উত্তরায় আ’লীগ নেতার স্ত্রীর করা মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে দুই সাংবাদিক
- আপডেট সময় : ০৫:২৬:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪ ৫৪ বার পড়া হয়েছে
উত্তরায় আ’লীগ নেতার স্ত্রীর করা মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে দুই সাংবাদিক
ঢাকার উত্তরায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীর দেয়া মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে দুই সাংবাদিক। মিথ্যা মামলায় আসামি হওয়া দুই সাংবাদিক হলেন দৈনিক লাখো কন্ঠ পত্রিকার উত্তরা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান ও দৈনিক তৃতীয় মাত্রা পত্রিকার সিটি রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম একা। জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ ছাড়ার পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারা ঘর বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। আত্মগোপনে যাওয়া এসব নেতাদের মধ্যে কয়েকজন সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও দলীয় শীর্ষ পদধারী নেতারাও রয়েছে।
দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে গত ৫ ই আগষ্ট দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর প্রকাশ হওয়ার পর পরেই আনন্দ মিছিল বের করে হাজারো ছাত্র জনতা। এর মধ্যেই দেশ ছেড়েছেন এমপি মন্ত্রী সহ আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। হামলা হয়েছে বাস ভবনে হামলা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করেন দুর্বৃত্তরা। ফলে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি সঞ্চার হওয়ায় তারা আত্মগোপনে চলে যান।
বুধবার রাতে উত্তরার একটি বাড়িতে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শ্রীপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জামিল হাসান দুর্জয় অস্ত্রসহ রাজধানীর উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টর ৩/ডি নম্বর রোডের ৪৭ নম্বর বাড়িতে আত্মগোপন করে আছেন এবং সেই বাড়িটি ছাত্র-জনতা ঘেরাও করে রেখেছেন। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে জামিল হাসান দুর্জয়কে বাড়ির ভিতরেই পান ছাত্রজনতা এবং সাংবাদকর্মীরা। আটক হওয়ার বিষয়টি দূর্জয়ের স্ত্রী ফোন করে শ্রীপুর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী এবং ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ডাকেন। পরে তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে ছাত্রজনতাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বেড় করে দেন এবং দূর্জয়ের এবং তার স্ত্রীর ভিডিও ধারন করায় সাংবাদিক সহ মোট চারজনকে আটক করে মারধর করেন দূর্জয়ের লোকজন। পরে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে বিষয়টি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও রাতেই চারজনকে থানার হেফাজতে নিয়ে যান পশ্চিম থানা পুলিশ ।
বুধবার দিবাগত রাতের এই ঘটনায় বৃহাসপতিবার বিকেলে দুই সাংবাদিক সহ মোট চারজনকে আসামি করে ভাংচুর এবং চুরির অভিযোগ দিয়ে মামলা করেন দূর্জয়ের স্ত্রী সিনথিয়া সালমা হাবিব।
মামলা রুজু হওয়ার পর বিকেলেই তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করেন উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
জানা যায়, ছাত্র জনতা এবং সাংবাদিক যখন এখানে আসেন তখন আওয়ামীলীগ নেতা এই বাড়িতে ছিলেন এবং সাংবাদিকরা সংবাদসংগ্রহ করতে এসে সম্পূর্ণ বিষয়টি ফেসবুক পেইজে লাইভ করেন, এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা দুর্জয়ের লাইভে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। মুলত ভিডিও ধারন করার কারনে দুই সাংবাদিককে আটক করে মারধর করা হয়। এসময় আটক হওয়া সাংবাদিদের উদ্ধার করতে আসেন দৈনিক মানবকন্ঠের তুরাগ(ঢাকা)প্রতিনিধি রাসেল খান, তিনি পৌছানো মাত্র তাকেও আটক করে মারধোর করে পিটিয়ে আহত করে এবং তার মানিব্যাগে থাকা নগদ ৪১ হাজার টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেন।
মামলার বিষয়ে উত্তরা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার রওনক জাহান বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা নেয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তদন্তে যদি সাংবাদিকরা নির্দোষ হয়। অবশ্যই মামলার চার্জশিট থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হবে।