই নারীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।অন্যদিকে এলাকাবাসীর দাবি, মাদক উদ্ধারের নামে পুলিশের চার সদস্যের দলটি সাদা পোশাকে বারীনগর গ্রামের রফিকের বাড়িতে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রফিক পালিয়ে যায়। তবে মাদক না পেলেও পুলিশ রফিকের ভাইকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। তারা প্রতিবাদ করলে গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পদ্মার চরাঞ্চলের বারীনগরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশ দুই নারীসহ মোট ছয়জনকে আটক করেছে। উদ্ধার করেছে ১৯ বোতল ফেনসিডিল। পুলিশের ওপর হামলা ও মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছে। পুলিশ বলছে আটককৃতরা মাদককারবারি।

এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা গেছে, শুক্রবার বিকালে এসআই আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে গোদাগাড়ী থানাপুলিশের চার সদস্যের একটি দল সাদা পোশাকে পদ্মা নদীর পশ্চিমপাড়ের সীমান্তবর্তী গ্রাম বারীনগরে যায় মাদকবিরোধী অভিযানে। এ সময় একজন সোর্সের সহায়তায় বারীনগর গ্রামের রফিকের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এলাকাবাসীর দাবি রফিকও পুলিশের একজন সোর্স। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রফিক পালিয়ে গেলে পুলিশ তার ভাইকে আটক করেন। এ সময় রফিকের ভাইয়ের আট বছরের একটি শিশু তার বাবাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশের পা ধরে কান্নাকাটি শুরু করেন। এ সময় একজন পুলিশ ওই শিশুটিকে লাথি মারে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের দলটিকে ঘেরাও করেন। তারা পুলিশের কাছে জানতে চান কেন তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উদ্ধার করা মাদক কোথায় সেটিও গ্রামবাসী দেখাতে বলে পুলিশকে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গ্রামবাসী পুলিশ দলটিকে ঘেরাও করে তাদের কাছে জানতে চাইছিলেন মাদক না পাওয়া গেলে কেন তারা একজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তোজাম্মেল মেম্বারের নেতৃত্বে গ্রামবাসী পুলিশের দলটিকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। পুলিশের সঙ্গে কিছু সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে এসআই আতিকসহ তিন পুলিশ, কনস্টেবল মাহবুবকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী কনস্টেবল মাহবুবকে বেধড়ক পিটুনি দিলে তার মাথা ফেটে যায়। ভেঙে যায় একটি হাতও।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল আলম বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে গোদাগাড়ী থানায়। একটি মাদকের মামলা ও অপরটি পুলিশের ওপর হামলার মামলা। মাদকের মামলায় দুজন ও পুলিশের ওপর হামলার মামলায় চারজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে শনিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

গোদাগাড়ীর চরে মাদককারবারিদের ২ দফা হামলায় ৪ পুলিশ আহত!

আপডেট সময় : ০১:২৭:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

গোদাগাড়ীর চরে মাদককারবারিদের ২ দফা হামলায় ৪ পুলিশ আহত!

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মাদক উদ্ধারের অভিযানে গিয়ে সংঘবদ্ধ মাদককারবারিদের দুই দফা হামলায় থানার চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কনস্টেবল মাহবুবকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কনস্টেবল মাহবুবের মাথা ফেটে গেলে হাসপাতালে ভর্তির পর ১২টি সেলাই দিতে হয়েছে বলে জানা গেছে। মাহবুবের একটি হাতও ভেঙে গেছে। আহত এসআই আতিকুর রহমানসহ অপর তিন পুলিশকে উপজেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দফায় দফায় এসব ঘটনা ঘটে উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বারীনগর ও ময়নারটেক এলাকাসহ চরাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামে।এদিকে পুলিশের দাবি, শুক্রবার বিকালে গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বারীনগর গ্রামে মাদক উদ্ধারে গেলে সংঘবদ্ধ মাদককারবারি দলের নেতা তোজাম্মেল মেম্বারের নেতৃত্বে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। গ্রামবাসী চার পুলিশকে চারদিক থেকে ঘেরাও দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে। রাতভর অভিযান চালিয়ে দুই নারীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।অন্যদিকে এলাকাবাসীর দাবি, মাদক উদ্ধারের নামে পুলিশের চার সদস্যের দলটি সাদা পোশাকে বারীনগর গ্রামের রফিকের বাড়িতে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রফিক পালিয়ে যায়। তবে মাদক না পেলেও পুলিশ রফিকের ভাইকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। তারা প্রতিবাদ করলে গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পদ্মার চরাঞ্চলের বারীনগরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশ দুই নারীসহ মোট ছয়জনকে আটক করেছে। উদ্ধার করেছে ১৯ বোতল ফেনসিডিল। পুলিশের ওপর হামলা ও মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছে। পুলিশ বলছে আটককৃতরা মাদককারবারি।

এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা গেছে, শুক্রবার বিকালে এসআই আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে গোদাগাড়ী থানাপুলিশের চার সদস্যের একটি দল সাদা পোশাকে পদ্মা নদীর পশ্চিমপাড়ের সীমান্তবর্তী গ্রাম বারীনগরে যায় মাদকবিরোধী অভিযানে। এ সময় একজন সোর্সের সহায়তায় বারীনগর গ্রামের রফিকের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এলাকাবাসীর দাবি রফিকও পুলিশের একজন সোর্স। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রফিক পালিয়ে গেলে পুলিশ তার ভাইকে আটক করেন। এ সময় রফিকের ভাইয়ের আট বছরের একটি শিশু তার বাবাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশের পা ধরে কান্নাকাটি শুরু করেন। এ সময় একজন পুলিশ ওই শিশুটিকে লাথি মারে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের দলটিকে ঘেরাও করেন। তারা পুলিশের কাছে জানতে চান কেন তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উদ্ধার করা মাদক কোথায় সেটিও গ্রামবাসী দেখাতে বলে পুলিশকে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গ্রামবাসী পুলিশ দলটিকে ঘেরাও করে তাদের কাছে জানতে চাইছিলেন মাদক না পাওয়া গেলে কেন তারা একজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তোজাম্মেল মেম্বারের নেতৃত্বে গ্রামবাসী পুলিশের দলটিকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। পুলিশের সঙ্গে কিছু সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে এসআই আতিকসহ তিন পুলিশ, কনস্টেবল মাহবুবকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী কনস্টেবল মাহবুবকে বেধড়ক পিটুনি দিলে তার মাথা ফেটে যায়। ভেঙে যায় একটি হাতও।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল আলম বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে গোদাগাড়ী থানায়। একটি মাদকের মামলা ও অপরটি পুলিশের ওপর হামলার মামলা। মাদকের মামলায় দুজন ও পুলিশের ওপর হামলার মামলায় চারজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে শনিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।